মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলাধীন পলাশবাড়ীয়া ইউনিয়নের কালিশংকরপুর গ্রামে স্থানীয় আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের জেরে আরিফুল মোল্যা (৩৫) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সকাল নয়টার দিকে নৃশংস এ ঘটনা ঘটে। নিহত আরিফুল ওই গ্রামের হাসান মোল্যার ছেলে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য দুপুরে মাগুরার মর্গে প্রেরণ করেছেন। হত্যাকান্ডের পর ওই এলকার বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা এবং ভাংচুর লুট-পাটের ঘটনা ঘটে। এ সময় কমপক্ষে ১০ ব্যক্তি আহত হন। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে ৪ জন কে আটক করেছে থানা পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার পলাশবাড়ীয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এমডি গোলজার রহমান এবং এ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল ইসলামের সমর্থকদরে মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের জেরধরে বৃহস্পতিবার সকাল নয়টার দিকে এমডি গোলজার রহমানের সমর্থক আরিফুল মোল্যা পার্শ্ববর্তী পুকুর থেকে মাছ ধরে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল ইসলামের সমর্থক আকির ও মিলনের নেতৃত্বে ৫/৭ জন ব্যক্তি আরিফুল ইসলামকে ধারালো সড়কি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর থেকে ঘাতকপক্ষের পুরুষ লোকজন এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।
হত্যাকান্ডের খবর এলাকায় ছড়ালে প্রতিপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রসাজে সজ্জিত হয়ে খন্ড খন্ড সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাংচুর এবং লুট-পাট শুরু করেন। এসময় কমপক্ষে ১০ ব্যক্তি আহত হন। গুরুতর আহত নাসির উদ্দীন (৩৫), নিফুজার (৩০), কোবাদ হোসেন (২৫) এবং আকিদুল ইসলাম (৪০) কে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খবর পেয়ে মহম্মদপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে ৪ জন কে আটক করেছে থানা পুলিশ। তাদের মধ্যে ৩জনের নাম জানা গেছে, তারা হলেন, মোস্তফা বিশ্বাস, আমিনুর বিশ্বাস এবং ইউনুচ মোল্যা। সকালেই লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য দুপুরে মাগুরার মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
এদিকে, দরিদ্র আরিফুল ইসলাম খুনের ঘটনায় তার পরিবারে নেমে এসেছে ঘোর অন্ধকার। উপার্জনক্ষম স্বামীকে হারিয়ে ছোট ছোট তিন মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে কিভাবে সংসারের ঘাণি টানবেন তা নিয়ে মহাদুশ্চিন্তায় পড়েছেন তার স্ত্রী রাশেদা বেগম।
এক পক্ষের নেতা স্থানীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি এমডি গোলজার রহমান বলেন, জমিজমা বিরোধের জেরে আরিফুলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। অন্য পক্ষের নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অসিত কুমার রায় বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে রয়েছি। ঘাতকদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে।’
প্রিন্ট