নাটোরের লালপুরে শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির আশায় আমবস্যা রাতে ও দিনে কলা খাচ্ছেন হাঁপানি ও অন্যান্য রোগীরা। কথিত কবিরাজরা প্রতিটি কলা চার টুকরা করে প্রতিজনকে এক টুকরা করে খাওয়াচ্ছেন এবং প্রতি টুকরা কলার দাম রাখা হয়েছে ৫০ টাকা, অর্থাৎ মোট কলার দাম ধার্য করা হয়েছে ২০০ টাকা।
নাটোরের লালপুরে দীর্ঘদিন ধরে কালীপূজার দিন অমাবস্যার সন্ধ্যা থেকে পরের দিন সকাল ১০টা পর্যন্ত এই ‘কলাচিকিৎসা’ দিয়ে আসছেন কয়েকজন কবিরাজ। তবে, প্রশাসনিক ঝামেলা এড়াতে এবার আবুল কালামের বাড়িতে গোপনে কথিত কবিরাজ মিজানুর রহমান এই চিকিৎসা দিচ্ছিলেন। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কলা চিকিৎসা বন্ধ করেন লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দেখা যায়, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগ থেকে মুক্তির আশায় এলাকার কয়েকশ মানুষ মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, ব্যাটারি চালিত রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশা নিয়ে আবুল কালাম বিশ্বাসের বাড়িতে ভিড় করেছেন। গত বছরও মিজানুর রহমান প্রশাসনিক চাপের কারণে পালিয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু এবার তিনি গোপনে এই চিকিৎসা চালাচ্ছিলেন।
স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করলে কবিরাজ ও তার অনুসারীরা তাদের বাধা দেন এবং খারাপ আচরণ করেন। পরে প্রশাসন ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে কবিরাজরা পালিয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কবিরাজ মিজানুর রহমান কয়েক বছর আগে পারুল বেগম নামক এক মহিলার কাছ থেকে এই চিকিৎসা শিখেছিলেন। তবে প্রশাসনিক বাধার কারণে গত চার বছর ধরে পারুল বেগম কলা চিকিৎসা করতে পারেননি।
এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক সুরুজ্জামান শামীম বলেন, “কলার সঙ্গে গাছগাছড়া খেলে শ্বাসকষ্ট রোগ ভালো হয়—এমন তথ্য চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্মত নয়।”
গৌরীপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম আতিক হাসান বলেন, “অমাবশ্যার রাতকে কেন্দ্র করে কলা চিকিৎসা সম্পূর্ণ কুসংস্কার।”
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, “কথিত কলা চিকিৎসার খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগে কবিরাজরা পালিয়ে যায়। গোপনে যদি আবারো কোন অপচেষ্টা করা হয়, তবে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
প্রিন্ট