নুরুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার
ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, অবিলম্বে ‘প্রোক্লেমেশন অফ জুলাই রেভ্যূলিউশন’ ঘোষণা সরকারকে দিতেই হবে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে যেভাবে শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে ঠিক সেইভাবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করতে হবে। আগে বিচার হবে সংস্কার হবে এরপরে নির্বাচন। তার আগে কোনভাবেই নির্বাচন দেয়া যাবে না।
ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার সম্পূর্ণ বিলোপ, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বিনির্মাণ এবং ‘প্রোক্লামেশন অফ জুলাই’ রেগুলেশন এর জন-আকাঙ্ক্ষা অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে এ ছাত্র সমাবেশে বক্তারা একথা বলেন।
শহরের রাজেন্দ্র কলেজের মাঠে সোমবার (০৬ জানুয়ারি) বিকাল ৪টার দিকে সমাবেশ শুরু হয়।
এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, গত দেড় দশক ধরে খুনি হাসিনা আমাদের দেশের রাজনৈতিক কাঠামোকে ভেঙে দিয়েছে। আমাদের দেশটাকে নেতৃত্ব শূন্যতার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তিনি বলেন, আগস্টের ৬ তারিখের পর আজ জানুয়ারির ৬ তারিখ পর্যন্ত কোন দৃশ্যমান বিচার আমরা দেখতে পাইনি। ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকান্ডের বিচার হয় নাই। ২০১৪ সালের শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ডের কোন বিচার হয় নাই। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে যেভাবে নির্বাচনে কারচুপি করা হয়েছে সেগুলির এখন পর্যন্ত কোন বিচার হয় নাই। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবশ্যই অবশ্যই এই বিচারগুলো সম্পন্ন করতে হবে।
সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, বাংলাদেশের অবশ্যই একটি যৌক্তিক সময় নির্বাচন হবে। তবে তার পূর্বে এই খুনি হাসিনা আমাদের এই দেশের সিস্টেম গুলোকে যেই ধ্বংস করে দিয়েছে, সেই সিস্টেমগুলোকে সংস্কার করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা একটি জুলাই অভ্যূত্থানের ঘোষণাপত্র দিয়েছি। সংবিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় জুলাই অভ্যূত্থানের স্বীকৃতি থাকতে হবে। সেই ঘোষণাপত্রে জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের কথা স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকতে হবে।
কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সেল সম্পাদক জাহিদ হাসানের সঞ্চালনায় ছাত্র সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য দেন সোহেল রানা।
অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য দেন হাসিব-আল ইসলাম, রিফাত রশীদ, আশরেফা, রাজেন্দ্র কলেজ শাখার প্রধান কাজী রিয়াজ, ফারহান আহসান অর্ণব, নাবিলা তালুকদার, তাহসিন হাসান দ্বীন, মাহমুদুল হাসান ওয়ালিদ, সানজিদা রহমান সমতা, জেবা তাহসিন, শাহ মো: আরাফাত প্রমুখ।
সমাবেশ শুরুর পর মঞ্চ থেকে নেমে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত ছাত্র আন্দোলনে ফরিদপুরের ৮ জন শহীদ ও আহতদের এসে খোঁজখবর নেন হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সাজিদ আলমসহ অন্যান্য কেন্দ্র নেতৃবৃন্দ।
ছাত্র সমাবেশ উপলক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী সমর্থকরা ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা ব্যানার ও প্লাকার্ড নিয়ে মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে যোগ দেয়।
প্রিন্ট