ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বর্তমান সরকার ব্যর্থ হলে ছাত্র জনতার বিপ্লব ব্যর্থ হয়ে যাবেঃ -মাহবুবুল হাসান ভূঁইয়া পিংকু Logo লালপুরে বিএনপির মতবিনিময় ও কর্মীসভা অনুষ্ঠিত Logo ফরিদপুরে ৭ই ডিসেম্বর কর্মশালা সফল করার লক্ষ্যে ফরিদপুর বিভাগীয় বিএনপির প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত Logo তানোরে সার পচার, বিতরণে অনিয়ম, হট্টগোল ও মারপিট Logo ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় কওমী মাদরাসা ঐক্য পরিষদের পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত Logo বাংলাদেশের নৃত্য দল ভারতে সাংস্কৃতিক উৎসবে অংশগ্রহণ করে Logo সুন্দরবন প্রেসক্লাবের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন Logo বাগাতিপাড়ায় স্ত্রীর পরকীয়ার অভিযোগে স্বামীর আত্মহত্যা ! Logo কালুখালীতে জামায়াতের কর্মী সমাবেশ Logo বাগাতিপাড়ায় জাটকা মাছ জব্দ করে দন্ড
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

তানোরে আলুর দাম নিয়ে কৃষকদের দুশ্চিন্তা

রাজশাহীর তানোরে আলুর দাম নিয়ে আলু চাষিরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। আলু চাষিরা জানান, মৌসুমের শুরুর দিকে আলুর ভালো দাম পেলেও, ভরা মৌসুমে বাজার ভালো নয়। অধিকাংশক্ষেত্রে বর্তমান বাজার মূল্যে আলু বিক্রি করে উৎপাদন খরচও উঠছে না। উপজেলার তালন্দ ইউনিয়নের (ইউপি) নারায়নপুর গ্রামের আলুচাষি মইফুল ইসলাম (৩০) ও শরিফুল ইসলাম (২৮) জানান অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আলুর ভালো চাহিদা ও দাম থাকায় লাভের আশায় আলু চাষে ঝুঁকেছিলেন।
কিন্তু যখন মাঠ থেকে আলু উত্তোলন শুরু হবে, এমন সময় ভারত থেকে আলু আমদানি করায় দেশি আলুর দাম কমে গেছে। এতে কৃষকেরা লোকসানের মুখে পড়েবে। আলু চাষি সেলিম বলেন, এবার মৌসুমের শুরুতে  বাজারে আগাম আলুর দাম উঠেছিল আশি থেকে একশ’ টাকা কেজি।
সেই হিসাব করে আমরা আশা করেছিলাম এবার আলু আবাদ করে বেশ লাভবান হতে পারবো। যে কারণে আগের বছরের তুলনায় এবার বীজ, সার,,সেচ, হাল, শ্রমিক, কীটনাশক ইত্যাদির খরচ কিছুটা বেশি হলেও আলু আবাদ করেছিলাম। শুরুর দিকে আবহাওয়া ভালো থাকায় আলুর গাছও ভালো হয়েছিল। কিন্তু মাঝে এমন শীত আর কুয়াশা পড়ল, এতে গাছে পচন ধরে অনেক গাছ নষ্ট হয়ে গেছে।
কয়েকবার ওষুধ স্প্রে করে সেই আলুর গাছ রক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও আলুর ফলন ব্যাহত হয়েছে। গতবার এক বিঘা জমিতে একশ’ মন আলুর ফলন হলেও এবারে বৈরী আবহাওয়ার কারণে ৭০ থেকে ৮০ মনের বেশি হচ্ছে না। আলুচাষি মইফুল ইসলাম বলেন, তিনি এবার একশ’ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন, প্রতি বিঘায় তার খরচ হবে প্রায় ৬০ হাজার টাকা।
জানা গেছে, তানোরে চলতি মৌসুমে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে, যা দেশের তৃতীয়। এবার এক বিঘা আলুচাষে খরচ প্রায় ৬০ হাজার টাকা এবং এক কেজি আলু উৎপাদনে খরচ প্রায় ১৫ টাকা। এর মধ্যে জমির ভাড়া ২০ হাজার, জমি প্রস্তুতি প্রায় আড়াই হাজার, বীজ প্রায় ১৬ হাজার, সার প্রায় ৬ হাজার, কীটনাশক প্রায় ৩ হাজার, রোপন ব্যয় প্রায় ৩ হাজার, টপকরণ প্রায় ৩ হাজার, সেচ প্রায় দেড় হাজার, দেখভাল ব্যয় প্রায় ২ হাজার ও উত্তোলন ব্যয় প্রায় ৫ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় গড় উদপাদন ৭০ বস্তা বা ৪ হাজার কেজি।
এছাড়াও আলু স্টোরজাতকরণে প্রতি কেজির খরচ প্রায় ৮ টাকা, তাছাড়া ৬০ কেজি ওজনের বস্তা স্টোরে রাখা হলে বের করার সময় ৫০ কেজি আলু পাওয়া যায়। আলু চাষি আব্দৃর রশিদ বলেন, এবার লাভের আশায় আলু চাষ করেছিলাম। কিন্তু সেই আশায় তো আমাদের গুড়ে বালি। ভারত থেকে আলু আমদানির ফলে দাম কমে এসেছে। বর্তমানে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা মণ দরে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে। যে হারে খরচ বেড়েছে, বিশেষ করে সার, বীজ, হালচাষ, এককথায় সবকিছুর দাম বেশি কিন্তু আলুর দাম কম। যার কারণে আলু চাষ করে এবার লাভের আশা করা যাচ্ছে না।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ জানান- এবার উপজেলায় প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে, যা দেশের তৃতীয়। নিয়মিত মনিটরিং করার জন্য রোগবালাই কম ছিল। তিনি বলেন দাম নির্ধারণ বা নিয়ন্ত্রণ করা তো কৃষি অফিসের কাজ না। এজন্য বিপণন বিভাগ রয়েছে। তবে বাজারে যে দাম আছে হিমাগারে রাখলে পরে দাম পাবে বলে তিনি মনে করেন।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বর্তমান সরকার ব্যর্থ হলে ছাত্র জনতার বিপ্লব ব্যর্থ হয়ে যাবেঃ -মাহবুবুল হাসান ভূঁইয়া পিংকু

error: Content is protected !!

তানোরে আলুর দাম নিয়ে কৃষকদের দুশ্চিন্তা

আপডেট টাইম : ১১:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) উপজেলা প্রতিনিধি :
রাজশাহীর তানোরে আলুর দাম নিয়ে আলু চাষিরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। আলু চাষিরা জানান, মৌসুমের শুরুর দিকে আলুর ভালো দাম পেলেও, ভরা মৌসুমে বাজার ভালো নয়। অধিকাংশক্ষেত্রে বর্তমান বাজার মূল্যে আলু বিক্রি করে উৎপাদন খরচও উঠছে না। উপজেলার তালন্দ ইউনিয়নের (ইউপি) নারায়নপুর গ্রামের আলুচাষি মইফুল ইসলাম (৩০) ও শরিফুল ইসলাম (২৮) জানান অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আলুর ভালো চাহিদা ও দাম থাকায় লাভের আশায় আলু চাষে ঝুঁকেছিলেন।
কিন্তু যখন মাঠ থেকে আলু উত্তোলন শুরু হবে, এমন সময় ভারত থেকে আলু আমদানি করায় দেশি আলুর দাম কমে গেছে। এতে কৃষকেরা লোকসানের মুখে পড়েবে। আলু চাষি সেলিম বলেন, এবার মৌসুমের শুরুতে  বাজারে আগাম আলুর দাম উঠেছিল আশি থেকে একশ’ টাকা কেজি।
সেই হিসাব করে আমরা আশা করেছিলাম এবার আলু আবাদ করে বেশ লাভবান হতে পারবো। যে কারণে আগের বছরের তুলনায় এবার বীজ, সার,,সেচ, হাল, শ্রমিক, কীটনাশক ইত্যাদির খরচ কিছুটা বেশি হলেও আলু আবাদ করেছিলাম। শুরুর দিকে আবহাওয়া ভালো থাকায় আলুর গাছও ভালো হয়েছিল। কিন্তু মাঝে এমন শীত আর কুয়াশা পড়ল, এতে গাছে পচন ধরে অনেক গাছ নষ্ট হয়ে গেছে।
কয়েকবার ওষুধ স্প্রে করে সেই আলুর গাছ রক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও আলুর ফলন ব্যাহত হয়েছে। গতবার এক বিঘা জমিতে একশ’ মন আলুর ফলন হলেও এবারে বৈরী আবহাওয়ার কারণে ৭০ থেকে ৮০ মনের বেশি হচ্ছে না। আলুচাষি মইফুল ইসলাম বলেন, তিনি এবার একশ’ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন, প্রতি বিঘায় তার খরচ হবে প্রায় ৬০ হাজার টাকা।
জানা গেছে, তানোরে চলতি মৌসুমে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে, যা দেশের তৃতীয়। এবার এক বিঘা আলুচাষে খরচ প্রায় ৬০ হাজার টাকা এবং এক কেজি আলু উৎপাদনে খরচ প্রায় ১৫ টাকা। এর মধ্যে জমির ভাড়া ২০ হাজার, জমি প্রস্তুতি প্রায় আড়াই হাজার, বীজ প্রায় ১৬ হাজার, সার প্রায় ৬ হাজার, কীটনাশক প্রায় ৩ হাজার, রোপন ব্যয় প্রায় ৩ হাজার, টপকরণ প্রায় ৩ হাজার, সেচ প্রায় দেড় হাজার, দেখভাল ব্যয় প্রায় ২ হাজার ও উত্তোলন ব্যয় প্রায় ৫ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় গড় উদপাদন ৭০ বস্তা বা ৪ হাজার কেজি।
এছাড়াও আলু স্টোরজাতকরণে প্রতি কেজির খরচ প্রায় ৮ টাকা, তাছাড়া ৬০ কেজি ওজনের বস্তা স্টোরে রাখা হলে বের করার সময় ৫০ কেজি আলু পাওয়া যায়। আলু চাষি আব্দৃর রশিদ বলেন, এবার লাভের আশায় আলু চাষ করেছিলাম। কিন্তু সেই আশায় তো আমাদের গুড়ে বালি। ভারত থেকে আলু আমদানির ফলে দাম কমে এসেছে। বর্তমানে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা মণ দরে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে। যে হারে খরচ বেড়েছে, বিশেষ করে সার, বীজ, হালচাষ, এককথায় সবকিছুর দাম বেশি কিন্তু আলুর দাম কম। যার কারণে আলু চাষ করে এবার লাভের আশা করা যাচ্ছে না।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ জানান- এবার উপজেলায় প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে, যা দেশের তৃতীয়। নিয়মিত মনিটরিং করার জন্য রোগবালাই কম ছিল। তিনি বলেন দাম নির্ধারণ বা নিয়ন্ত্রণ করা তো কৃষি অফিসের কাজ না। এজন্য বিপণন বিভাগ রয়েছে। তবে বাজারে যে দাম আছে হিমাগারে রাখলে পরে দাম পাবে বলে তিনি মনে করেন।

প্রিন্ট