ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং অ্যালেক্স ফার্গুসন— এই দুই নাম একে অপরের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। ক্লাবটির সকল গৌরবের পেছনে রয়েছে ফার্গুসনের অমলিন অবদান। কোচের পদ থেকে বিদায় নিলেও কিংবদন্তি এই স্কটিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ক্লাবটি বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে অন্যতম ছিল তাঁকে ইউনাইটেডের বৈশ্বিক দূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়া।
তবে, সাম্প্রতিক সময়ে ইউনাইটেড ব্যয় সংকোচনের অংশ হিসেবে ফার্গুসনকে এই পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে প্রতিবছর ক্লাবটি ২০ লাখ পাউন্ড বাঁচাবে। ক্লাব কর্তৃপক্ষ ফার্গুসনের জন্য ম্যাচের সময় দেওয়া কিছু বিশেষ সুবিধাও বন্ধ করে দিয়েছে। এর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক তারকা ফুটবলার এরিক ক্যান্টোনা এই সিদ্ধান্তকে ‘কলঙ্কজনক’ বলে অভিহিত করেছেন।
১৯৮৬ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ২৭ বছর ধরে ইউনাইটেডের কোচ ছিলেন ফার্গুসন। তাঁর অধীনে ক্লাবটি ১৩টি প্রিমিয়ার লিগসহ মোট ৩৮টি ট্রফি জিতেছে। তাঁর সম্মানে ওল্ড ট্রাফোর্ডে একটি গ্যালারি নির্মিত হয়েছে এবং ক্লাবের পরিচালনার দায়িত্বেও তিনি ছিলেন। ফার্গুসনের জন্য ম্যাচের সময় ডিরেক্টর বক্সে একটি বিশেষ টেবিল বরাদ্দ ছিল, এবং তিনি ম্যাচের পর ইউনাইটেডের ড্রেসিং রুমে যাওয়ার সুযোগও পেতেন।
কিন্তু ক্লাবের নতুন মালিকপক্ষ গত বছর থেকে ব্যয় সংকোচন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে ২৫০ জন কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়, যাদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন দীর্ঘদিনের কর্মী। এই অবস্থায় ফার্গুসনের বৈশ্বিক দূত পদও পর্যালোচনা করা হয়। নতুন মালিক স্যার জিম র্যাডক্লিফ নিজেই ফার্গুসনের সঙ্গে কথা বলেন এবং বন্ধুত্বপূর্ণভাবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন।
তবে, ক্যান্টোনার মতে, ফার্গুসনকে ‘আজীবনের বস’ হিসেবে সম্মানিত করা উচিত। তিনি ইনস্টাগ্রামে ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, “স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনকে তাঁর মৃত্যুর আগপর্যন্ত ক্লাবে যা ইচ্ছা তা করতে দেওয়া উচিত। এত অসম্মান! রীতিমতো কলঙ্কজনক।”
এখন ফার্গুসন অতিথিদের সঙ্গে ম্যাচ দেখা এবং ড্রেসিংরুমে যাওয়ার সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। এই পরিবর্তনের কারণে ক্লাবের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, বিশেষ করে যখন ইউনাইটেড এক বিবৃতিতে জানায়, গত বছর তাদের লোকসান হয়েছে ১১ কোটি ৩০ লাখ পাউন্ড।
প্রিন্ট