আনিসুর রহমান:
নাটোরের বাগাতিপাড়ার দরিদ্র কৃষক সোহেল রানার একমাত্র গাভী বিষাক্ত ঘাস খেয়ে মারা যাওয়ার অভিযোগে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গাভীটি চার মাসের গর্ভবতী ছিল। ফলে শুধু গাভী নয়, সম্ভাব্য বাছুরসহ প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন তিনি।
জামনগর দোবিলা এলাকার ভুক্তভোগী সোহেল রানা অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষ প্রভাবশালীদের নির্দেশে তাঁর লাগানো নেপিয়ার ঘাসে বিষ প্রয়োগ করা হয়। ওই ঘাস খেয়ে ১৯ আগস্ট অসুস্থ হয়ে পড়ে গাভীটি। তিন দিন চিকিৎসার পর ২২ আগস্ট মারা যায় প্রাণীটি।
ওইদিন রাতেই সোহেল রানা তিনজনকে আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
বাগাতিপাড়া মডেল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, অভিযোগ পেয়েছেন এবং আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবু হায়দার বলেন, “গাভীর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে এলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।”
এদিকে অভিযুক্ত লুৎফর আলী স্বীকার করেন, জমির মালিক মেহেরুন্নেসার নির্দেশে ঘাসমারা ওষুধ প্রয়োগের জন্য তিনি লোক ঠিক করেছিলেন।
স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান গোলাম রাব্বানীও স্বীকার করে বলেন, প্রাথমিক ধারণা বিষ প্রয়োগকৃত ঘাস খাওয়ার কারণে গাভীটির মৃত্যু হয়েছে এবং সোহেল রানা বড় ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা চলছে। স্থানীয়রা বলছেন, গরুর ময়নাতদন্ত আমাদের এলাকায় সচরাচর দেখা যায় না, তাই এবার প্রাণিসম্পদ বিভাগের এই পদক্ষেপ বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।
আইনজীবীদের মতে, এ রিপোর্ট মামলার প্রমাণ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সোহেল রানার হতাশ কণ্ঠে বক্তব্য— “যা গেল তা আর ফেরত পাব না। ক্ষতিপূরণের কেউ নেই। এখন শুধু চাই, অন্যায়টা যেন বিচার পায়।”
প্রিন্ট