ঢাকা , রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

উপদেষ্টার নির্দেশনা মানলেন না বিএমডিএ চেয়ারম্যান

আলিফ হোসেনঃ

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) সদ্য সাবেক নির্বাহী পরিচালক শফিকুল ইসলামকে দপ্তর ছাড়তে বাধ্য করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংস্থার চেয়ারম্যান ড. এম আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে ‘মনগড়া’ তদন্ত কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে।

 

বিএমডিএ পরিচালনা বোর্ডের সদস্য সাইফুল ইসলাম হীরক এই অভিযোগ তুলেছেন। সাইফুল ইসলাম হীরকের দাবি, কৃষি উপদেষ্টা ও বিএমডিএ বোর্ড সদস্য জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নির্দেশনা অনুযায়ী তাকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা ছিল। কিন্তু উপদেষ্টার সেই নির্দেশ অমান্য করে চেয়ারম্যান নিজ উদ্যোগে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।

এদিকে এই বিষয়ে চেয়ারম্যানকে ১০ এপ্রিল চিঠি দিয়েছেন হীরক। তিনি চিঠিতে লেখেন, “২৩ মার্চ নির্বাহী পরিচালকের সঙ্গে এক অনভিপ্রেত ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন কৃষি উপদেষ্টা। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আমাকে আহ্বায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠনের কথা ছিল।”

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ২ এপ্রিল চেয়ারম্যান হোয়াটসঅ্যাপে একটি সভার আমন্ত্রণ জানান। তবে পরে জানা যায়, তিনি ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য ঠাকুরগাঁও চলে যান। এরপর গত ৮ এপ্রিল হীরক জানতে পারেন, গত ৩ এপ্রিল একটি তদন্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং ১০ এপ্রিল আরেকটি সভা ডাকা হয়েছে।

অন্যদিকে এই প্রক্রিয়াকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে হীরক জানান, তিনি ১০ এপ্রিলের সভায় অংশ নেননি। পাশাপাশি, ‘তথাকথিত’ ও ‘পরিকল্পিত’ তদন্ত কমিটি বাতিল করে কৃষি উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম গত বছরের ১৪ জুলাই বিএমডিএর ইডি হিসেবে যোগ দেন। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তাকে রেশম উন্নয়ন বোর্ডে বদলি করা হয়, কিন্তু তিনি বিএমডিএ ছাড়েননি। এক মাস পর, ২৩ মার্চ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী তাকে দপ্তর ছাড়তে বাধ্য করেন।

এদিকে পরবর্তীতে শফিকুল ইসলাম মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দায়ের করেন এবং ১৩ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় ৬০ জন ব্যক্তিকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।

এ ঘটনার পর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। পাশাপাশি একজন নির্বাহী প্রকৌশলী ও একজন সহকারী প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত এবং আটজনকে শোকজ করা হয়েছে। এসব ঘটনায় বিএমডিএ-তে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। অভিযোগ উঠেছে, চেয়ারম্যানের সম্মতিতেই ইডিকে দপ্তর ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল।

এসব বিষয়ে কথা বলতে বিএমডিএ চেয়ারম্যান ড. এম আসাদুজ্জামানকে ফোন করলে তিনি পরিচয় জানার পর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন এবং পরে আর ফোন ধরেননি।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

উপদেষ্টার নির্দেশনা মানলেন না বিএমডিএ চেয়ারম্যান

আপডেট টাইম : ০৬:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫
আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি :

আলিফ হোসেনঃ

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) সদ্য সাবেক নির্বাহী পরিচালক শফিকুল ইসলামকে দপ্তর ছাড়তে বাধ্য করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংস্থার চেয়ারম্যান ড. এম আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে ‘মনগড়া’ তদন্ত কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে।

 

বিএমডিএ পরিচালনা বোর্ডের সদস্য সাইফুল ইসলাম হীরক এই অভিযোগ তুলেছেন। সাইফুল ইসলাম হীরকের দাবি, কৃষি উপদেষ্টা ও বিএমডিএ বোর্ড সদস্য জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নির্দেশনা অনুযায়ী তাকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা ছিল। কিন্তু উপদেষ্টার সেই নির্দেশ অমান্য করে চেয়ারম্যান নিজ উদ্যোগে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।

এদিকে এই বিষয়ে চেয়ারম্যানকে ১০ এপ্রিল চিঠি দিয়েছেন হীরক। তিনি চিঠিতে লেখেন, “২৩ মার্চ নির্বাহী পরিচালকের সঙ্গে এক অনভিপ্রেত ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন কৃষি উপদেষ্টা। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আমাকে আহ্বায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠনের কথা ছিল।”

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ২ এপ্রিল চেয়ারম্যান হোয়াটসঅ্যাপে একটি সভার আমন্ত্রণ জানান। তবে পরে জানা যায়, তিনি ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য ঠাকুরগাঁও চলে যান। এরপর গত ৮ এপ্রিল হীরক জানতে পারেন, গত ৩ এপ্রিল একটি তদন্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং ১০ এপ্রিল আরেকটি সভা ডাকা হয়েছে।

অন্যদিকে এই প্রক্রিয়াকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে হীরক জানান, তিনি ১০ এপ্রিলের সভায় অংশ নেননি। পাশাপাশি, ‘তথাকথিত’ ও ‘পরিকল্পিত’ তদন্ত কমিটি বাতিল করে কৃষি উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম গত বছরের ১৪ জুলাই বিএমডিএর ইডি হিসেবে যোগ দেন। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তাকে রেশম উন্নয়ন বোর্ডে বদলি করা হয়, কিন্তু তিনি বিএমডিএ ছাড়েননি। এক মাস পর, ২৩ মার্চ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী তাকে দপ্তর ছাড়তে বাধ্য করেন।

এদিকে পরবর্তীতে শফিকুল ইসলাম মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দায়ের করেন এবং ১৩ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় ৬০ জন ব্যক্তিকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।

এ ঘটনার পর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। পাশাপাশি একজন নির্বাহী প্রকৌশলী ও একজন সহকারী প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত এবং আটজনকে শোকজ করা হয়েছে। এসব ঘটনায় বিএমডিএ-তে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। অভিযোগ উঠেছে, চেয়ারম্যানের সম্মতিতেই ইডিকে দপ্তর ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল।

এসব বিষয়ে কথা বলতে বিএমডিএ চেয়ারম্যান ড. এম আসাদুজ্জামানকে ফোন করলে তিনি পরিচয় জানার পর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন এবং পরে আর ফোন ধরেননি।


প্রিন্ট