রাজশাহীর তানোরে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) একটি গভীর নলকুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিবাদমান দু’পক্ষের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবারের উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে এই ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বা খুন-জখমের মতো ঘটনা ঘটতে পারে বলে সাধারণ শঙ্কিত হয়ে উঠেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে এবং পুলিশ আব্দুল হান্নান নামের এক জনকে আটক করেছে।
জানা গেছে, উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) ধানোরা মাঠে সাধারণ কৃষকদের জিম্মি ও জমি জোরপুর্বক ইজারা দিয়ে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। এ ঘটনায় স্কীমের কৃষকেরা বাদি হয়ে মজিদুল ও আজিজুলের বিরুদ্ধে রাজশাহী জেলা প্রশাসক(ডিসি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) জেল নম্বর ১৬৫৫ ও ১৮১ নম্বর দাগে অবস্থিত বিএমডিএর গভীর নলকুপের বৈধ অপারেটর রেজাউল ইসলাম বাবু।
কিন্ত্ত ধানোরা সরদার পাড়া গ্রামের মৃত তাহার আলীর পুত্র মজিদুল ও আজিজুল গভীর নলকুপের বৈধ অপারেটর রেজাউল ইসলাম বাবুকে জোরপূর্বক বিতাড়িত করে গভীর নলকুপ জবরদখল করেছে। এমনকি তারা ভুয়া সমিতি করে কৃষকদের কাছে জমি নিয়ে চাঁদাবাজি করছে। তারা কৃষকের অগোচরে তাদের জমি মৌসুমী আলু চাষিদের কাছে সেচসহ সাড়ে ১৬ হাজার টাকা বিঘা ইজারা দিয়ে কৃষকদের সর্বোচ্চ ১১ হাজার টাকা দিচ্ছেন।
এভাবে প্রতি বিঘা জমিতে তারা কৃষকের সাড়ে ৫ হাজার টাকা করে আত্মসাৎ করছে। ফলে জমি কৃষকের রাজত্ব মজিদ-আজিজুলের।এরা যেনো নতুন ইংরেজ শাসন কায়েম করেছে। কেউ প্রতিবাদ করলেই তাকে এই সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্রের হাতে লঞ্চিত হতে হচ্ছে। কৃষকের কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারী হলেও তারা কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। স্কীমের কৃষকদের মতামতের ভিত্তিতে সমিতি গঠনের দাবিতে কৃষকেরা সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এদিকে কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এদিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান তার কার্যালয়ে উভয় পক্ষকে নিয়ে বসেন। এসময় কামারগাঁ ইউপি চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বী ফরহাদ উপস্থিত ছিলেন। ইউএনও সাহেব উভয় পক্ষের কথা শোনেন। এবং তিনি নির্দেশনা দেন কৃষকের জমি কৃষকেরা ইজারা দিবেন স্ট্যাম্পে লেখা পড়ার মাধ্যমে।কৃষকের জমি সমিতির সভাপতি বা অপারেটর ইজারা দিতে পারবেন না।
এছাড়াও স্কীমভুক্ত কৃষকেরা মতামতের ভিত্তিতে সমিতি গঠন করবেন, কৃষকেরা চাইলে সেচ কার্ড দিয়ে সেচ নিবেন। কেউ সেচ নিতে বাধা দিতে পারবে না।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উভয় পক্ষের লোকজন ইউএনও অফিস থেকে বেরিয়ে আশার পর, আব্দুল মজিদ প্রতিপক্ষ আব্দুল হান্নানের পিতাকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করে। এনিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তারা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় আগা খাঁনকেও কিল-ঘুষি দিয়ে ধাওয়া করে। এঘটনায় মাদারিপুর বাজার ও ধানোরা গ্রামে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল মজিদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বপালন করছেেন। তিনি বলেন, এদিন তাকে হত্যার উদেশ্যে তারা তার ওপর হামলা করেছে।
এবিষয়ে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রহিম বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে এবং এক জনকে আটক করা হয়েছে, অন্যদের আটকের চেষ্টা চলছে।
প্রিন্ট