এ ছাড়া বিএনপি নেতা তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়। এ তালিকায় হুজি-বি জঙ্গি মুরসালিন ও মোস্তাকিম রয়েছেন। ২০০৪ সালের মে মাসে টঙ্গীর এক জনসভায় ব্রাশফায়ারে নিহত হন আওয়ামী লীগ নেতা ও তখনকার সংসদ সদস্য আহসানউল্লাহ মাস্টার। এ ঘটনায় ২২ জনের মৃত্যুদ- ও ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ৯ জন পলাতক। তাদের মধ্যে নুরুল ইসলাম দীপু অন্যতম।
অন্যদিকে বিএনপির আমলেই ঢাকার অপরাধ জগৎ কাঁপানো সুব্রত বাইন পালিয়ে ভারত চলে যান। সেখানে গ্রেপ্তার হওয়ার পর আদালত থেকে জামিন নিয়ে বের হয়ে পালিয়ে যান নেপাল। তবে সেখানে ধরা পড়ে যান তিনি। পরে নেপাল কারাগারে সুড়ঙ্গ করে পালিয়ে পুনরায় কলকাতায় এলে তিনি আবার ধরা পড়েন। অবৈধভাবে কলকাতায় বসবাস করায় ওই দেশের আদালত বাইনকে ১৩ বছরের কারাদন্ড দেয়। সুব্রত বাইনের নামে ভারতেই পাঁচটি পাসপোর্ট আছে। ওই সব পাসপোর্টে আলী মিয়া ওরফে আক্কাশ, রবিন ওরফে সজিব, ফতেহ আলী উল্লেখ করেন সুব্রত বাইন।
চট্টগ্রামে ৮ ছাত্রলীগ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত শিবির ক্যাডার সাজ্জাদ হোসেন ধরা পড়েন কলকাতায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ভারতের বিভিন্নস্থানে আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ অন্য অপরাধীরা আত্মগোপনে থেকে অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। ওই দেশ থেকে কেউ কেউ বাংলাদেশের আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা নিজেদের পরিচয় গোপন করে ব্যবসায়িক কর্মকান্ড চালাচ্ছে। ওই দেশে দালালদের মাধ্যমে পাসপোর্টও করিয়ে নিয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ছাড়াও মোল্লা মাসুদ, আগা শামীম, মানিক, ছোট হান্নান, প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, ইমাম হোসেন, জয় ভারতে রয়েছেন। এ ছাড়া শাহাদৎ, নাসির উদ্দিন, খোরশেদ আলম, তৌফিকুল আলম, শাহীন সিকদার, নবউত্তম সাহা, মফিজুর রহমান, শাহাজাদা, এমটি বাবু, নবী হোসেন, মকবুল হোসেন, কাজল, মুকুল, কিলার মুন্না, রানা, সবুজ, বিকাশ, মিন্টু, জাকির, রেজা, তুহিন, বুলবুল, শরীফ, টিটু, প্রকাশ, জিয়া, বিজু, রতন, ইমরান, কালা সেন্টু, খোরশেদ, এবায়দুল, কাইয়ুম, পল্টন মোক্তা, ভাগিনা মামুন, পিয়াল, কিলার ইকবাল, নবী, জিয়া, ফজলু, ছোট বাবু, সুনীল কলকাতায় অবস্থান করছেন। তাদের কেউ মার্কুস স্ট্রিট, কেউ বনগাঁ, চব্বিশ পরগনা, হোটেলপাড়া ফ্রি স্কুল স্ট্রিট, পার্ক স্ট্রিট, রিপন স্ট্রিট, গালিব স্ট্রিট, ক্যাসেট, স্ট্রিট, বশিরগাঁও, মুর্শিদাবাদ, নদীয়াসহ আরও কয়েকটি স্থানে বসবাস করছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেসব অপরাধী আটক আছে, তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যে আমরা ভারত থেকে বেশ কয়েকজন অপরাধীকে ফেরত এনেছি। বাকিদেরও ফেরত আনা হবে।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা আরও বলেন, মাস দুয়েক আগে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আটক বাংলাদেশি অপরাধীদের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে সে দেশের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে। অপরাধীদের বিষয়ে ভারত তাদের নানাভাবে সহায়তা করছে। এসব অপরাধীর মধ্যে জঙ্গি ও শীর্ষ সন্ত্রাসী রয়েছেন। আটক সন্ত্রাসীদের দেশে ফিরিয়ে এনে প্রচলিত আইনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।