মোঃ জিয়াউর রহমানঃ
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আল্লারদর্গা এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় কয়েক হাজার বাসিন্দা। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন আল্লারদর্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একই চত্বরে অবস্থিত বেসরকারি ট্রেসল ইংলিশ ভার্সন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। দুই প্রতিষ্ঠানের প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে। ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে আসা জনগণও শিকার হচ্ছেন দুর্ভোগের।
আল্লারদর্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠ এবং নিচতলার সব শ্রেণিকক্ষ পানিতে তলিয়ে গেছে। শ্রেণিকক্ষ ও বারান্দায় জমে থাকা পানিতে পচা আবর্জনা ভাসছে। তীব্র দুর্গন্ধে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে বসা দুঃসহ হয়ে উঠেছে। ফলে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ বিদ্যালয় দুটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চারপাশের বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন পানি জমে থাকার কারণে একাধিক শিক্ষার্থী চর্মরোগসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছে।
এ বিষয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী পিয়াস বলেন, ‘পানির মধ্যে হেঁটে স্কুলে আসতে হয়, আবার সেভাবেই বাড়ি ফিরতে হয়। এতে হাতে-পায়ে চর্মরোগ হয়েছে। অনেকেই স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানিম জানায়, বিদ্যালয়ে পানি জমে থাকায় ঠিকমতো ক্লাস হচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করেছেন।
এ বিষয়ে আল্লারদর্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুল হাসান বলেন, ‘প্রতি বছরই বর্ষায় কিছুটা জলাবদ্ধতা হয়। তবে এবার পরিস্থিতি ভয়াবহ। যদি দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করা হয়, তাহলে বেশ কয়েকদিন শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ রাখতে হতে পারে। আপাতত বুধবার থেকে বিদ্যালয় ছুটি দেওয়া হয়েছে। আগামী রোববার থেকে ক্লাস শুরুর চেষ্টা করবো।
হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম চৌধুরী বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে একাধিকবার উপজেলা সমন্বয় সভায় বলেছি। কিন্তু এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমার ইউনিয়ন পরিষদসহ দুটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এই দুর্ভোগের মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে। আজ দুটি বিদ্যালয়ই ছুটি দিয়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জলাবদ্ধতার বিষয়ে জানতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ফোনে পাওয়া না গেলেও অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার কামাল হোসেন বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যালয় দুটি পরিদর্শন করেছেন। দ্রুত ব্যবস্থা বলে তিনি আশ্বাস দেন।
এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল হাই সিদ্দিকী।
প্রিন্ট