ঢাকা , শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন Logo দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের ফুলবাড়ী উপজেলায় মতবিনিময় সভা Logo তানোরে যাতায়াতের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ Logo মাগুরাতে এসএমসি’র পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত Logo রূপগঞ্জে সাংবাদিকের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন Logo অর্থনৈতিক শুমারি উপলক্ষে স্থায়ী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত Logo প্রত্যন্ত গ্রামে নারী ফুটবল প্রীতি ম্যাচ উপভোগ করলেন হাজারো দর্শক Logo বাঘায় উপজেলা শুমারি স্থায়ী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত Logo কুষ্টিয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশনের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা Logo ফরিদপুরে দুই দিনব্যাপী তথ্য মেলা অনুষ্ঠিত
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ঠাকুরগাঁও ডিসি অফিসের কর্মচারী তরিকুলের বিরুদ্ধে দূর্নীতিসহ নানা অভিযোগ

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি হুকুম দখল ও গোপনীয় শাখা’র কর্মচারী তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অসদাচরণ, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর (আদিবাসী) রনজিৎ তিগ্যা সহ স্থানীয়রা তাঁর দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।

 

জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের (ডিসি) অফিস সহায়কের চাকুরী করে অঢেল সম্পদের মালিক এবং কয়েক বছরে কয়েক কোটির টাকার মালিক বনে গেছেন তরিকুল ইসলাম নামে এক কর্মচারী। যেন হাতে ‘আলাদীনের চেরাগ’ পেয়েছেন অবস্থা। দীর্ঘ দিন একই প্রতিষ্ঠানে থাকার সুবাদে একচেটিয়া ক্ষমতার অপব্যবহার এবং নিজ অফিসের সিনিয়র কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে প্রতিনিয়তই করছেন অসদাচরণ। ঘুষ ছাড়া করেন না কোন কাজ।

 

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের ছত্রছায়া ও দলীয় নাম ব্যবহার করে অপকর্ম, দুর্নীতি করে গড়ে তুলেছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। তাঁর দাপটে সবসময় জিম্মি হয়ে থাকেন অফিসের অন্যান্য কর্মচারীরাও। প্রতিবাদ করলেই হুমকি সহ নানান ভয়ভীতি দেখান বলে অভিযোগ করেন অনেকেই।

 

লিখিত অভিযোগের সূত্রে জানা গেছে, গ্রামের সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে রেকর্ড রুমের জাবেদা নকল অল্প সময়ে দেয়ার কথা বলে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। অফিসে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে সিএর অজান্তে তাঁর কম্পিউটারে অনলাইনে আবেদন করে এবং রেকর্ড রুমের যোগসাজসে হেল্পডেক্সে নকল সরবরাহ না করেই তার কাছে রেখে দেন।

 

পরবর্তীতে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে জাবেদা নকল সরবরাহ করেন কর্মচারী তরিকুল ইসলাম। এতে করে বছরে প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ টাকা অবৈধভাবে তাঁর পকেটে ঢোকেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) আদালতে আর.এম শাখার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ খারিজ বাতিলের আপীল করলে উভয় পক্ষের কাছে অর্থ হাতিয়ে নেন এই কর্মচারী। অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, ঢাকায় দুই কোটি টাকা মূল্যে স্ত্রী ও শাশুড়ীর নামে দুইটি ফ্ল্যাট কিনেন। শহরের কলেজপাড়ায় তাঁর বসবাড়ি ৮০ লাখ টাকা ব্যায়ে মেরামত ও জিলা পরিষদের পেছনে উপজাতিদের (আদিবাসী) ১৩ শতাংশ জমি ১ কোটি ৫৬ লাখ টাকায় কিনেন।

 

জেলা প্রশাসকের নাম ভাঙিয়ে আদিবাসীদের জমি কেনা-বেচার জন্য হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা। প্রায় অর্ধকোটি টাকায় আকচা ও কলেজ পাড়া এলাকায় তাঁর স্ত্রী-ভাইদের নামে-বেনামে কিনেছেন আবাদী জমি। এমনকি টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে পদোন্নতির পায়তারা করেছেন বলেও অভিযোগ ওঠে কর্মচারী তরিকুলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে বর্তমানে কর্মচারী তরিকুল ইসলামের সম্পত্তির পরিমান প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা।

 

এছাড়াও সুষ্ঠু তদন্ত করা হলে আরও সম্পদ বের হয়ে আসবে বলে লিখিত অভিযোগে জানানো হয়। হঠাৎ করেই এত সম্পদের মালিক হওয়ায় শহরজুড়ে চলছে আলোচনা ও সমালোচনা। সামান্য বেতনের এক কর্মচারীর কিভাবে এতো কোটি টাকার সম্পদ করলো তাঁর খতিয়ে দেখতে দুদক সহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন স্থানীয়রা। তাঁরা জানান, এক কর্মচারী যদি এতো সম্পদের মালিক হয় তাহলে অন্যান্য কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের এর চেয়ে দিগুন সম্পদ গড়ে তুলবে এটাই স্বাভাবিক।

 

অভিযোগের বিষয়ে তরিকুল ইসলাম জানান, তাঁর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের কোনটারই ভিত্তি নেই। কিছু লোক তাঁর বিরুদ্ধে উল্টা-পাল্টা কুৎসা রটাচ্ছে বলে জানান তিনি।

 

 

এবিষয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ইশরাত ফারজানা বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। দুর্নীতি বা ক্ষমতার অপব্যবহার করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না; সে যেই হউক।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

error: Content is protected !!

ঠাকুরগাঁও ডিসি অফিসের কর্মচারী তরিকুলের বিরুদ্ধে দূর্নীতিসহ নানা অভিযোগ

আপডেট টাইম : ০২:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪
জসীমউদ্দীন ইতি, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতনিধি :

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি হুকুম দখল ও গোপনীয় শাখা’র কর্মচারী তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অসদাচরণ, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর (আদিবাসী) রনজিৎ তিগ্যা সহ স্থানীয়রা তাঁর দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।

 

জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের (ডিসি) অফিস সহায়কের চাকুরী করে অঢেল সম্পদের মালিক এবং কয়েক বছরে কয়েক কোটির টাকার মালিক বনে গেছেন তরিকুল ইসলাম নামে এক কর্মচারী। যেন হাতে ‘আলাদীনের চেরাগ’ পেয়েছেন অবস্থা। দীর্ঘ দিন একই প্রতিষ্ঠানে থাকার সুবাদে একচেটিয়া ক্ষমতার অপব্যবহার এবং নিজ অফিসের সিনিয়র কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে প্রতিনিয়তই করছেন অসদাচরণ। ঘুষ ছাড়া করেন না কোন কাজ।

 

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের ছত্রছায়া ও দলীয় নাম ব্যবহার করে অপকর্ম, দুর্নীতি করে গড়ে তুলেছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। তাঁর দাপটে সবসময় জিম্মি হয়ে থাকেন অফিসের অন্যান্য কর্মচারীরাও। প্রতিবাদ করলেই হুমকি সহ নানান ভয়ভীতি দেখান বলে অভিযোগ করেন অনেকেই।

 

লিখিত অভিযোগের সূত্রে জানা গেছে, গ্রামের সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে রেকর্ড রুমের জাবেদা নকল অল্প সময়ে দেয়ার কথা বলে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। অফিসে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে সিএর অজান্তে তাঁর কম্পিউটারে অনলাইনে আবেদন করে এবং রেকর্ড রুমের যোগসাজসে হেল্পডেক্সে নকল সরবরাহ না করেই তার কাছে রেখে দেন।

 

পরবর্তীতে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে জাবেদা নকল সরবরাহ করেন কর্মচারী তরিকুল ইসলাম। এতে করে বছরে প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ টাকা অবৈধভাবে তাঁর পকেটে ঢোকেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) আদালতে আর.এম শাখার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ খারিজ বাতিলের আপীল করলে উভয় পক্ষের কাছে অর্থ হাতিয়ে নেন এই কর্মচারী। অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, ঢাকায় দুই কোটি টাকা মূল্যে স্ত্রী ও শাশুড়ীর নামে দুইটি ফ্ল্যাট কিনেন। শহরের কলেজপাড়ায় তাঁর বসবাড়ি ৮০ লাখ টাকা ব্যায়ে মেরামত ও জিলা পরিষদের পেছনে উপজাতিদের (আদিবাসী) ১৩ শতাংশ জমি ১ কোটি ৫৬ লাখ টাকায় কিনেন।

 

জেলা প্রশাসকের নাম ভাঙিয়ে আদিবাসীদের জমি কেনা-বেচার জন্য হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা। প্রায় অর্ধকোটি টাকায় আকচা ও কলেজ পাড়া এলাকায় তাঁর স্ত্রী-ভাইদের নামে-বেনামে কিনেছেন আবাদী জমি। এমনকি টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে পদোন্নতির পায়তারা করেছেন বলেও অভিযোগ ওঠে কর্মচারী তরিকুলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে বর্তমানে কর্মচারী তরিকুল ইসলামের সম্পত্তির পরিমান প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা।

 

এছাড়াও সুষ্ঠু তদন্ত করা হলে আরও সম্পদ বের হয়ে আসবে বলে লিখিত অভিযোগে জানানো হয়। হঠাৎ করেই এত সম্পদের মালিক হওয়ায় শহরজুড়ে চলছে আলোচনা ও সমালোচনা। সামান্য বেতনের এক কর্মচারীর কিভাবে এতো কোটি টাকার সম্পদ করলো তাঁর খতিয়ে দেখতে দুদক সহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন স্থানীয়রা। তাঁরা জানান, এক কর্মচারী যদি এতো সম্পদের মালিক হয় তাহলে অন্যান্য কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের এর চেয়ে দিগুন সম্পদ গড়ে তুলবে এটাই স্বাভাবিক।

 

অভিযোগের বিষয়ে তরিকুল ইসলাম জানান, তাঁর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের কোনটারই ভিত্তি নেই। কিছু লোক তাঁর বিরুদ্ধে উল্টা-পাল্টা কুৎসা রটাচ্ছে বলে জানান তিনি।

 

 

এবিষয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ইশরাত ফারজানা বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। দুর্নীতি বা ক্ষমতার অপব্যবহার করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না; সে যেই হউক।


প্রিন্ট