কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পদ্মা ভাঙন থেকে বাহিরচর ইউনিয়নের বার মাইল,টিকটিকিপাড়া,মুন্সিপাড়া পদ্মা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এর ফলে তিন গ্রামের পাঁচ হাজার পরিবারের বাড়িঘর হুমকির মুখে। ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হাজারও নারী-পুরুষ পদ্মানদীর পাড়ে বিশাল মানববন্ধন করেছে। ভয়াল পদ্মাপাড় ভাঙন রক্ষার্থে ১৭জুলাই রবিবার সকাল ১১টার সময় তিন গ্রামের নারী-পুরুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিকার চেয়ে মানববন্ধনে দাড়িয়ে বজ্রকণ্ঠে জোর প্রতিবাদ জানায়।
উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের বার মাইল,টিকটিকিপাড়া,মুন্সিপাড়া পদ্মার তীর ঘেসে নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙন থেকে মাত্র দেড় শ’ মিটার দূরে ঝুঁকিতে রয়েছে প্রায় ৫ হাজার পরিবারের বাড়িঘর।
মসলেমপুর থেকে মুন্সিপাড়া পযন্ত প্রায় ১২থেকে ১৫শ’ বিঘা মৌসুমী ফসলের জমি ইতোমধ্যে পদ্মানদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। জমির ফসল ঢুবে যাওয়ায় এলাকার কৃষকের মাথায় হাত।
নদী শাসন এবং ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিবছরই বিস্তীর্ণ এলাকা নদী ভাঙনের শিকার হয় এই অঞ্চলের মানুষ। প্রায় হাজার একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়। অস্বাভাবিক নদী ভাঙন ঠেকাতে মানুষের জীবন-জীবিকা ও অবকাঠামো কীভাবে টিকে থাকবে, সেই পরিকল্পনা নেয়ার জন্য এরাকাবাসী সরকার বাহাদুরের প্রতি জোরদাবী করেছেন। ভাঙন রোধে তিন গ্রামের নারী-পুরুষ পদ্মানদীর পাড়ে মাঝে মধ্যেই করছে মানববন্ধন। অবিলম্বে টিকটিকিপাড়া,মুন্সিপাড়া এলাকার মানুষ পদ্মানদীর ভাঙনের টেকসই সমাধান চাই। এই লক্ষে পদ্মাপাড় ভাঙন রক্ষার্থে ১৭জুলাই রবিবার সকাল ১১টার সময় তিন গ্রামের হাজার ও নারী-পুরুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে প্রতিকার চেয়ে মানববন্ধনে জোর প্রতিবাদ জানায়।
আরও পড়ুনঃ ১৭ বছর পর মানলেন বিয়ে, বরযাত্রী ছিল ছেলে-মেয়েও
ভাঙন এলাকার মানুষ মোহাম্মদ মোল্লা বলেন, ১৫ দিন আগে প্রথম দফায় নদীর পানি বেড়ে যায়। গত সাত দিনই পানি অস্বাভাবীক ভাবে বেড়ে ফসলের জমি তলিয়ে যায় শুরু হয় ভাঙনের তীব্রতা।
কৃষক স্বাধীন আহমেদ,শহিদুল,হাবিব,আবু বক্কার,হান্নান,মজিবর,শুকটা জানান এ পর্যন্ত আমাদের প্রায় ৫শ’ পরিবারের প্রায় ১৪ শ’ বিঘা জমি ভাঙনে নদীর বুকে চলে গেছে। গত সাত দিনে প্রায়৫শ’ বিঘার জমির আউশ ধান, কলা, পেঁয়াজ, রসুন করোলা সবজিসহ ফসলি জমি নদীতে ভেঙে গেছে।
আবু হাসান বাহিরচর ইউনিয়ন জাসদের সাধারণ সম্পাদক তিনি জানায় , ছয়-সাত বছর ধরে এ এলাকা নদীভাঙনের শিকার হচ্ছে। প্রতিবছরই নদীতে চলে যাচ্ছে ফসলি জামি। তবু ও কেউ কোন ব্যবস্থা নেয় না।
টিকা মুন্সি বাহিরচর ইউনিয়ন যুবজোটের সভাপতি বলেন, ভাঙনের বিষয়টি অত্র এলাকার সংসদ সদস্য ,চেয়ারম্যান এমন কি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি। ফলে ৩ গ্রামের ৫ হাজার বাড়িঘর ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মানুষকে সাথে নিয়ে মানববন্ধন করছি।
মতিয়ার রহমান বাহিরচর ইউনিয়ন যুবজোটের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাহিরচর ইউনিয়নের মসলেমপুর থেকে মুন্সীপাড়া পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকার ভাঙনে ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন বাড়িঘর ভাঙনে হুমকির মধ্যে।
কুষ্টিয়া-২ ভেড়ামারা-মিরপুর আসনের সংসদ সদস্য জাসদ কেন্দ্রী কমিটির সভাপতি সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু’র প্রতিনিধি জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুল আলিম স্বপন বলেন, ‘ভাঙনের বিষয়টি আমাদের সংসদ সদস্য জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু মহোদয়কে জানিয়েছি। তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানিয়েছেন। এরপর নির্বাহী প্রকৌশলী পরিদর্শন করে সার্ভে করে গেছেন। আমি ভাঙন রোধে আন্দোলনকারীর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি।
আরও পড়ুনঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ফেন্সিডিলসহ আটক ২
এই ব্যাপারে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আব্দুল হামিদ বলেন, গত পৌষদিন সকালে নির্বাহী প্রকৌশলী ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে সার্ভে করেছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
প্রিন্ট