কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় পদ্মা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের মসলেমপুর এলাকা থেকে মুন্সীপাড়া পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার এলাকার ভাঙ্গনে ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এখন বাড়িঘর ভাঙ্গনে হুমকির মধ্যে পড়েছে। ভাঙ্গন থেকে মাত্র দেড়শ মিটার দুরে রয়েছে প্রায় ৫ হাজার পরিবারের বাড়িঘর।
ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আজ ২৬জুন রোববার বাহিরচর ইউনিয়নের ১২ মাইল ভাঙনকবলিত এলাকায় বিকেল ৪ টায় পদ্মা পাড়ে মানববন্ধন করেছে হাজারো এলাকাবাসী।
ইউনিয়ন জাসদের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান বলেন, গত সাত দিন ধরে ভেড়ামারার বাহিরচর ইউনিয়নের মসলেমপুর এলাকা থেকে শুরু করে বাহিরচর টিকটিকি পাড়া ও মুন্সি পাড়া পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার জুড়ে নদীভাঙন শুরু হয়েছে। তবে গত তিন দিনে তা তীব্র আকার ধারণ করেছে। তিনি আরও বলেন এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচশ পরিবারের ১২০০ বিঘা জমি ভাঙ্গনে নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
গত সাত দিনে ২০০ বিঘার জমির আউশ ধান, কলার বাগন, পিয়াজ, রসুন কড়লা পটল সবজিসহ ফসলী জমি নদীতে ভেঙে গেছে।
৮নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন বলেন, ভাঙ্গনে এখন মোসলেমপুর, টিকটিকি পাড়া ও মুন্সিপাড়ার ৬ কিলোমিটারের মধ্যে পাঁচ হাজার পরিবার বসবাস করছে। এসব পরিবারের বাড়ি ঘর ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। বাড়ি-ঘর থেকে মাত্র ১শ মিটার দুরে রয়েছে নদী।
ভাঙ্গনে শহিদুল মন্ডলের ২ বিঘা, হাবিবুর রহমানের ৩ বিঘা, আবু বক্করের ৫ বিঘা মজিবর প্রামানিকের ২ বিঘাসহ ২শ মানুষের জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
তাঁরা জানান, গত ৭ দিন আগে প্রথম দফায় নদীর পানি বেড়ে যায়। ফলে ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে গেছে।
ইতিপূর্বে আউশ ধান, কলা, পিয়াজ, রসুন করোলা সবজির মাঠ নদীতে ভেসে গেছে। এক সাপ্তাহের ভাঙ্গনে ২০০ বিঘা জমি নদীতে চলে গেছে। এর আগেও ভেঙেছে। এখন বাড়িঘর ভাঙনের মুখে। নদী এখন একশো মিটার দুরে রয়েছে। রোধ করা না হলে সব নদী গর্ভে চলে যাব আমরা ভিটা ছাড়া হবো। তাই ভাঙন রোধে দ্রæত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
মানববন্ধনে জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুল আলিম স্বপন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, পৌর মেয়র আনোয়ারুল কবির টুটুল, উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক এসএম আনসার আলী, পৌর জাসদের সাধারণ সম্পাদক আবু হেনা মোস্তফা কামাল বকুল, ইউনিয়ন জাসদের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান, ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন, সফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, প্রতিবছরই নদীতে চলে যাচ্ছে ফসলি জামি। এবার বসত বাড়ির নিকট চলে এসেছে। ৫ হাজার পরিবার হুমকির মুখে।
আরও পড়ুনঃ চরভদ্রাসনে গৃহবধুর হাত-মুখ বেধেঁ স্বর্নালঙ্কার লুট
প্রধান অতিথি আব্দুল আলিম স্বপন বলেন, ভাঙনের বিষয়টি আমাদের সংসদ সদস্য জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এম মহোদয়কে জানিয়েছি। তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানিয়েছেন। এরপর নির্বাহী প্রকৌশলী পরিদর্শন করে সার্ভে করে গেছেন। প্রধান অতিথি আব্দুল আলিম স্বপন পদ্মা থেকে নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানান।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আব্দুল হামিদ বলেন, আজকে সকালে (গতকাল) নির্বাহী প্রকৌশলী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে সর্ভে করেছেন। বিষয়টি উর্ধতন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই ভাঙ্গন রোধে দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও ভাঙ্গন কবলিত এলাকা নিয়ে স্টাডি চলছে বলে তিনি জানান।
প্রিন্ট