১১ বছরের শিশু মহিনউদ্দিন নিশ্চুপ ও স্থবির। তার বাবা খোকন মোল্যা ও মা মমতাজ বেগম দুর থেকে দেখছেন তার ছেলে এখন নিশ্বাস নিচ্ছে কি না। যখন বুঝতে পারলেন কাচের ঘরে লাইফ সাপোর্টে থাকা ছেলে আর নাড়া চাড়া করছে না। তখন দুজনেই কাঁদতে শুরু করলেন। একটু পরে খবর এলো মহিনউদ্দিন আর বেঁচে নেই।
সোমবার রাত সাড়ে নয় টা ঢাকা পিজি হাসপাতালে তিন দিন লাইফ সাপোর্টে থাকা মহিনউদ্দিন মারা গেছেন। ইন্নাল্লিলাহি…..রাজিউন।
মহিনউদ্দিন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা পৌরসভার কুসুমদি গ্রামের অটো চালক খোকন মোল্যা ও গৃহিণী মমতাজ বেগমের ছোট ছেলে। সে স্থানীয় সেকেন্দার আলী মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
গত সপ্তাহ জুড়ে মহিনউদ্দিনের শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাকে আলফাডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অর্থাভাবে ছেলেটির ভালো চিকিৎসা দিতে পারেনি পরিবারটি। শনিবার সমকাল এ অর্থাভাবে চিকিৎসা বন্ধ মাদ্রাসা ছাত্রের ‘মা,আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে’। সংবাদ প্রকাশ হলে সমাজের কিছু দয়াবান ব্যক্তির উদ্যোগে ওইদিনই তাকে ঢাকা পিজি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা খারাপ হয়ে বিকেলেই (আইসিইউ) তে রাখা হয়। অবস্থার আরো অবনতি হলে রাতেই লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সে অবস্থায় থাকার পর সোমবার রাত সাড়ে ৯ টায় তার মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় জানাজা শেষে তার লাশ মিঠাপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ছয় বছর আগে মহিনউদ্দিনের শ্বাসকষ্ট হলে নিজ এলাকা ও ঢাকার একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়।
চিকিৎসকরা বলেছিল মহিনউদ্দিনের ফুসফুসে অসংখ্য ফুটো হয়ে গেছে। ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে ৪৫ শতাংশ জমি বিক্রি করে দিয়েছেন মহিনউদ্দিনের বাবা খোকন। এখন ভিটাটুকু ছাড়া অবশিষ্ট কিছু নেই।
প্রিন্ট