মোঃ নূর ই আলম (কাজী নূর)ঃ
‘সাহিত্য সমাজের আয়না। কবিতা, গল্প, নাটকের মাধ্যমে সাহিত্যিকরা সমাজের চিত্র তুলে ধরেন। সাহিত্য মানুষের মধ্যে সহমর্মিতা, ভালবাসা ও দায়িত্ববোধ তৈরি করে। জীবনের জন্য বহুমাত্রিক জ্ঞান অর্জন ও সাহিত্য চর্চা গুরুত্বপূর্ণ। সাহিত্যকে অবশ্যই শিল্পমন্ডিত, অলঙ্কারে সুসজ্জিত, রুচিবোধ ও নৈতিকতাবোধ সম্পন্ন হতে হবে। তবে আশার কথা হচ্ছে, সুসাহিত্যের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে দেশের দক্ষিণ বাংলার অন্যতম সাহিত্য চর্চার বাতিঘর হিসেবে পরিচিত বিদ্রোহ সাহিত্য পরিষদ- বিএসপি যশোর। দীর্ঘ ২৯ বছর যাবত বিএসপি সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে নিরলসভাবে কাজ করেছে। যে অবদানের কথা নিঃসন্দেহে ইতিহাসের পাতায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’.
শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টায় বিদ্রোহী সাহিত্য পরিষদ- বিএসপি যশোর এর ২৫০তম সাহিত্য সভা উপলক্ষে শহরের পোস্টঅফিস পাড়ায় সংগঠনের নিজস্ব কার্যালয়ে কবিতা পাঠ, আলোচনাসভা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন খুলনার নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (এনইউবিটি) প্রফেসর শিক্ষাবিদ, গবেষক ড. সন্দীপক মল্লিক।
বিএসপির সভাপতি কবি আহমদ রাজুর সভাপতিত্বে প্রফেসর মল্লিক আরো বলেন, ‘সাহিত্য চর্চার আবেদন সর্বদা গ্রহণযোগ্য হতে হবে। এ আবেদন সমাজ বির্নিমাণে প্রয়োগ করতে পারলে সমাজের উন্নয়ন হবে। জীবনের জন্য বহুমাত্রিক জ্ঞান অর্জন ও সাহিত্য চর্চা গুরুত্বপূর্ণ। যে সাহিত্য জীবনের কথা, দ্রোহের কথা, আশা আকাঙ্ক্ষার কথা, প্রতিবাদের কথা বলে না, সে সাহিত্য কখনোই প্রকৃত সাহিত্যের মর্যাদা পায় না। সাহিত্যিক তার চিন্তা, অনুভূতি ও অভিজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমে নিজের পরিচয় ও সত্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটান।
সাহিত্যিক মোতাহের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, ‘ভাত না খেলে তীব্র দুঃখ অনুভূত হয়, কিন্তু খেলে গভীর আনন্দ পাওয়া যায় না। একটা সুন্দর সনেট না পড়লে দুঃখ নেই, কিন্তু পড়লে খুশিতে মন ভরে ওঠে। দৈনিক পত্রিকা না পড়লে দিনটা মাটি হলো বলে মনে হয়, কিন্তু পড়লে তেমন তৃপ্তি পাওয়া যায় না। একটা ভালো সাহিত্যের বই না পড়লেও চলে, কিন্তু পড়লে মন আনন্দে নেচে ওঠে। জীবনকে সার্থক বলে অভিনন্দিত করতে ইচ্ছে হয়।’
বিএসপির সাধারণ সম্পাদক কবি গোলাম মোস্তফা মুন্নার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন কবি ও গল্পকার অরুণ বর্মন, কবি শাহরিয়ার সোহেল ও নূরজাহান আরা নীতি। বিশেষ অতিথি হিসেবে স্মৃতিচারণ করেন কবি ও ঔপন্যাসিক ড. শাহনাজ পারভীন, অগ্নিবীণা কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মোর্শেদ আলম, বিএসপির সাবেক সভাপতি কবি আবু দাউদ মোসলেহ উদ্দিন রতন, সুরাইয়া শরীফ, রাশিদা আখতার লিলি, ফারুক ইবনে আয়নাল, অমিয় কাসেম, রেজাউল করিম রোমেল। এর আগে বিদ্রোহী সাহিত্য পরিষদের গঠন, ইতিহাস ও ঐতিহ্য তলে ধরে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মুন্না।
কবিতা পাঠ ও স্মৃতিচারণে অংশ নেন, কবি শেখ মফিজুর রহমান, অধ্যাপক দীনেশ মণ্ডল, ভদ্রাবতী বিশ্বাস, শরীফ উদ্দিন, ডা. আহাদ আলী, অ্যাড. মাহমুদা খানম, এমএনএস তুর্কী, আব্দুল খালেক, কুতুব উদ্দিন বিশ্বাস, আহমেদ মাহবুব ফারুক, কাজী খলিলুর রহমান, আতিয়ার রহমান, বাবুল আহমেদ তরফদার, রবিউল হাসনাত সজল, কাজী নূর, সঞ্জয় নন্দী, বকুল হক, সানজিদা ফেরদৌস, শরিফুল আলম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে গত এক বছরে সর্বাধিক উপস্থিতির জন্য কবি অ্যাড. মাহমুদা খানমকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
প্রিন্ট