ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ঘূর্ণঝড় রেমালের কারণে হাতিয়ায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের নয়টি গ্রামসহ ১৬টি গ্রাম এবং কয়েকটি চর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের প্রধান সড়ক ও বাজার এবং চর গাসিয়া, ঢালচর, দমারচরসহ বেশ কয়েকটি চরের রাস্তাঘাট ও দোকানপাট প্লাবিত রয়েছে। বেডিবাঁধ না থাকায় অস্বাভাবিক সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে রবিবার (২৬মে) রাতে নিঝুমদ্বীপের পুরো এলাকা ৫ থেকে ৭ ফুট পানিতে প্লাবিত হয়েছে। জোয়ারে ও বাতাসে অধিকাংশ কাঁচাঘর বিধ্বস্ত হওয়ায়‌ নিঝুম দ্বীপের প্রায় ১০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে এবং গতকাল রাত ১ টা থেকে হাতিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

 

এতে সমগ্র হাতিয়ার প্রায় লক্ষাধিক বাসিন্দা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিস্তীর্ণ জনপদে এখন শুধু ধ্বংসের চিহ্ন ভেসে উঠেছে। নিঝুম দ্বীপের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া হাজার হাজার লোকজনকে স্থানীয় এমপি মোহাম্মদ আলীর নির্দেশে নিঝুম দ্বীপের চেয়ারম্যান দিনাজ উদ্দিন রবিবার রাতে খিচুড়ি ও শুকনো খাবার সরবরাহ করেছেন।

নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. দিনাজ উদ্দিন বলেন, রোববার দুপুর থেকে টানা বর্ষণ ও জোয়ারের পানি ঢুকে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষ ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিতে ভেসে গেছে গবাদিপশুর খাদ্য ও মাছের ঘের। তলিয়ে গেছে শাকসবজিসহ নানা ফসলের জমি। বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন প্রায় প্লাবিত হয়।

সোনাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বলেন, সোনাদিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের মাইজচরা গ্রামে পানি প্রবেশ করে ৫০০ লোক গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

 

এছাড়াও হরনী, চানন্দী, সুখচর, চর ইশ্বর, নলচিরা, চর কিং, তমরদ্দি, সোনাদিয়া, বুড়িরচর, জাহাজমারা, নিঝুম দ্বীপ, হাতিয়া পৌরসভা এলাকা ছাড়াও বিচ্ছিন্ন চর ডালচর ও ঘাসিয়ারচর এলাকায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

 

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশীষ চাকমা জানান, সোমবার সকাল থেকে নিঝুম দ্বীপ সহ অন্যান্য এলাকার পানি কমতে শুরু করলেও এখনো বাতাসের বেগ বৃদ্ধি এবং ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্যাদি সংগ্রহ করা যায়নি বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তবে ঘর বাড়ি, গাছপালা, ফসলাদি, পুকুর, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তিনি। হাতিয়ার সঙ্গে বাইরের সব নৌ-যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে এবং গতকাল থেকে হাতিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

 

হাতিয়ার এমপি মোহাম্মদ আলী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার লোকজনের জন্য ত্রানসামগ্রী বরাদ্দ এবং জরুরি ভিত্তিতে বেডড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে দাবি করেছেন। হাতিয়াতে ২৪২ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে সার্বিক বিষয়ে খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

এবার ২১ দিনের মধ্যে জবাব দিতে আদানিকে সমন পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

error: Content is protected !!

ঘূর্ণঝড় রেমালের কারণে হাতিয়ায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

আপডেট টাইম : ০৬:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০২৪
হানিফ উদ্দিন সাকিব, হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি :

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের নয়টি গ্রামসহ ১৬টি গ্রাম এবং কয়েকটি চর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের প্রধান সড়ক ও বাজার এবং চর গাসিয়া, ঢালচর, দমারচরসহ বেশ কয়েকটি চরের রাস্তাঘাট ও দোকানপাট প্লাবিত রয়েছে। বেডিবাঁধ না থাকায় অস্বাভাবিক সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে রবিবার (২৬মে) রাতে নিঝুমদ্বীপের পুরো এলাকা ৫ থেকে ৭ ফুট পানিতে প্লাবিত হয়েছে। জোয়ারে ও বাতাসে অধিকাংশ কাঁচাঘর বিধ্বস্ত হওয়ায়‌ নিঝুম দ্বীপের প্রায় ১০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে এবং গতকাল রাত ১ টা থেকে হাতিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

 

এতে সমগ্র হাতিয়ার প্রায় লক্ষাধিক বাসিন্দা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিস্তীর্ণ জনপদে এখন শুধু ধ্বংসের চিহ্ন ভেসে উঠেছে। নিঝুম দ্বীপের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া হাজার হাজার লোকজনকে স্থানীয় এমপি মোহাম্মদ আলীর নির্দেশে নিঝুম দ্বীপের চেয়ারম্যান দিনাজ উদ্দিন রবিবার রাতে খিচুড়ি ও শুকনো খাবার সরবরাহ করেছেন।

নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. দিনাজ উদ্দিন বলেন, রোববার দুপুর থেকে টানা বর্ষণ ও জোয়ারের পানি ঢুকে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষ ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিতে ভেসে গেছে গবাদিপশুর খাদ্য ও মাছের ঘের। তলিয়ে গেছে শাকসবজিসহ নানা ফসলের জমি। বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন প্রায় প্লাবিত হয়।

সোনাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বলেন, সোনাদিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের মাইজচরা গ্রামে পানি প্রবেশ করে ৫০০ লোক গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

 

এছাড়াও হরনী, চানন্দী, সুখচর, চর ইশ্বর, নলচিরা, চর কিং, তমরদ্দি, সোনাদিয়া, বুড়িরচর, জাহাজমারা, নিঝুম দ্বীপ, হাতিয়া পৌরসভা এলাকা ছাড়াও বিচ্ছিন্ন চর ডালচর ও ঘাসিয়ারচর এলাকায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

 

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশীষ চাকমা জানান, সোমবার সকাল থেকে নিঝুম দ্বীপ সহ অন্যান্য এলাকার পানি কমতে শুরু করলেও এখনো বাতাসের বেগ বৃদ্ধি এবং ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্যাদি সংগ্রহ করা যায়নি বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তবে ঘর বাড়ি, গাছপালা, ফসলাদি, পুকুর, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তিনি। হাতিয়ার সঙ্গে বাইরের সব নৌ-যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে এবং গতকাল থেকে হাতিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

 

হাতিয়ার এমপি মোহাম্মদ আলী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার লোকজনের জন্য ত্রানসামগ্রী বরাদ্দ এবং জরুরি ভিত্তিতে বেডড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে দাবি করেছেন। হাতিয়াতে ২৪২ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে সার্বিক বিষয়ে খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে।


প্রিন্ট