রাশিদুল ইসলাম রাশেদঃ
নাটোরের লালপুরে দেশের প্রাচীনতম চিনিকল নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে (নবেসুমি) বস্তা ছিদ্র করে সার চুরির ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মিলের গোডাউন গেটে বস্তা থেকে সার চুরির ৪২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
জানা গেছে, প্রতিবছর কৃষি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত ইউরিয়া, টিএসপি ও এমওপি সার সুগার মিল জোনে আখ উৎপাদনের জন্য আখ চাষীদের মাঝে ঋণ হিসেবে বিতরণ করা হয়। এবছরও মিল জোন এলাকায় ৫ হাজার ৭০০ আখ চাষীর মাঝে ৫ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন সার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি ঈশ্বরদী সার গুদাম থেকে ট্রলিতে করে এমওপি সার নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের গুদামে আনা হয়। সেই সার গুদামে স্থানান্তরের সময় হুক দিয়ে বস্তা ছিদ্র করে প্রতি বস্তা থেকে ৩/৪ কেজি সার চুরি করে নেয় কর্মরত শ্রমিকরা। ওজনে কম থাকা সেই বস্তার সার মিলের ২২টি কেন্দ্রে আখ চাষীদের ঋণে বিতরণ করা হচ্ছে।
আখ চাষীদের অভিযোগ, তারা সুগার মিল থেকে ঋণের মাধ্যমে সার ক্রয় করেন। ফলে আখ উৎপাদন করে মিলে আখ সরবরাহ করে টাকা পরিশোধ করতে হয়। প্রতি ৫০ কেজির বস্তায় ৪/৫ কেজি করে সার কম থাকে। ঋণের মাধ্যমে সার নেওয়ায় বস্তায় সার কম থাকলেও কিছু বলার থাকে না। আর এমন ঘটনা প্রতিবছরই হয়ে থাকে। তবে এসব ঘটনার সাথে চিনিকলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জড়িত থাকায় এর সমাধান মেলে না।
নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের আখচাষী সমিতির সভাপতি ও বাংলাদেশ ইউনিয়ন জাতীয় কমিটির সভাপতি মোঃ আনছার আলী দুলাল সার চুরির ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
এ বিষয়ে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফরিদ হোসেন ভূইয়া বলেন, এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তদন্ত কমিটির প্রধান উপ মহাব্যবস্থাপক (হিসাব) হিরণ্ময় বিশ্বাস বলেন, ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের থেকে লিখিত জবানবন্দী নেওয়া হচ্ছে এবং এ ঘটনায় জড়িত শ্রমিককে চিহ্নিত করে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) তাকে জবানবন্দীর জন্য ডাকা হয়েছে। দ্রুত তদন্ত কাজ শেষ হবে বলে তিনি আশা করেন।
প্রিন্ট