ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ভুয়া পরিচয়ে ফোন করে অর্থ দাবি, সতর্ক থাকার আহ্বান ইউএনও’র Logo হরিপুরে বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠক, ১৩ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর Logo নাটোর-১ আসন হবে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজ মুক্তঃ -আবুল কালাম আজাদ Logo যত বড় নেতাই হন না কেন- অপকর্ম করলে তার জায়গা বিএনপিতে হবে নাঃ -অমিত Logo র‌্যাবের অভিযানে ৯৯০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ৩০০ বোতল ফেন্সিডিল জব্দ; গ্রেফতার ০৫ Logo বালিয়াকান্দিতে আরাফাত রহমান কোকো গোল্ডকাপ উদ্বোধন Logo কখনো ডিবি কখনো মানবাধিকার কর্মী, অবশেষে শশুরবাড়ি থেকে গ্রেফতার প্রতারক কামাল Logo নোয়াখালীতে এক সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু Logo মাধবপুর বাসস্ট্যান্ডে ৯০ বোতল বিদেশি মদসহ আটক ১ Logo তানোর-বায়া রাস্তায় ইট ও খানাখন্দ বাড়িয়েছে যাত্রীদের জীবনঝুঁকি
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

নোয়াখালীতে এক সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু

ওমান ফেরত প্রবাসীকে আনতে গিয়ে প্রাণ হারালেন মা, বোন ও শিশুসহ স্বজনেরা

তাহসিনুল আলম সৌরভঃ

 

আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে নোয়াখালীতে ঘটে গেল এক হৃদয়বিদারক সড়ক দুর্ঘটনা। বিমানবন্দর থেকে ওমান ফেরত এক প্রবাসীকে আনতে গিয়ে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন একই পরিবারের ৭ জন, যাদের মধ্যে ছিল চার শিশু ও তিনজন নারী।

 

জানা যায়, পরিবারের ১০ সদস্য একটি মাইক্রোবাসে করে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফিরছিলেন। গাড়িতে ছিলেন প্রবাসী, তার স্ত্রী, বোন, ভাইয়ের স্ত্রী, এবং কয়েকজন শিশু। পথে, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় আসার পর চালক ঘুমিয়ে পড়েন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইক্রোবাসটি রাস্তার পাশের একটি গভীর খালে পড়ে যায়।

 

স্থানীয় বাসিন্দারা ও পথচারীরা তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধারে এগিয়ে এলেও পানির গভীরতা ও গাড়ির অবস্থান জটিল হওয়ায় সফল হননি। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে।
প্রায় এক থেকে দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় তারা গাড়িটি পানির নিচ থেকে টেনে তোলে এবং একে একে ৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করে।
ফায়ার সার্ভিস নিশ্চিত করেছে—উদ্ধারকৃত সকলেই মৃত।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, নিহতরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। নিহতদের মধ্যে রয়েছে: প্রবাসীর স্ত্রী, প্রবাসীর ছোট বোন, ভাইয়ের স্ত্রী, ৪ জন শিশু (যাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রবাসীর সন্তান ও আত্মীয়) তবে নিহতদের নাম ও বয়স এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। পরিচয় নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসন কাজ করছে। দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই নিহতদের গ্রামের বাড়িতে শোকের মাতম শুরু হয়। এক পরিবারের সাত সদস্য হারিয়ে এলাকা জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

 

স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন এমন ঘটনা আগে কখনো দেখিনি। গাড়ি থেকে যখন একে একে শিশুগুলোর নিথর দেহ বের করা হচ্ছিল, চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি কেউ।

 

সোনাইমুড়ী থানার ওসি বলেন, গাড়িচালক ঘুমিয়ে পড়ায় দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে জেনেছি। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। গাড়িচালক বর্তমানে নিখোঁজ, তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানান, উদ্ধার কাজ কঠিন ছিল, গাড়িটি প্রায় সম্পূর্ণই পানির নিচে ছিল। যাঁরা বের হতে পারেননি, তাঁদের অনেকেই সিটবেল্ট পরা অবস্থায় আটকে ছিলো।

 

একজন প্রবাসীর দেশে ফেরা যে আনন্দের উপলক্ষ হতে পারত, তা পরিণত হলো এক নির্মম ট্র্যাজেডিতে। একই পরিবারের সাতজনের এমন মৃত্যুতে কেবল তাদের পরিবার নয়, পুরো দেশ শোকাহত। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা আমাদের আবারও সতর্ক করে দেয়, চালকের সচেতনতা এবং দীর্ঘ ভ্রমণে বিশ্রামের প্রয়োজনীয়তা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ভুয়া পরিচয়ে ফোন করে অর্থ দাবি, সতর্ক থাকার আহ্বান ইউএনও’র

error: Content is protected !!

নোয়াখালীতে এক সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু

আপডেট টাইম : ৪ ঘন্টা আগে
তাহসিনুল আলম সৌরভ, স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী :

তাহসিনুল আলম সৌরভঃ

 

আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে নোয়াখালীতে ঘটে গেল এক হৃদয়বিদারক সড়ক দুর্ঘটনা। বিমানবন্দর থেকে ওমান ফেরত এক প্রবাসীকে আনতে গিয়ে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন একই পরিবারের ৭ জন, যাদের মধ্যে ছিল চার শিশু ও তিনজন নারী।

 

জানা যায়, পরিবারের ১০ সদস্য একটি মাইক্রোবাসে করে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফিরছিলেন। গাড়িতে ছিলেন প্রবাসী, তার স্ত্রী, বোন, ভাইয়ের স্ত্রী, এবং কয়েকজন শিশু। পথে, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় আসার পর চালক ঘুমিয়ে পড়েন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইক্রোবাসটি রাস্তার পাশের একটি গভীর খালে পড়ে যায়।

 

স্থানীয় বাসিন্দারা ও পথচারীরা তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধারে এগিয়ে এলেও পানির গভীরতা ও গাড়ির অবস্থান জটিল হওয়ায় সফল হননি। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে।
প্রায় এক থেকে দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় তারা গাড়িটি পানির নিচ থেকে টেনে তোলে এবং একে একে ৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করে।
ফায়ার সার্ভিস নিশ্চিত করেছে—উদ্ধারকৃত সকলেই মৃত।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, নিহতরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। নিহতদের মধ্যে রয়েছে: প্রবাসীর স্ত্রী, প্রবাসীর ছোট বোন, ভাইয়ের স্ত্রী, ৪ জন শিশু (যাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রবাসীর সন্তান ও আত্মীয়) তবে নিহতদের নাম ও বয়স এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। পরিচয় নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসন কাজ করছে। দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই নিহতদের গ্রামের বাড়িতে শোকের মাতম শুরু হয়। এক পরিবারের সাত সদস্য হারিয়ে এলাকা জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

 

স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন এমন ঘটনা আগে কখনো দেখিনি। গাড়ি থেকে যখন একে একে শিশুগুলোর নিথর দেহ বের করা হচ্ছিল, চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি কেউ।

 

সোনাইমুড়ী থানার ওসি বলেন, গাড়িচালক ঘুমিয়ে পড়ায় দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে জেনেছি। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। গাড়িচালক বর্তমানে নিখোঁজ, তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানান, উদ্ধার কাজ কঠিন ছিল, গাড়িটি প্রায় সম্পূর্ণই পানির নিচে ছিল। যাঁরা বের হতে পারেননি, তাঁদের অনেকেই সিটবেল্ট পরা অবস্থায় আটকে ছিলো।

 

একজন প্রবাসীর দেশে ফেরা যে আনন্দের উপলক্ষ হতে পারত, তা পরিণত হলো এক নির্মম ট্র্যাজেডিতে। একই পরিবারের সাতজনের এমন মৃত্যুতে কেবল তাদের পরিবার নয়, পুরো দেশ শোকাহত। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা আমাদের আবারও সতর্ক করে দেয়, চালকের সচেতনতা এবং দীর্ঘ ভ্রমণে বিশ্রামের প্রয়োজনীয়তা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।


প্রিন্ট