সেলিম সানোয়ার পলাশঃ
নবঘোষিত সুলতানগঞ্জ নদী বন্দর এবং পোর্ট অব কল সরেজমিন পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণে এসে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়রে উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বন্দর যদি করা যায় তাহলে করা হবে। একদিনে তো আর হবে না। সংশ্লিষ্ট সবার সাথে আলাপ করে যেটা ভাল হবে সেটাই হবে। কারণ রাস্তা ঘাট উন্নতি করতে হবে।
বন্দরটা না হয় বিআইডব্লিউটি করল। এখানে কাস্টমস বুথ আছে। তারা কি কাজ করবে। এ নিয়ে উচ্চপর্যায়ে আলাপ করতে হবে। এখানে বসে আমি সিদ্ধান্ত দেব তা তো হবে না। কারণ এ ধরনের একটা ডিসিশন নিতে হলে সবপক্ষের সাথে আলাপ করতে হবে। এর অনেকগুলো ট্রেডিশন আছে। রাস্তা কে বানাবে, এখানে পোর্ট অথরিটি কি করবে, কাস্টমস অথোরিটি কি করবে, এগুলো নিয়ে কথা বলতে হবে। কাজেই সকল পক্ষের ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেলে অচিরেই নদীবন্দরের কার্যক্রম শুরু হবে।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর ও পোর্ট অব প্রটোকল পরিদর্শন করেছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন। শুক্রবার সকালে বন্দরটি পরিদর্শন করেন তিনি। পরে তিনি এক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) ড. এম সাখাওয়াত বলেন, বিভিন্ন জায়গায় উন্নয়নের পক্ষে আমি কাজ করি। প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে যা করা দরকার তাই করার চেষ্টা করছি। আমার এই ক্যাপাসিটিতে আমি রাজশাহী এসেছি। জানি রাজশাহী অঞ্চলের মানুষ অত্যন্ত সহযোগী এবং শান্তিপ্রিয়, উন্নয়নমুখী। আমি খুব পজিটিভ মানুষ। বিষয়টি পজিটিভলি দেখব তবে যেহেতু এটা রাষ্ট্রীয় ব্যাপার, তাই এগুলো রাস্তাঘাটে হয় না। এখানে অনেকগুলো পার্টিই জড়িত। কাস্টমস জড়িত, নৌ বন্দর জড়িত, স্থল বন্দর জড়িত। সুতরাং এটা একার ডিসিশন নয়। তবে ডিসিশনটা আপনাদের পক্ষে যাতে হয় এটা আমি চেষ্টা করব। আপনাদের অনেক আগ্রহ আছে বোঝা যাচ্ছে। কারণ এ জায়গাতে পোর্ট হলে ব্যবসা-বাণিজ্য আরেকটু ত্বরান্বিত হবে।
পরে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের সাইডে যেটুকু নদী আছে, এটা আমরা ড্রেজিং করতে পারব। ভারতের অংশে আমাদের পক্ষে ড্রেজিং করা সম্ভব না। আমাদের পাশে ভারত, তারা যদি না করে আমরা তাদের রিকোয়েস্ট করতে পারব। পদ্মায় কখনও পানি বেশি থাকে, কখনও কম থাকে। যৌথ আলোচনা নিশ্চয় হবে। তারাও তো আগ্রহী যে তাদের পণ্য বিক্রি হবে। ওইপারের ব্যবসায়ীরাও নিশ্চয় তাদের সরকারকে বলবেন নাব্যতার ব্যাপারে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- বিভাগীয় কমিশনার রাজশাহী জনাব মোঃ খোন্দকার আজিম আহমেদ, জেলা প্রশাসক রাজশাহী জনাব আফিয়া আক্তার, পুলিশ সুপার রাজশাহী জনাব ফারজানা ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ব্যাটালিয়ন ৫৩ বিজিবির উপ-অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ আসরারুল হক, সদস্য (কাস্টমস নিরীক্ষা আধুনিকায়ন ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ঢাকার মোঃ আল আমিন প্রামানিক, (জি) এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, বিএন, চেয়ারম্যান বিআইডব্লিউটিএ কমডোর আরিফ আহমে মোস্তফা, বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জনাব মোঃ মানজারুল মান্নান, কাস্টমস কমিশনার রাজশাহী জনাব মোঃ ফাইজুর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি জনাব আব্দুল ওয়াহেদ, রাজশাহী চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি জনাব মাসুদুর রহমান রিঙ্কু, গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব ফয়সাল আহমেদ প্রমূখ।
উল্লেখ, বাংলাদেশ ও ভারতের নৌ প্রটোকলের আওতায় পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয় বহুল কাঙ্খিত রাজশাহীর গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ পোর্ট অব কল এবং সুলতানগঞ্জ-মায়া নৌপথে পণ্যবাহী নৌযান চলাচল। পদ্মা ও মহানন্দার মোহনায় অবস্থিত গোদাগাড়ী উপজেলার সুলতানগঞ্জ অংশ সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ২০২৪ সালে সকাল ১১ টায় সুলতানগঞ্জ নৌবন্দর এবং ভারতের মুর্শিদাবাদের মায়া নৌবন্দর পর্যন্ত পণ্যবাহী নৌযান চলাচলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
প্রিন্ট