মাগুরায় বুধবার দুপুরে সেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। এ তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক যুবকের অস্ত্র হাতে নিয়ে মহড়ার যে ছবি এবং ভিডিও ভাইরাল হয়েছে পুলিশের ধারণা ওই অস্ত্র দিয়ে গুলি ছোড়া হয়নি। ভীতি প্রদর্শন করতে এই অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। অস্ত্র হাতে যুবকের যে ছবি নজরে এসেছে এটা খেলনা পিস্তলও হতে পারে।
তবে নাম প্রকাশে শহরের একজন ব্যবসায়ী বলেন, বুধবার দুপুরে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক দল সংঘর্ষের সময় একটি গুলির আওয়াজ শুনতে পাওয়া গেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মুখে মাস্ক ও মাথায় ক্যাপ পরা এক যুবক একটি একটি অস্ত্র নিয়ে সংষর্ঘস্থলে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছেন।
মুখোশ পরিহিত অস্ত্রধারী যুকক কে অনেকেই ছাত্রলীগের কর্মী দাবী করলেও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাহিদ খাঁন জানান, অস্ত্রধারী যুবক তাদের পরিচিত নয়।
অন্যদিকে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল থেকে একাধিকবার গুলিবর্ষণ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক হামিদুল ইসলাম। তবে সাধারন মানুষ বলছেন দুই দলের মধ্যেই গুলি ছোড়াছুড়ি হয়। তবে কেউ গুলিবিদ্ধ হয়নি।
পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের ১০০ মিটার দূরত্বের মধ্যে ছত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় শহরে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে।
প্রতক্ষদর্শী শহরের এক ব্যবসায়ী বলেন, প্রতিনিধি সভা সফল করতে মাগুরা জেলা জজ আদালত চত্বরের সামনের রাস্তা দিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের একটি মিছিল চৌরঙ্গী মোড় পার করে সৈয়দ আতর আলী সড়কের সামনে এসে জড়ো হলে এ সময় ছাত্রলীগের একটি সংঘবদ্ধ দল লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে মিছিলে হামলা চালায়। এতে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পরে বিএনপির কর্মীরাও লাঠিসোঁটা নিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীদের ধাওয়া করলে ছাত্রলীগ একটু পিছু হটে। ফের শুরু হয় পাল্টা ধাওয়া। এ সময় মিছিলের পেছন থেকে একটি গুলির আওয়াজ পাওয়া যায়। ঘটনার সময় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৭জন আহত হয়।
ঘটনার পর গতকাল বুধবার রাতে ফেসবুকে অস্ত্রধারী যুবকের স্থিরচিত্র ও ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওটি কলেজ রোডের একটি বিপণিবিতান থেকে ধারণ করা। তাতে দেখা যায়, মাগুরা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে এক যুবক অস্ত্র নিয়ে নাড়াচাড়া করছেন। তাঁর মাথায় ক্যাপ ও মুখে মাস্ক ছিল। তিনি ছাত্রলীগের কর্মী বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা মন্তব্য করেছেন।
তবে মাগুরা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাহিদ খাঁন এবং সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম বলেন, ফেসবুকে অস্ত্রধারী যুবকের যে ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করা হয়েছে সে তাদের পরিচিত কেউ নয়।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম জাহিদের বলেন, অস্ত্র হাতে ভাইরাল হওয়া ব্যক্তি একজন ছাত্রলীগ কর্মী। এরপরও আমাদের নেতাকর্মীদেরই প্রশাসন দিয়ে হয়তো হয়রানি করা হবে। মাগুরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক হামিদুল ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগ কর্মীদের উপর স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা-কর্মীদের হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে বারিউর ইসলাম রিয়াদ বাদী হয়ে শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাাপ্ত কর্মকর্তা শেখ সেকেন্দার আলী মামলার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, যুবকের অস্ত্র হাতে যে ছবিটি আমাদের নজরে এসেছে আমরা তার পরিচয় নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। পরিচয় জানতে পারলেই তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। তবে গুলি করার কোনো তথ্য আমাদের জানা নেই এবং কেউ গুলিবিদ্ধও হয়নি।
প্রিন্ট