ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌরসভার রেলস্টেশন এলাকায় রেলের জমিতে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ প্রক্রিয়ায় বাধা দেয়ার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের রাজবাড়ী অঞ্চলের ১৫ নং কাচারী (ভূ-সম্পত্তি বিভাগ) মো. বাবু বাদী হয়ে শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) অজ্ঞাতনামা ৫০/৬০ জনসহ ৬ জনের নামোল্লেখপূর্বক মামলা করেছেন। নামোল্লিখিত আসামীরা হলেন- বোয়ালমারী পৌরসভার শিবপুর গ্রামের মো. ইয়াছিন বাবু, বিপ্লব মীর, মো. জিয়াউর রহমান, মামুনুর রশীদ জিল্লু, তুষার ও সুজন শেখ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বোয়ালমারী স্টেশন ও আশপাশ এলাকাসহ রেলওয়ের মালিকানাধীন ভূমিতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। স্টেশন এলাকার উচ্ছেদ শেষে বোয়ালমারী রেলস্টেশন এলাকার উত্তর রেলগেট সংলগ্ন রেল লাইনের উভয় পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কাজ চলাকালীন বেলা দেড়টার সময় ১ নম্বর আসামী মো. ইয়াছিন বাবুর নেতৃত্বে ও হুকুমে উক্ত আসামীগণসহ অজ্ঞাতনামা আসামীগন আক্রমণ করে। হাতে পাথর, ইট, হাসুয়া, কাচি, রামদা, লাঠি, কাঠের বাঠাম, লোহার পাইপ, হাতুড়ি, শাবল ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কর্তৃক নিয়োগকৃত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বোয়ালমারী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)র সামনে সরকারি কাজে বাধা প্রদান করে। আসামীরা বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপর অতর্কিতে আক্রমণ করে রেলওয়ে রাজবাড়ী অঞ্চলের ফিল্ড কানুনগো মো. জিয়াউল হক, পাকশী অঞ্চলের বিভাগীয় কর্মকর্তা আব্দুর রহিম ও অফিস সহকারী শেখ জাবের আলীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি আঘাত করে জখম করে এবং গলা চেপে শ্বাসরোধে হত্যা করার চেষ্টা করে। আহত জিয়াউল হক, আব্দুর রহিম এবং শেখ জাবের আলী রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন।
এ ব্যাপারে সরকারি কাজে বাধা প্রদানসহ বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের জীবননাশের উদ্দেশ্যে অতর্কিত হামলা করে আহত করায় প্রচলিত আইনে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য এজাহারে উল্লেখ করেছেন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৭ অক্টোবর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেন বাংলাদেশ রেলওয়ে কতৃপক্ষ। তবে ১২/১৫ টি টিনের ঘর উচ্ছেদের পর দুপুর দেড়টার দিকে পৌরসভার শিবপুর রেলগেট এলাকায় দোকান ও বাড়িঘর উচ্ছেদ করতে গেলে স্থানীয় লোকজন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে বাধা দেয়। স্থানীয়দের বাধার মুখে উচ্ছেদ কার্যক্রম পন্ড হয়ে যায়। পরে রেল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন সেখান থেকে ফিরে যেতে বাধ্য হয়।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দেওয়ান শামীম খান বলেন, মামলার নথিপত্র এখনও হাতে পাওয়া যায়নি। নথিপত্র হাতে পেলেই তদন্ত শুরু হবে এবং আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলবে।
বোয়ালমারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মজিবর রহমান বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর শুক্রবার রাতে মামলা হয়েছে। মামলার পরবর্তী কার্যক্রম দ্রুতই শুরু হবে। এখন পর্যন্ত মামলার কোন আসামী গ্রেপ্তার হয়নি।
প্রিন্ট