ফরিদপুরের নগরকান্দায় খাদ্যবান্ধব কর্মসুচী ১০ টাকা কেজি মূলের চাল বিতরনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার তালমা ইউনিয়নে ডিলার রাফেজা বেগমের বিরুদ্ধে, ১০ টাকা কেজি মূল্যের চাল বিতরণে অনিয়ম ও দুর্ণীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর আওতায়, খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত হতদরিদ্রদের জন্য স্বল্পমূল্যে খাদ্যশস্য বিতরণে, ১০ টাকা কেজি মূল্যে প্রতি কার্ডধারীকে ৩০ কেজি চাল দেওয়ার বিধান থাকলেও, ডিলার দীর্ঘদিন ধরে ওজনে কম চাল বিতরণ করছে বলে অভিযোগ কার্ডধারীদের।
ফরিদপুরের নগরকান্দা খাদ্য বিভাগের বাস্তবায়নে, তালমা ইউনিয়নের ১,২,৩,৬ ও ৯নং ওয়ার্ডের মোট ৬৩৭ জন কার্ডধারী জনপ্রতি মাসে একবার ১০ টাকা কেজি মূল্যে ৩০ কেজি চাল উত্তোলন করতে পারবে ডিলার রাফেজা বেগমের দোকান থেকে। রোববার (১০ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৪ টায় তালমা ইউনিয়নের সদরবেড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ডিলার রাফেজা বেগম খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর চাল বিতরণ করছেন।
এসময় দেখা যায়, তার দোকানে টানানো ব্যানারে দোকানের স্থান তালমার পাগলপাড়া লেখা রয়েছে। কিন্তু ডলিার চাল দিচ্ছে তিন কিলোমিটার দুওে সদরবেড়া ডিলারের বাড়ীর পাশে। চাল বিতরণের সময় ট্যাগ অফিসার তালমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ারা খানম কচিকে সেখানে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি। চাল বিতরণ সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা এটা দেখতে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক ডিলারের দোকানে প্রবেশ করেন। কিন্তু চাল ওজন দেয়া দেখতে বাধা প্রদান করেন ডিলার রাফেজা বেগম।
এসময় ডিলার রাফেজা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, “অফিসাররা এসে সব দেখে গেছে, আপনারা চাল মাপা দেখবেন কেনো। গোডাউন থেকে চাল ওজনে কম দেয়া হয় এবং কিছু বস্তা ফেটে গিয়ে চাল নষ্ট হয়ে যায়, তাই কার্ডধারীদের ওজনে কিছু চাল কম দিচ্ছি।
ডিলারের অভিযোগের সত্যতা জানতে, গোডাউন থেকে আসা চালের বস্তার মধ্যে থেকে কয়েকটি চালের বস্তা তাৎক্ষনিক মেপে দেখা যায়, প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি চাল সঠিক মাপেই আছে। চাল বিতরণের সময় উপস্থিত কার্ডধারীরা জানান, ডিলার প্রতিবারেই চাল ওজনে কম দিচ্ছে। কেউ পাচ্ছে ২৬ কেজি, আবার কেউ পাচ্ছে ২৮ কেজি চাল। মাঝে মধ্যে বালতি দিয়ে চাল মেপে দিচ্ছে। কার্ডধারীরা বাড়িতে গিয়ে মেপে দেখছে, চাল দিয়েছে জনপ্রতি ২৫-২৬ কেজি। সাংবাদিক উপস্থিত থাকলে ওজনে কম দিতে পারবেনা তাই ঐ সময় চাল বিতরণ বন্ধ করে দেন।
ট্যাগ অফিসার আনোয়ারা খানম কচি মোবাইল ফোনে বলেন, আমি রবিবার (১০ অক্টোবর) সকালে ডিলার রাফেজা বেগমের দোকানে গিয়েছিলাম। তবে আমার জরুরী কাজ থাকায় চলে এসেছি। আমার অনুপস্থিতিতে চাল বিতরণ করতে পারবে না, এটা আমার জানা নেই।
উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী আজাহার বলেন, গোডাউন থেকে সঠিক ওজনে চাল মেপে দিয়েছি। আমাদের থেকে ডিলার চাল বুঝে নিয়ে, তার পর তারা স্বাক্ষর করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেতী প্রু বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর চাল বিতরণে অনিয়ম দুর্নীতি করা হলে, অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
প্রিন্ট