সময়ের প্রত্যাশা ডেস্ক রিপোর্ট
রাজশাহীর তানোর উপজেলার বাধাইড় ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গোয়ালপাড়া গ্রামে তিন ফসলি জমিতে গড়ে উঠেছে কেআরবি ইট ভাটা। এখানে ফসলি জমির উপরের উর্বরা মাটি (টপ সয়েল) সংগ্রহ করে ইট তৈরি করা হচ্ছে, যা খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। ইট ভাটা মালিকরা পরিবেশ অধিদপ্তরে মাটির উৎস নিয়ে অঙ্গীকারনামা দাখিল করলেও বাস্তবে তাদের অনেকেই এই অঙ্গীকার পালন করেননি। তারা পতিত জলাভূমির পরিবর্তে কৃষি জমির উর্বরা মাটি কেটে ভাটায় নিয়ে যাচ্ছে, ফলে প্রতিবছর কৃষি জমির পরিমাণ কমছে এবং খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে।
স্থানীয় কৃষি বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, কৃষি জমির টপ সয়েল একবার সরে গেলে তা পুনরায় কৃষি উপযোগী করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদে খাদ্য উৎপাদন বিপর্যস্ত হতে পারে। যদিও এখনো আবাদি জমির টপ সয়েল হারানোর ক্ষতিকর প্রভাব দৃশ্যমান হচ্ছে না, তবে ভবিষ্যতের জন্য এটি একটি অশনি সংকেত।
স্থানীয়দের মতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সুন্দরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রফিকুল ইসলাম ও রামচন্দ্রপুর গ্রামের হাজী আবুল কালাম আজাদ অবৈধভাবে এই ইট ভাটা চালাচ্ছেন। তারা এক্সক্যাভেটর দিয়ে কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে ট্রাক্টরের মাধ্যমে ভাটায় নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি ট্রাক্টর মাটি ৩০০ টাকায় কিনে তারা এক হাজার থেকে ১২শ টাকায় বিক্রি করছে।
এদিকে, ইট ভাটায় কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে, যার কারণে পরিবেশে ব্যাপক ধোঁয়া সৃষ্টি হচ্ছে। এতে একদিকে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, অন্যদিকে উপজেলায় বনভূমির পরিমাণ কমছে। এ নিয়ে স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন যে, উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তেমন কোনো তদারকি নেই। পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী, কালো ধোঁয়া নির্গত হয় এমন ইট ভাটা স্থাপন করা যাবে না এবং কাঠ পোড়ানো যাবে না, কিন্তু তা সত্ত্বেও এই নিয়ম লঙ্ঘন করা হচ্ছে।
ভাটা মালিক হাজী আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সারাদেশে যেভাবে ইট ভাটা চলছে, তারাও সেভাবেই ভাটা চালাচ্ছেন, তাই এর মধ্যে কোনো সমস্যা নেই। তবে রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জানিয়েছেন, তারা শিগগিরই মাটির উৎস নিয়ে ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
প্রিন্ট