নওগাঁর আত্রাই নদীর পানি এখনো বিপদ সীমার ৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সোমবার রাত থেকে একের পর এক বেরি বাঁধ পাকা সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় প্রবল বেগে মাঠে পানি ডুকে পরেছে এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ফলে শুক্রবার পর্যন্ত উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নের প্রায় ১২-১৩ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া পানির নিচে নিচে তলিয়ে পড়েছে প্রায় ৫ হাজার বিঘা জমির পাকা কাচা আওশ এবং রপণকৃত আমন ধান।
এছাড়া বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত নতুনকরে আত্রাই উপজেলার অনন্ত্য ৩টি স্হানে বেড়িবাঁধ সহ পাকা সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় আত্রাই উপজেলা সদরের সাথে পূর্ব অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্হা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পানির তোরে বিদ্যুৎেতর খুটি ভেঙ্গে যাওয়ায় বেশ কয়েকটি এলাকা গত দুই দিন ধরে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে ফলে চরম দূর্ভোগে পড়েছে বন্যা দুর্গত মানুষ। আত্রাই উপজেলার কাশিয়াবাড়ি গ্রামের বেলাল হোসেন বলেন আত্রাই নদীর কাশিয়াবারি, সমসপারা বেড়িবাঁধ ও পাকা সড়কের বলরামচক শ্মশান ঘাট এলাকায় বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টা নাগাদ ভেঙ্গে যায়। এতে মাঠে প্রবল বেগে বন্যার পানি ডুকে পরায় বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত শিমুলকুচি, জামগ্রাম, লাকবাড়ি,পালশা, মাঝগ্রাম,বড়সাওতা,পুইসাওতা সোনাইডাঙ্গা,বাকাঁসহ কয়েকটি মাঠের পাকা কাচা আওশ এবং রপণকৃত আমন ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
এছাড়া পাকা সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্হা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
বলরামচক গ্রামের আব্দুল মান্নান ও নৈদাঘী গ্রামের আজগর আলী বলেন তাদের মাঠের সমস্ত আমন ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে এর মধ্যে তারও ৬ বিঘা জমির ধান রয়েছে এছাড়া এলাকার অধিকাংশ মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। জগদাস গ্রামের আইনুল বলেন নদীতে প্রবল পানির স্রোতে বুধবার রাতে অনুমানিক সাড়ে ১০ টা নাগাদ আত্রাই সিংড়া সড়কের জগদাস বটতলি নামক স্হানে ও এর উদুরে সিকার পুর নামক স্হানে পাকা সড়ক ভেঙ্গে যায়।এতে আত্রাই উপজেলা সদরের সাথে অত্র এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
আত্রাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা অভিজিৎ বলেন বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পানিতে প্রায় ২-৩ হাজার বিঘা জমির ধান আক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু নতুন করে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় আরও ৬ শত ৩০ বিঘা জমির ধান বন্যার পানির নিচে তলিয়ে গেছে এরমধ্যে কিছু পাকা ধান রয়েছে। আত্রাই উপজেলার পল্লীবিদ্যুত অফিসের (ডি জি এম) আব্দুল আলিম বলেন বন্যার পানির স্রোতে বান্দাইখারা, পাঁচুপুর, কাশিয়াবাড়ি ও জগদাস সহ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুতের খুটি ভেঙ্গে পড়েছে।
এছাড়া প্রায় অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক রাখতে পারলেও কাশিয়াবারি, বলরামচক ও চৌধুরীপারা এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি। আত্রাই উপজেলা নর্বাহী কর্মকর্তা সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন উপজেলার ৮ ইউনিয়নের কম বেশি অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এতে প্রায় ১৪-১৫ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে বন্যা দুরর্গতদের সাহায্য করতে ইতিমধ্যে ১৬ মেক্টিটন চাল পাওয়া গেছে চাহিদা অনুযায়ী সহায়তা অব্যাহত থাকবে।এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডে উপবিভাগীয় প্রকৌশলী(ভারপ্রাপ্ত) প্রবীর কুমার পাল বলেন বৃহস্পতিবার থেকে আত্রাই নদীর পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে।
তারপর ও শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত আত্রাই নদীর আত্রাই স্টেশন পয়েন্টে বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর যে কয়েকটি স্থানে ভেঙ্গে গেছে সেগুলো মেরামতের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। এর আগে গত বুধবার সকাল ৭ টা নাগাদ আত্রাই নদীর নন্দনালী বেরিবাঁধ ভেঙ্গে যাই এবং আত্রাই, বান্দাইখারা, সরদার পাড়া পাকা সড়ক ভেঙ্গে যাই। বুধবার গভীর রাতে রাণীনগর উপজেলার নান্দইবারি বেড়িবাঁধ এবং তার অদুরে আত্রাই – নওগাঁ আঞ্চলিক পাকা সড়ক ভেঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্হা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাই।
প্রিন্ট