ঢাকা , বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo কিছু কিছু দল বাংলাদেশকে মৃত্যুপুরী বানাচ্ছেঃ -মোমিন মেহেদী Logo জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির ‌ প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত  Logo প্রয়াত বুড়ি মা’র তিরোধান বার্ষিকী স্মরণে দৌলতপুরের আনন্দ ধামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সাধুসঙ্গ Logo নাটোরে গরম পানি দিয়ে ঝলসানো নারীর সিএমএইচে চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন সেনাবাহিনী Logo নরসিংদী সিটি হাসপাতালে ১৮ ইঞ্চি ‘মব’ কাপড় পেটে রেখেই সেলাই, সংকটাপন্ন প্রসূতি Logo দৌলতপুরে থানার সামনে স্বর্ণের দোকানে দূর্ধর্ষ চুরি Logo শ্রেণিকক্ষে পানিঃ দৌলতপুরে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা Logo সারাদেশে এনসিপির সাড়া দেখে বলা হচ্ছে নিবন্ধনের কাগজে ঝামেলা আছেঃ -হান্নান মাসউদ Logo মাদারিপুরে দু’টি বাস-পিকআপের ত্রিমুখী সংঘর্ষে আহত ৬ Logo প্রয়াত বিচারক মহম্মদ নুরুল হোদা মোল্লার মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়ার মজলিস
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা

সাজা থেকে খালাস পেলেন খালেদা জিয়া

-ফাইল ছবি।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছর কারাদন্ড থেকে খালাস পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এ রায়ের বিরুদ্ধে তার করা আপিল মঞ্জুর করে গতকাল বুধবার এ রায় দেয় বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

 

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এ মামলায় গত ২০ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসনের আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। এর আগে ৩ নভেম্বর আপিল শুনানির জন্য পেপারবুক (মামলার সব বৃত্তান্ত) তৈরি করতে হাইকোর্টের অনুমতি নিয়েছিলেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

 

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতির আদেশে জিয়া অনফানেজ ট্রাস্ট মামলা ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা মওকুফ করা হয়। ইতিমধ্যে অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য পেপারবুক প্রস্তুতের অনুমতি নেওয়া হয়েছে হাইকোর্ট থেকে। দুই মামলায় সাজা মওকুফের পরও আপিল শুনানির যুক্তি হিসেবে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তখন বলেছিলেন, ‘সাজা মওকুফে ক্ষমার কথা বলা আছে। কিন্তু বিএনপি চেয়ারপারসন কোনো অপরাধ করেননি। তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তিনি আইনিভাবেই মামলা মোকাবিলা করে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চান।’

 

এরই ধারাবাহিকতায় আপিল শুনানির এ উদ্যোগ নেওয়া হয়। আদালতে বিএনপি চেয়ারপারসনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।

 

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধভাবে লেনদেনের অভিযোগে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট রাজধানীর তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুদক। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে সাত বছর সশ্রম কারাদন্ডাদেশ দেয় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। একই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়। একই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (ইতিমধ্যে প্রয়াত), হারিছ চৌধুরীর তখনকার একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার (প্রয়াত) একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খানের একই সাজা হয়। অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার আপিল মঞ্জুর করেছে আদালত। ফলে তার সাজা বাতিল হয়ে গেল।’ দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান বলেন, ‘জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খানের আপিল মঞ্জুর করেছে আদালত। ফলে এ দুজনও খালাস পেলেন।’

 

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির মামলায় অব্যাহতি : বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ তিনজনকে অব্যাহতি ও চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে আদালত। গতকাল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২-এর বিচারক আবু তাহের এ আদেশ দেন।

 

গতকাল মামলাটির অভিযোগ শুনানির দিন ধার্য ছিল। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের পক্ষে অব্যাহতির (ডিসচার্জ) আবেদনের শুনানি শেষ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

 

অন্য যাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, তারা হলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী।

 

বাকি চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেয় আদালত। তারা হলেন জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এস আর ওসমানী ও সাবেক পরিচালক মঈনুল আহসান, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম ও খনির কাজ পাওয়া কোম্পানির স্থানীয় এজেন্ট হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন। মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া, এম কে আনোয়ার, এম শামসুল ইসলাম, ব্যারিস্টার আমিনুল হক ও সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন মারা গেছেন। যুদ্ধাপরাধ মামলায় জামায়াতের দুই শীর্ষ নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির দন্ড কার্যকর হওয়ায় তাদের আগেই এ মামলায় অব্যাহতি দেয় আদালত।

 

দুই মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে কর ফাঁকি ও চাঁদাবাজির দুই মামলায় অব্যাহতি দিয়ে খালাসের রায় দিয়েছে আদালত। গতকাল বুধবার পৃথক দুই আদালত এ রায় দেয়। এর মধ্যে ১৬ বছর আগে ২৬ লাখ টাকার কর ফাঁকির মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক রেজাউল করিম যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে তারেক রহমানকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেন।

 

অন্যদিকে চাঁদাবাজির মামলায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ছানাউল্ল্যাহ পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে তারেক রহমানসহ আটজনকে অব্যাহতি দেন। মামলায় অন্য আসামিরা হলেন তারেক রহমানের বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ওবায়দুল্লা খন্দকার, কামরুজ্জামান, ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুল আলম, ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম শোয়েব বাশুরী ওরফে হাবলু, আজিজুল করিম তারেক ও মনিজুর রহমান ওরফে মানিক।

 

গত ৫ নভেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তারেক রহমানসহ আটজনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো. সাজ্জাদ হোসেন। ২০০৭ সালের ৯ এপ্রিল তারেক রহমানসহ আটজনকে আসামি করে শাহবাগ থানায় এ মামলাটি করেন খায়রুল বাশার।

 

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ১৯৯৭ সালে মামলার বাদীর কোম্পানি আব্দুল মোনেম লিমিটেড যমুনা সেতু সংযোগ সড়ক প্রকল্পের আওতায় ২৬৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকার কাজ পায়। কাজটি দুই ভাগে সম্পন্ন করা হয়। ২০০১ সালে ওই কাজের কার্যাদেশ পাওয়ার জন্য চেষ্টাকালে তারেক রহমানের বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনসহ অন্যরা তাদের ৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। পরে বাদী জীবন রক্ষার্থে চাঁদার টাকা কয়েক কিস্তিতে পরিশোধ করতে রাজি হন। ওই বছরের ৩০ অক্টোবর থেকে ২০০২ সালের ১৫ জুন পর্যন্ত কয়েক দফায় মোট ৫ কোটি টাকা চাঁদা বাবদ গিয়াস উদ্দিন আল মামুন বাদীর কোম্পানির প্রধান কার্যালয় থেকে নিয়ে যান। সেতুর দ্বিতীয় দফার কাজের সময় ফের কয়েক দফায় মোট ৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা আসামি গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ও তার সঙ্গীরা জোরপূর্বক আদায় করেন।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

কিছু কিছু দল বাংলাদেশকে মৃত্যুপুরী বানাচ্ছেঃ -মোমিন মেহেদী

error: Content is protected !!

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা

সাজা থেকে খালাস পেলেন খালেদা জিয়া

আপডেট টাইম : ০৭:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
সময়ের প্রত্যাশা ডেস্ক রিপোর্ট :

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছর কারাদন্ড থেকে খালাস পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এ রায়ের বিরুদ্ধে তার করা আপিল মঞ্জুর করে গতকাল বুধবার এ রায় দেয় বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

 

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এ মামলায় গত ২০ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসনের আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। এর আগে ৩ নভেম্বর আপিল শুনানির জন্য পেপারবুক (মামলার সব বৃত্তান্ত) তৈরি করতে হাইকোর্টের অনুমতি নিয়েছিলেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

 

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতির আদেশে জিয়া অনফানেজ ট্রাস্ট মামলা ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা মওকুফ করা হয়। ইতিমধ্যে অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য পেপারবুক প্রস্তুতের অনুমতি নেওয়া হয়েছে হাইকোর্ট থেকে। দুই মামলায় সাজা মওকুফের পরও আপিল শুনানির যুক্তি হিসেবে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তখন বলেছিলেন, ‘সাজা মওকুফে ক্ষমার কথা বলা আছে। কিন্তু বিএনপি চেয়ারপারসন কোনো অপরাধ করেননি। তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তিনি আইনিভাবেই মামলা মোকাবিলা করে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চান।’

 

এরই ধারাবাহিকতায় আপিল শুনানির এ উদ্যোগ নেওয়া হয়। আদালতে বিএনপি চেয়ারপারসনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।

 

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধভাবে লেনদেনের অভিযোগে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট রাজধানীর তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুদক। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে সাত বছর সশ্রম কারাদন্ডাদেশ দেয় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। একই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়। একই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (ইতিমধ্যে প্রয়াত), হারিছ চৌধুরীর তখনকার একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার (প্রয়াত) একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খানের একই সাজা হয়। অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার আপিল মঞ্জুর করেছে আদালত। ফলে তার সাজা বাতিল হয়ে গেল।’ দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান বলেন, ‘জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খানের আপিল মঞ্জুর করেছে আদালত। ফলে এ দুজনও খালাস পেলেন।’

 

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির মামলায় অব্যাহতি : বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ তিনজনকে অব্যাহতি ও চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে আদালত। গতকাল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২-এর বিচারক আবু তাহের এ আদেশ দেন।

 

গতকাল মামলাটির অভিযোগ শুনানির দিন ধার্য ছিল। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের পক্ষে অব্যাহতির (ডিসচার্জ) আবেদনের শুনানি শেষ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

 

অন্য যাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, তারা হলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী।

 

বাকি চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেয় আদালত। তারা হলেন জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এস আর ওসমানী ও সাবেক পরিচালক মঈনুল আহসান, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম ও খনির কাজ পাওয়া কোম্পানির স্থানীয় এজেন্ট হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন। মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া, এম কে আনোয়ার, এম শামসুল ইসলাম, ব্যারিস্টার আমিনুল হক ও সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন মারা গেছেন। যুদ্ধাপরাধ মামলায় জামায়াতের দুই শীর্ষ নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির দন্ড কার্যকর হওয়ায় তাদের আগেই এ মামলায় অব্যাহতি দেয় আদালত।

 

দুই মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে কর ফাঁকি ও চাঁদাবাজির দুই মামলায় অব্যাহতি দিয়ে খালাসের রায় দিয়েছে আদালত। গতকাল বুধবার পৃথক দুই আদালত এ রায় দেয়। এর মধ্যে ১৬ বছর আগে ২৬ লাখ টাকার কর ফাঁকির মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক রেজাউল করিম যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে তারেক রহমানকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেন।

 

অন্যদিকে চাঁদাবাজির মামলায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ছানাউল্ল্যাহ পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে তারেক রহমানসহ আটজনকে অব্যাহতি দেন। মামলায় অন্য আসামিরা হলেন তারেক রহমানের বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ওবায়দুল্লা খন্দকার, কামরুজ্জামান, ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুল আলম, ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম শোয়েব বাশুরী ওরফে হাবলু, আজিজুল করিম তারেক ও মনিজুর রহমান ওরফে মানিক।

 

গত ৫ নভেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তারেক রহমানসহ আটজনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো. সাজ্জাদ হোসেন। ২০০৭ সালের ৯ এপ্রিল তারেক রহমানসহ আটজনকে আসামি করে শাহবাগ থানায় এ মামলাটি করেন খায়রুল বাশার।

 

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ১৯৯৭ সালে মামলার বাদীর কোম্পানি আব্দুল মোনেম লিমিটেড যমুনা সেতু সংযোগ সড়ক প্রকল্পের আওতায় ২৬৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকার কাজ পায়। কাজটি দুই ভাগে সম্পন্ন করা হয়। ২০০১ সালে ওই কাজের কার্যাদেশ পাওয়ার জন্য চেষ্টাকালে তারেক রহমানের বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনসহ অন্যরা তাদের ৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। পরে বাদী জীবন রক্ষার্থে চাঁদার টাকা কয়েক কিস্তিতে পরিশোধ করতে রাজি হন। ওই বছরের ৩০ অক্টোবর থেকে ২০০২ সালের ১৫ জুন পর্যন্ত কয়েক দফায় মোট ৫ কোটি টাকা চাঁদা বাবদ গিয়াস উদ্দিন আল মামুন বাদীর কোম্পানির প্রধান কার্যালয় থেকে নিয়ে যান। সেতুর দ্বিতীয় দফার কাজের সময় ফের কয়েক দফায় মোট ৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা আসামি গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ও তার সঙ্গীরা জোরপূর্বক আদায় করেন।


প্রিন্ট