কুষ্টিয়ায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের উপেক্ষা করে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার অভিযোগে উঠেছে। এই ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন পদবঞ্চিত নেতারা।
বুধবার (৬ নভেম্বর) কুষ্টিয়া পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজারো নেতাকর্মী অংশ নেন। পরে তারা পাবলিক লাইব্রেরি মাঠ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মজমপুরে সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানান। এ সময় বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দলসহ বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পদবঞ্চিত নেতারা অভিযোগ করেন, কুষ্টিয়া জেলার তৃণমূলের ত্যাগী, নির্যাতিত, পরীক্ষিত ও যোগ্য নেতাদের বাদ দিয়ে অর্থের বিনিময়ে জেলা বিএনপির মনগড়া ‘পকেট কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। তারা বলেন, নবগঠিত এই কমিটি বিএনপির ত্যাগী নেতারা প্রত্যাখ্যান করেছেন। নেতারা হুঁশিয়ারি দেন, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বিতর্কিত একতরফা আহ্বায়ক কমিটি বাতিল না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
তারা আরও দাবি করেন, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহম্মেদ রুমি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনসহ জেলার ত্যাগী, নির্যাতিত, পরীক্ষিত এবং যোগ্য নেতাদের বাদ দিয়ে এই পকেট কমিটি গঠন করা হয়েছে। নেতারা অবিলম্বে এই কমিটি বাতিল করে যোগ্যদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানান।
এ সময় কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামিম উল হাসান অপু, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজল মাজমাদার, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান হাবলু মোল্লা, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বাচ্চুসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
তবে পদবঞ্চিতদের অভিযোগ অস্বীকার করে নবগঠিত জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার দাবি করেন, যারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ-পদবী পেয়েছেন, তাদের জেলা কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ৩১ সদস্যবিশিষ্ট এই আহ্বায়ক কমিটি কেন্দ্রীয় নেতারা নির্বাচিত করেছেন এবং জেলা পর্যায়ের নেতাদের সেখানে কোনো ভূমিকা ছিল না।
প্রসঙ্গত, ৪ নভেম্বর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এতে কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি কুতুব উদ্দিন আহমেদকে আহ্বায়ক এবং কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকারকে সদস্য সচিব করে ৩১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।
এর আগে, ১২ সেপ্টেম্বর জেলা বিএনপির পূর্ববর্তী কমিটি বাতিল করে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। এর আগে, ২০১৯ সালের ৮ মে সৈয়দ মেহেদী আহম্মেদ রুমি ও অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করে ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট জেলা বিএনপির সর্বশেষ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
প্রিন্ট