ঢাকা , মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo লালপুরের পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ৫ Logo ফরিদপুরে আ.লীগের ব্যানারে মিছিল দেওয়ার প্রস্তুতিকালে বিএনপি নেতার ছেলেসহ আটক ৮ Logo বহলবাড়ীয়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সম্মেলন Logo শ্রমিকদল নেতাদের সহযোগীতায় জোরপূর্বক জমি দখলে শসস্ত্র হামলা Logo ডিপ্লোমা ইন্টার্ন নার্সদের একদফা দাবিতে দেশব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত Logo ছাত্রদল নেতা পারভেজ হত্যার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল Logo সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হকের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভা Logo আলফাডাঙ্গায় শিক্ষকদের সংবর্ধনা ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করলেন জেলা প্রশাসক Logo মুকসুদপুর উপজেলা পরিষদের ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ Logo ভূরুঙ্গামারীতে নাশকতা বিরোধী বিশেষ অভিযানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৫ নেতা গ্রেফতার
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

নলছিটিতে মৌসুমি জেলেরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ নিধনের প্রস্তুতি নিচ্ছে

নিষেধাজ্ঞা আসার খবর পেয়ে মা ইলিশ নিধনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কিছু অসাধু জেলে। ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এসব অসাধু জেলেরা নতুন নতুন একাধিক নৌকা ও কারেন্ট জাল সংগ্রহ করা শুরু করেছেন। কেউ কেউ আবার পুরনো জাল ও নৌকা মেরামত করে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। গত বুধবার(৪অক্টোবর) নলছিটি উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মা ইলিশ সংরক্ষন টাস্কফোর্সের মতবিনিময় সভায় বক্তারা বিষয়টি তুলে ধরেছেন। এসময় তারা বলেন, মৌসুমি জেলেদের কারনে নিষেধাজ্ঞা শতভাগ কার্যকর করা হয় না। তারা অন্যান্য পেশায় থাকলেও নিষেধাজ্ঞার মৌসুমে তারা ইলিশ মাছ শিকারে তাৎপর হন।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে,আগামী অক্টোবরের ১২তারিখ থেকে ২নভেম্বর মা ইলিশ ধরার উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা আসছে। মূলত বছরের এই সময়ে সাগরের ডিমওয়ালা ইলিশ সাধু পানিতে ডিম ছাড়ার জন্য বিভিন্ন নদ নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে প্রবেশ করতে থাকে। ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য এই সময়ে সরকার ইলিশ মাছ শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার হদুয়া, খোজাখালি,সারদল,কুমারখালী,অনুরাগ,মগড় ও চর বহরমপুর এলাকার কিছু অসাধু জেলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ নিধনের সকল আয়োজন সম্পন্ন করে রেখেছেন। তারা একাধিক কারেন্ট জাল ও দুই/তিনটি করে নৌকা সংগ্রহ করেছেন। এদের মধ্যে বিশাল একটা অংশ আছে যারা মৌসুমি জেলে। যারা সারাবছর অন্য পেশায় নিয়োজিত থাকলেও মা ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে দাপিয়ে বেড়ান। যার কারনে প্রশাসনকেও নিষেধাজ্ঞা সফল করতে বেগ পেতে হয়।
হান্নান চৌধুুরি নামের এক মৌসুমি জেলে বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় এক ঘন্টা ঠিকমত নদীতে জাল ফেলতে পারলে ৮-১০হাজার টাকা আয় করা যায়। কারন নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে প্রচুর ইলিশ মাছ পাওয়া যায় আর ডিমওয়ালা হওয়ার কারনে ভালো দামে বিক্রি করা যায়। তাই অনেকেই এই লোভে পরে মা ইলিশ শিকারে নেমে পরে । যদি প্রশাসন জাল ও নৌকা নিয়েও যায় তাতে তেমন সমস্যা হয় না। আবার অনেকে মাছ বিক্রি না করে ককশিট ক্রয় করে তার ভিতর বরফ দিয়ে মজুদ করে রাখেন। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হলে তা বাজারে বিক্রি করা হয়। একটা বিষয় খেয়াল করে দেখবেন প্রতিবছরই নিষেধাজ্ঞার পরেরদিনই বাজারে ইলিশ মাছে সয়লাব হয়ে যায়। এগুলো আসে মূলত মজুদ করা মাছ থেকেই কারন নিষেধাজ্ঞা শেষেই এত মাছতো আর একদিনে জেলেরা ধরতে পারে না।
নিবন্ধিত জেলে মো. হেলাল হাওলাদার জানান, মা ইলিশ শিকারে যে সকল অসাধু জেলে নদীতে নামেন তাদের মধ্যে বড় একটা অংশ থাকে মৌসুমি জেলে যারা মূলত জেলে পেশায় নিয়োজিত না। যারা নিবন্ধিত জেলে তারা বেশিরভাগই ঝুঁকি নিয়ে নদীতে নামতে চান না। কারন প্রশাসন ধরে সাজা দিলে জেলে কার্ডটি বাতিল হতে পারে। এছাড়া নিষেধাজ্ঞায় মাছ ধরা থেকে বিরত থাকার জন্য নিবন্ধিত জেলেদের সরকারের পক্ষ থেকে চাল বিতরণ করা হয়। তাই আমাদের উচিত নিষেধাজ্ঞায় মা ইলিশ নিধন না করে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করা।
স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল ইসলাম বলেন,প্রতি বছর ইলিশ রক্ষার অভিযানের সময় মৌসুমী জেলেরা দলে দলে নদীতে জাল নিয়ে নেমে পড়েন। এরা প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে নদীতে মা ইলিশ শিকার করেন। অনেক সময় দেখা যায় প্রশাসনের লোকজন নদীতে ধাওয়া দিয়ে একবাক থেকে অন্য বাকে যেতে না যেতেই তারা আবার নদীতে নেমে পড়েন। এদের প্রতিহত করতে না পারলে মা ইলিশ রক্ষার অভিযানও সফল হবে না আর ইলিশ সম্পদেরও উৎপাদন বাড়বে না।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রমনি কুমার মিস্ত্রি জানান, মা ইলিশ রক্ষায় সরকার বদ্ধ পরিকর। নিবন্ধিত জেলেদের ইলিশ ধরা থেকে বিরত থাকার জন্য নানান ভাবে সহায়তা করা হচ্ছে। তারপরও যারা ইলিশ শিকারে নদীতে নামবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

লালপুরের পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ৫

error: Content is protected !!

নলছিটিতে মৌসুমি জেলেরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ নিধনের প্রস্তুতি নিচ্ছে

আপডেট টাইম : ০১:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ অক্টোবর ২০২৩
মোঃ আমিন হোসেন, ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধি :
নিষেধাজ্ঞা আসার খবর পেয়ে মা ইলিশ নিধনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কিছু অসাধু জেলে। ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এসব অসাধু জেলেরা নতুন নতুন একাধিক নৌকা ও কারেন্ট জাল সংগ্রহ করা শুরু করেছেন। কেউ কেউ আবার পুরনো জাল ও নৌকা মেরামত করে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। গত বুধবার(৪অক্টোবর) নলছিটি উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মা ইলিশ সংরক্ষন টাস্কফোর্সের মতবিনিময় সভায় বক্তারা বিষয়টি তুলে ধরেছেন। এসময় তারা বলেন, মৌসুমি জেলেদের কারনে নিষেধাজ্ঞা শতভাগ কার্যকর করা হয় না। তারা অন্যান্য পেশায় থাকলেও নিষেধাজ্ঞার মৌসুমে তারা ইলিশ মাছ শিকারে তাৎপর হন।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে,আগামী অক্টোবরের ১২তারিখ থেকে ২নভেম্বর মা ইলিশ ধরার উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা আসছে। মূলত বছরের এই সময়ে সাগরের ডিমওয়ালা ইলিশ সাধু পানিতে ডিম ছাড়ার জন্য বিভিন্ন নদ নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে প্রবেশ করতে থাকে। ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য এই সময়ে সরকার ইলিশ মাছ শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার হদুয়া, খোজাখালি,সারদল,কুমারখালী,অনুরাগ,মগড় ও চর বহরমপুর এলাকার কিছু অসাধু জেলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ নিধনের সকল আয়োজন সম্পন্ন করে রেখেছেন। তারা একাধিক কারেন্ট জাল ও দুই/তিনটি করে নৌকা সংগ্রহ করেছেন। এদের মধ্যে বিশাল একটা অংশ আছে যারা মৌসুমি জেলে। যারা সারাবছর অন্য পেশায় নিয়োজিত থাকলেও মা ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে দাপিয়ে বেড়ান। যার কারনে প্রশাসনকেও নিষেধাজ্ঞা সফল করতে বেগ পেতে হয়।
হান্নান চৌধুুরি নামের এক মৌসুমি জেলে বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় এক ঘন্টা ঠিকমত নদীতে জাল ফেলতে পারলে ৮-১০হাজার টাকা আয় করা যায়। কারন নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে প্রচুর ইলিশ মাছ পাওয়া যায় আর ডিমওয়ালা হওয়ার কারনে ভালো দামে বিক্রি করা যায়। তাই অনেকেই এই লোভে পরে মা ইলিশ শিকারে নেমে পরে । যদি প্রশাসন জাল ও নৌকা নিয়েও যায় তাতে তেমন সমস্যা হয় না। আবার অনেকে মাছ বিক্রি না করে ককশিট ক্রয় করে তার ভিতর বরফ দিয়ে মজুদ করে রাখেন। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হলে তা বাজারে বিক্রি করা হয়। একটা বিষয় খেয়াল করে দেখবেন প্রতিবছরই নিষেধাজ্ঞার পরেরদিনই বাজারে ইলিশ মাছে সয়লাব হয়ে যায়। এগুলো আসে মূলত মজুদ করা মাছ থেকেই কারন নিষেধাজ্ঞা শেষেই এত মাছতো আর একদিনে জেলেরা ধরতে পারে না।
নিবন্ধিত জেলে মো. হেলাল হাওলাদার জানান, মা ইলিশ শিকারে যে সকল অসাধু জেলে নদীতে নামেন তাদের মধ্যে বড় একটা অংশ থাকে মৌসুমি জেলে যারা মূলত জেলে পেশায় নিয়োজিত না। যারা নিবন্ধিত জেলে তারা বেশিরভাগই ঝুঁকি নিয়ে নদীতে নামতে চান না। কারন প্রশাসন ধরে সাজা দিলে জেলে কার্ডটি বাতিল হতে পারে। এছাড়া নিষেধাজ্ঞায় মাছ ধরা থেকে বিরত থাকার জন্য নিবন্ধিত জেলেদের সরকারের পক্ষ থেকে চাল বিতরণ করা হয়। তাই আমাদের উচিত নিষেধাজ্ঞায় মা ইলিশ নিধন না করে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করা।
স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল ইসলাম বলেন,প্রতি বছর ইলিশ রক্ষার অভিযানের সময় মৌসুমী জেলেরা দলে দলে নদীতে জাল নিয়ে নেমে পড়েন। এরা প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে নদীতে মা ইলিশ শিকার করেন। অনেক সময় দেখা যায় প্রশাসনের লোকজন নদীতে ধাওয়া দিয়ে একবাক থেকে অন্য বাকে যেতে না যেতেই তারা আবার নদীতে নেমে পড়েন। এদের প্রতিহত করতে না পারলে মা ইলিশ রক্ষার অভিযানও সফল হবে না আর ইলিশ সম্পদেরও উৎপাদন বাড়বে না।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রমনি কুমার মিস্ত্রি জানান, মা ইলিশ রক্ষায় সরকার বদ্ধ পরিকর। নিবন্ধিত জেলেদের ইলিশ ধরা থেকে বিরত থাকার জন্য নানান ভাবে সহায়তা করা হচ্ছে। তারপরও যারা ইলিশ শিকারে নদীতে নামবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রিন্ট