ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মামলা তুলে নিতে হুমকি

ভেড়ামারায় চাঞ্চল্যকর সিদ্দিক হত্যা মামলার বাদী প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সন্মেলনে অভিযোগ

কুষ্টিয়া ভেড়ামারায় চাঞ্চল্যকর আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিক মন্ডল হত্যা মামলার আসামিরা দায়েরকৃত মামলা তুলে নিতে বাদী ও সাক্ষীদেরকে খুন-জখমের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন নিহতের পরিবার।

গতকালবুধবার (১৭ আগষ্ট) বিকেল সাড়ে ৫ টায় ভেড়ামারা প্রেস ক্লাব হলরুমে নিহতের পরিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।

নিহতের ভাই মো. ইউনুচ আলী মন্ডল সংবাদ সম্মেলন বলেন, আমার ভাই ও চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ছিদ্দিক মন্ডলকে  গত ১৮ ফ্রেব্রুয়ারী-২২ সকাল ৭ টায় এজাহার নামীয় আসামীরা পূর্বপরিকল্পিত হামলা চালায়। এসময় বন্দুকের ছোড়া গুলিতে ছিদ্দিক মন্ডল নিহত হয়। হামলায় তিনজন গুলিবিদ্ধসহ ৪ জন আহত হয়। এ ঘটনায় আমার চাচাতো ভাই মো. এনামুল হক ভেড়ামারা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পরে কুষ্টিয়া র‍্যাব-১২ অস্ত্রসহ ২ জন আসামী গ্রেফতার করে।  এজাহার নামীয় ২০ আসামীর মধ্যে একজন ছাড়া বাকী সবাই বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিন পেয়েছে।

তিনি সংবাদ সম্মেলনে আরো অভিযোগ করে বলেন, আসামী রনি, মুক্তার, মিন্টু, আশিক দায়েরকৃত মামলা তুলে নেওয়ার জন্য মামলার বাদী, সাক্ষী ও নিহতের পরিবারকে  খুন-জখমের হুমকি দিচ্ছে। বর্তমানে আমরা আতঙ্কগ্রস্থ অবস্থায় রয়েছি। না জানি তারা আবার কখন অতর্কৃত ভাবে হামলা করে মেরে ফেলতে পারে।

এ বিষয়ে মামলার আসামি মো. মুক্তার বলেন, তাদের অভিযোগ মিথ্যা। এতদিন বাড়ি ছাড়া ছিলাম। সবে মাত্র বাড়ি ফিরতে শুরু করেছি।  সেই জন্য এ মিথ্যা অভিযোগ করছে তারা।

ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, এধরনের কোন বিষয়ে আমরা অবহিত নয়। থানায় কেউ অভিযোগ  করেনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নিহতের ভাই ইউনুচ আলী, খাল্লেক মন্ডল, মা মোছা. ভানু, স্ত্রী শরিফা, ছেলে মোজাহিদ, মামলার বাদি এনামুল হক প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারী সকাল ৭টার দিকে ভেড়ামারা উপজেলার চাঁদগ্রাম চরে প্রকাশ্য দিবালোকে দুর্বৃত্তরা অতর্কিত গুলি বর্ষণ করে কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলার চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিককে নির্মমভাবে হত্যা করে। দীর্ঘদিন যাবত বিরাজমান বংশগত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষ মালিথা বংশের লোকজন কর্তৃক তিনি নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন।

উক্ত হত্যাকান্ডের প্রেক্ষিতে নিহতের ভাই মোঃ এনামুল হক বাদী হয়ে পরদিন ১৯ ফেব্রæয়ারী ভেড়ামারা থানায় মামলা দায়ের করেন । যার মামলা নাম্বার-১৮, তারিখ-১৯/০২/২০২২, ধারা-১৪৩/৪৪৭/৩২৬/৩০৭/৩০২/১১৪/৩৪ পেনাল কোড। উক্ত হত্যাকান্ডটি দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এরই ধারাবাহিকতায় সিপিসি-১, কুষ্টিয়া ক্যাম্প, র‌্যাব-১২ এর অভিযানে বুধবার রাতে কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন এলাকা হতে এজাহার নামীয় আসামী চন্ডিপুর গ্রামের মৃত সোনা মালিথার ছেলে মিন্টু মালিথা (২৮), চাঁদপুর গ্রামের নজরুল মালিথার ছেলে রনি মালিথা (২৮), চাঁদগ্রামের আব্দুল হামিদ ওরফে কটার ছেলে জনি (২৮), ও ড্যানি (২৫), মৃত জফো প্রামানিকের ছেলে জারমান প্রামানিক (৪০), কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদেরকে পরবর্তীতে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে মিন্টু মালিথা ও রনি মালিথার দেখানো জায়গা হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দুইটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

আরও পড়ুনঃ বোয়ালমারীতে ধর্ষকের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন

গ্রেফতারকৃত মিন্টু মালিথা ও রনি মালিথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক হত্যাকান্ডে তাদের কথা প্রাথমিক ভাবে স্বীকার করেছে। স্থানীয় জনগণ অনেকেই গ্রেফতারকৃত মিন্টু মালিথা ও রনি মালিথাকে সরাসরি হত্যা কান্ডে অংশগ্রহন করতে দেখেছে এবং বাকি ৩ জন তাদেরকে হত্যা কান্ডে অন্যান্য সহযোগিতা প্রদান করেছে। মামলার হুকুমদাতা ০১নং আসামী আব্দুল আলিম স্বপন ও প্রকাশ্যে দিবালোকে গুলি করে হত্যার দায়ে ০২নং আসামী আব্দুল হাফিজ তপন সহ এজাহার নামীয় ২০(বিশ) জন আসামীদের মধ্যে একজন পলাতক বাকী সবাই বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিনে এসে এলাকায় ফিরে দায়েরকৃত মামলা তুলে নেওয়ার জন্য মামলার বাদী সহ আমার পরিবার এবং সাক্ষীদের অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করে প্রতিনিয়ত খুন-জখমের হুমকি দেওয়া অব্যাহত রেখেছে বলে তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান ।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

এবার ২১ দিনের মধ্যে জবাব দিতে আদানিকে সমন পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

error: Content is protected !!

মামলা তুলে নিতে হুমকি

ভেড়ামারায় চাঞ্চল্যকর সিদ্দিক হত্যা মামলার বাদী প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সন্মেলনে অভিযোগ

আপডেট টাইম : ১১:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ অগাস্ট ২০২২
ইসমাইল হোসেন বাবু, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধিঃ :

কুষ্টিয়া ভেড়ামারায় চাঞ্চল্যকর আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিক মন্ডল হত্যা মামলার আসামিরা দায়েরকৃত মামলা তুলে নিতে বাদী ও সাক্ষীদেরকে খুন-জখমের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন নিহতের পরিবার।

গতকালবুধবার (১৭ আগষ্ট) বিকেল সাড়ে ৫ টায় ভেড়ামারা প্রেস ক্লাব হলরুমে নিহতের পরিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।

নিহতের ভাই মো. ইউনুচ আলী মন্ডল সংবাদ সম্মেলন বলেন, আমার ভাই ও চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ছিদ্দিক মন্ডলকে  গত ১৮ ফ্রেব্রুয়ারী-২২ সকাল ৭ টায় এজাহার নামীয় আসামীরা পূর্বপরিকল্পিত হামলা চালায়। এসময় বন্দুকের ছোড়া গুলিতে ছিদ্দিক মন্ডল নিহত হয়। হামলায় তিনজন গুলিবিদ্ধসহ ৪ জন আহত হয়। এ ঘটনায় আমার চাচাতো ভাই মো. এনামুল হক ভেড়ামারা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পরে কুষ্টিয়া র‍্যাব-১২ অস্ত্রসহ ২ জন আসামী গ্রেফতার করে।  এজাহার নামীয় ২০ আসামীর মধ্যে একজন ছাড়া বাকী সবাই বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিন পেয়েছে।

তিনি সংবাদ সম্মেলনে আরো অভিযোগ করে বলেন, আসামী রনি, মুক্তার, মিন্টু, আশিক দায়েরকৃত মামলা তুলে নেওয়ার জন্য মামলার বাদী, সাক্ষী ও নিহতের পরিবারকে  খুন-জখমের হুমকি দিচ্ছে। বর্তমানে আমরা আতঙ্কগ্রস্থ অবস্থায় রয়েছি। না জানি তারা আবার কখন অতর্কৃত ভাবে হামলা করে মেরে ফেলতে পারে।

এ বিষয়ে মামলার আসামি মো. মুক্তার বলেন, তাদের অভিযোগ মিথ্যা। এতদিন বাড়ি ছাড়া ছিলাম। সবে মাত্র বাড়ি ফিরতে শুরু করেছি।  সেই জন্য এ মিথ্যা অভিযোগ করছে তারা।

ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, এধরনের কোন বিষয়ে আমরা অবহিত নয়। থানায় কেউ অভিযোগ  করেনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নিহতের ভাই ইউনুচ আলী, খাল্লেক মন্ডল, মা মোছা. ভানু, স্ত্রী শরিফা, ছেলে মোজাহিদ, মামলার বাদি এনামুল হক প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারী সকাল ৭টার দিকে ভেড়ামারা উপজেলার চাঁদগ্রাম চরে প্রকাশ্য দিবালোকে দুর্বৃত্তরা অতর্কিত গুলি বর্ষণ করে কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলার চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিককে নির্মমভাবে হত্যা করে। দীর্ঘদিন যাবত বিরাজমান বংশগত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষ মালিথা বংশের লোকজন কর্তৃক তিনি নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন।

উক্ত হত্যাকান্ডের প্রেক্ষিতে নিহতের ভাই মোঃ এনামুল হক বাদী হয়ে পরদিন ১৯ ফেব্রæয়ারী ভেড়ামারা থানায় মামলা দায়ের করেন । যার মামলা নাম্বার-১৮, তারিখ-১৯/০২/২০২২, ধারা-১৪৩/৪৪৭/৩২৬/৩০৭/৩০২/১১৪/৩৪ পেনাল কোড। উক্ত হত্যাকান্ডটি দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এরই ধারাবাহিকতায় সিপিসি-১, কুষ্টিয়া ক্যাম্প, র‌্যাব-১২ এর অভিযানে বুধবার রাতে কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন এলাকা হতে এজাহার নামীয় আসামী চন্ডিপুর গ্রামের মৃত সোনা মালিথার ছেলে মিন্টু মালিথা (২৮), চাঁদপুর গ্রামের নজরুল মালিথার ছেলে রনি মালিথা (২৮), চাঁদগ্রামের আব্দুল হামিদ ওরফে কটার ছেলে জনি (২৮), ও ড্যানি (২৫), মৃত জফো প্রামানিকের ছেলে জারমান প্রামানিক (৪০), কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদেরকে পরবর্তীতে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে মিন্টু মালিথা ও রনি মালিথার দেখানো জায়গা হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দুইটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

আরও পড়ুনঃ বোয়ালমারীতে ধর্ষকের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন

গ্রেফতারকৃত মিন্টু মালিথা ও রনি মালিথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক হত্যাকান্ডে তাদের কথা প্রাথমিক ভাবে স্বীকার করেছে। স্থানীয় জনগণ অনেকেই গ্রেফতারকৃত মিন্টু মালিথা ও রনি মালিথাকে সরাসরি হত্যা কান্ডে অংশগ্রহন করতে দেখেছে এবং বাকি ৩ জন তাদেরকে হত্যা কান্ডে অন্যান্য সহযোগিতা প্রদান করেছে। মামলার হুকুমদাতা ০১নং আসামী আব্দুল আলিম স্বপন ও প্রকাশ্যে দিবালোকে গুলি করে হত্যার দায়ে ০২নং আসামী আব্দুল হাফিজ তপন সহ এজাহার নামীয় ২০(বিশ) জন আসামীদের মধ্যে একজন পলাতক বাকী সবাই বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিনে এসে এলাকায় ফিরে দায়েরকৃত মামলা তুলে নেওয়ার জন্য মামলার বাদী সহ আমার পরিবার এবং সাক্ষীদের অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করে প্রতিনিয়ত খুন-জখমের হুমকি দেওয়া অব্যাহত রেখেছে বলে তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান ।


প্রিন্ট