ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভাতিজীকে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে চাচাদের বিরুদ্ধে। মৃত ভাতিজী গুনবহা ইউনিয়নের দরিহরিহরনগর গ্রামে ইস্রাফিল মোল্যার মেয়ে ও সালথা উপজেলার রামকান্তপুর গ্রামে হাসিবুল সরদারের স্ত্রী। নিহতের ৮ মাসের একটি ছেলে রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের দরিহরিহরনগর গ্রামে সোমবার (১২ আগস্ট) বিকেলে ইস্রাফিল মোল্যার ছাগল বাড়ির পাশে একটি মাঠ থেকে ধান খেয়েছে সন্দেহ করে। সে ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে চাচতো ভাই শাহাদত ও তাঁর স্ত্রী ছেলে ও ভাই ভাতিজাদের নিয়ে হামলা চালিয়ে ইস্রাফিলের মেয়ে হামিদাকে এলোপাথাড়ি ভাবে মারপিট করে মেরে ফেলে এবং অন্যদের গুরুত্বর আহত করে।
নিহতের ছোট বোন অন্তরা বলেন, আমার ছোট বোন মহিমা সোমবার বিকেলে মাঠ থেকে আমাদের ছাগল আনতে যায়। এ সময় শাহাদত চাচার ছাগল পাশের একটি খেত থেকে ধান খাচ্ছিল। তখন ছোট বোন শাহাদতের স্ত্রী ভানু বেগমকে দেখিয়ে বলছিল চাচি ধান খায় আপনাদের ছাগল, আর দোষ হয় আমাদের ছাগলের। একথা বলার পরে চাচি ছোট বোনকে ছাগলের খুঁটো উঠিয়ে মারপিট করে। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় চাচা ও চাচি লোকজন এনে পরিবারের উপর হামলা চালিয়ে গুরুত্বর আহত করে এবং আমার বোন হামিদাকে ঘর থেকে টেনে লোহার রড, হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে। ঘটনাস্থল থেকে গুরুত্বর অবস্থায় বোনকে উদ্ধার করে ফরিদপুর হাসপাতালে নিয়ে যায়। বুকের হাড় ভেঙে যাওয়া ও মাথায় আঘাত লাগার কারণে আমার বোন মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল পাঁচটায় মারা যায়।
নিহতের মা রিজিয়া বেগম বলেন, আমার ৬ মেয়ে, ছেলে না থাকায় ওরা আমাদের উপর হামলা চালিয়ে চোখের সামনে মেয়েকে পিটিয়ে মেরে ফেলছে। যারা মেরেছে তারা হলো; দরিহরিহরনগর গ্রামের শাহাদত মোল্যা (৫৫), তাঁর স্ত্রী ভানু বেগম, ছেলে উজ্জল (৩০), একই গ্রামের মকসেদের ছেলে ইউনুস (৪৯), তায়েব মোল্যা (৫০), তাঁর স্ত্রী আনজিরা (৩৯), চাঁন মিয়া (৫৬), তাঁর স্ত্রী জুলেখা, ইউনুসের স্ত্রী রুবিয়া বেগম, ছেলে লাদেন মোল্যা (২২) সহ ৫-৬ জন দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়।
নিহতের স্বামী হাসিবুল সরদার বলেন, আমার স্ত্রী ও ৮ মাসের ছেলেকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে আসি। তবে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ওর চাচারা আমার স্ত্রীকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। এখন ৮ মাসের বাচ্চাকে মা ছাড়া আমি কেমনে বাঁচাবো। প্রশাসনের কাছে আমার দাবী যারা আমার স্ত্রীকে নির্মম ভাবে পিটিয়ে মেরেছে তাদের আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তির দাবী জানাই।
বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ফরিদপুর হাসপাতালে ওই মহিলা মারা গিয়েছে। কোতোয়ালী থানা লাশটি মর্গে নিয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে আমরা গিয়েছি। তবে এখনো নিহতের পরিবার মামলা দায়ের করেননি। মামলা হলে আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
প্রিন্ট