যশোরে আইনজীবী সৈয়দ কবীর হোসেন জনীর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে। বুধবার (১২ জুন) সকালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে- ১ এ মামলাটি করেছেন যশোর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের মা ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক গোলাম কবিরের আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অভিযোগের তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী রুহিন বালুজ।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, বাদী একজন বিধবা নারী। তিনি যশোর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের মা ও শিশু বিষয়ক সম্পাদিকা এবং সাবেক ইউপি সদস্য। দলীয় কর্মী হিসেবে অ্যাডভোকেট সৈয়দ কবীর হোসেন জনীর সঙ্গে বাদীর সুসম্পর্ক ছিল। জনী প্রায়ই তার বাড়িতে যেতেন। বাদীর পারিবারিক জমি সংক্রান্ত ঝামেলা থাকায় আইনগত পরামর্শ দেয়ার জন্য জনীকে অনুরোধ করেছিলেন। গত ১০ জুন সাড়ে ৮টার দিকে জনী তার বাড়িতে যান। এসময় ওই বাড়িতে কেউ ছিল না। আলোচনার এক পর্যায়ে জনী আকস্মিক তাকে জড়িয়ে ধরে গালে বুকে চুমু দেয় এবং নিতম্ব স্পর্শ করে। তখন তিনি জনীকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দেন এবং গালিগালাজ করতে থাকেন। এ সময় জনী দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে মোটরসাইকেল যোগে চলে যান। এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে কর্তৃপক্ষের পরামর্শে তিনি আদালতে এ মামলা করেছেন।
এদিকে অ্যাডভোকেট সৈয়দ কবীর হোসেন জনী বুধবার দুপুর দুইটায় প্রেসক্লাব যশোরের শহিদ সাংবাদিক আরএম সাইফুল আলম মুকুল অডিটোরিয়ামে সংবাদ সম্মেলন করে মামলার অভিযোগটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। একটি পক্ষ আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এ মামলা করেছে। অ্যাডভোকেট সৈয়দ কবীর হোসেন জনী যশোর জেলা আইনজীবীর সদস্য ও অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সম্প্রতি নারী কোর্টের পিপিকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে আমি বাদী পক্ষের আইনজীবী। এর প্রতিবাদে রাজপথে আন্দোলনও করেছি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন একজন বয়স্ক মহিলাকে দিয়ে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে নিজে আদালতে উপস্থিত থেকে মামলা করিয়েছেন। আমার নামে শ্লীলতাহানির মামলা করা হয়েছে সেটা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ওই নারীকে আমি চিনি না। তিনি আমার মাতৃসমতুল্য নারী। একটি পক্ষ আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে এ মামলা করেছে।
তিনি বলেন, আমার স্ত্রী যশোর জেনারেল হাসপাতালের ট্রেনিং মেডিকেল অফিসার। গতকাল বুধবার সকালে শহিদুল ইসলাম মিলন হাসপাতালে গিয়ে আমার স্ত্রীকে শাসিয়েছেন। আমি বিষয়টি জানান পর উর্ধবতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, শহিদুল ইসলাম মিলন যদি আমাদের দুর্বল ভাবেন; তাহলে তিনি ভুল ভাবছেন। আমরা যশোরের আইনজীবীরা এখনো ঐক্যবদ্ধ আছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, যশোর আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সদস্য নজরুল ইসলাম, মোজাফফর হোসেন মোহন, দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার আলী জুলু, দিলিপ কুমার রায়, গাজী মোহাম্মদ মাহাফুজুর রহমান, ইমদাদুল হক ইমদাদ, গোলাম নবী, সিরাজুল ইসলাম লেন্টু, বেনজির আহম্মেদ তপু, উদায়ন বিশ্বাস, হাদিউজ্জামান সোহাগ প্রমুখ।
প্রিন্ট