ফরিদপুরের ভাঙ্গায় প্রচেস্টা পরিবহনের স্টাফ কর্তৃক মাদ্রাসার ছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় ৩ আসামীকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। সোমবার সকালে তাদের গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত আসামীদের ফরিদপুর আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো প্রচেষ্টা পরিবহনের হেলপার ধর্ষক রাকিব মাতুব্বর ইমন (২৪) ধর্ষনে সহযোগিতাকারী বাসের সুপারভাইজার আসিফ সরদার(২১) ও আরেক সহযোগী ইমনের মা লিলি বেগম (৫০)।
জানাগেছে গত রোববার বিকালে ঐ মাদ্রাসা ছাত্রী ঢাকা থেকে প্রচেষ্টা পরিবহন নামে একটি বাসে করে নিজ বাড়ী ফরিদপুরের নগরকান্দার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। সন্ধ্যায় ভাঙ্গা গোল চত্তর এসে নামলে ঐ বাসের হেলপার ও সুপারভাইজার ছাত্রীকে কৌশলে হেলপার রাকিবের বাড়ীতে নিয়ে আটকিয়ে রাখে। গভীর রাত হলেও ছাত্রী বাড়ীতে না আসায় বাবা ভাঙ্গা থানায় মৌখিক অভিযোগ করেন। ভাঙ্গা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে সোমবার সকালে প্রচেষ্টা পরিবহনের হেলপারের ভাড়াবাসা পৌরসদরের কাপুড়িয়া সদরদী গ্ৰাম থেকে ঐ ছাত্রীকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা কালাম শেখ বাদি হয়ে সোমবার সন্ধ্যায় ভাঙ্গা থানায় একটি অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে তাদেরকে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় ঐ ছাত্রীকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারী পরিক্ষা ও চিকিৎসার জন্য প্রেরন করা হয়েছে।
ঐ ছাত্রীর দুলাভাই সুমন আহমেদ জানান, আমার শালিকা সহ আমার পরিবার ঢাকা হাজারীবাগে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করি। আমার শালিকা ঢাকা হাজারীবাগ একটি মহিলা মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে । রোববার বিকেলে আমার শ্বশুরবাড়ি নগরকান্দা যাওয়ার জন্য আমি শালিকাকে ঢাকার বাবু বাজার থেকে প্রচেষ্টা পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব-১১ ৬৪৮৩) একটি বাসে তুলে দেই । তখন বাসের হেলপার ও সুপারভাইজার এর মোবাইল নাম্বারটা নিয়ে রাখি এবং তাকে ভাঙ্গা বাসষ্টান্ডে নামিয়ে দিতে বলি। ২ ঘন্টা পর বাসের সুপারভাইজার ও হেলপার এবং আমার শালিকার মোবাইল নম্বর গুলো বন্ধ পাই। এরপর শালিকার অপেক্ষায় ভাঙ্গায় দাঁড়িয়ে থাকা আমার শ্বশুর সহ বাড়ির লোকজন ও আমি ঢাকা থেকে ভাঙ্গায় ছুটে এসে ঐ প্রচেষ্টা পরিবহনকে খুঁজতে থাকি। আমার শালিকার কোন খোঁজ না পেয়ে রাত অনুমান তিনটার সময় ভাঙ্গা থানায় একটি মৌখিক অভিযোগ দেই। এরপর সোমবার সকালে ওই পরিবহনকে সনাক্ত করি এবং সুপারভাইজারকে ধরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করি।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার ডিউটি অফিসার এসআই জুয়েল জানান, রাত আনুমানিক তিনটার সময় তারা একটা মৌখিক অভিযোগ দেয়। এরপর সকালে নিখোঁজ ছাত্রীর পরিবারের লোকজনকে সাথে নিয়ে পুলিশ অভিযানে নামে। সোমবার সকালে ঐ বাসের সুপারভাইজার আসিফ সরদার কে আটক করি। পুলিশ সুপারভাইজারের তথ্য মতে হেলপার রাকিবের বাসায় অভিযান চালিয়ে ঐ ছাত্রীকে উদ্ধার করি। সে সময় মেয়েটির তথ্যমতে ও ঘটনায় জড়িত তিনজনকে আটক করি । এঘটনায় প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় ভাঙ্গা থানায় একটি অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা হয়েছে।
- আরও পড়ুনঃ নাম পরিবর্তন হলো ইসলামী ব্যাংকের
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক মনির জানান, অপহরণ ও ধর্ষনের অভিযোগে ভাঙ্গা থানায় একটা মামলা দায়ের হয়েছে। ঐ ছাত্রীকে মেডিকেল পরীক্ষা ও উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
থানা অফিসার ইনচার্জ জিয়ারুল ইসলাম জানান, রাতে মাদ্রাসা ছাত্রী নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ পেয়ে পুলিশ মাঠে নামে এবং সকালে ছাত্রীটিকে উদ্ধার সহ তিনজনকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ। এ ঘটনায় সোমবার ভাঙ্গা থানায় একটি মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে আসামীদের আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।
প্রিন্ট