মাগুরার মহম্মদপুরে শুক্রবার বিকেলে বিএনপি’র ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত মিছিল থেকে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা পুলিশের উপর হামলা, সংঘর্ষ ও তাদের ব্যবহৃত একটি পিকআপভ্যান এবং তিনটি মটরসাইকেল ভাংচুর এবং সংঘর্ষ চলাকালিন সময়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের হাতে থানার ওসি তদন্তসহ ৫ পুলিশ অফিসার ও একজন কনেষ্টবেল আহত হওয়ার ঘটনায় মহম্মদপুর থানায় দেড় হাজার নেতা-কর্মীকে আসামি করে শনিবার সকালে মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। এ রিপোর্ট লেখা প্রর্যন্তু পুলিশ ৫জন কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। মামলার গ্রেফতার আতঙ্কে এলাকা ছেড়েছে নেতা-কর্মীরা।
মহম্মদপুর থানার ওসি বোরহান উল ইসলাম বলেন, বিএনপি’র ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার বিকেলে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যক্ষ মৈমুর আলী মৃধা, সদস্য সচিব আক্তারুজ্জামান এবং বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলাম খাঁন বাচ্চুর নেতৃত্বে আমিনুর রহমান কলেজ এলাকা থেকে একটি মিছিল বের হয়ে শহরে প্রবেশ করলে পুলিশের বাধার সম্মুখিন হয়। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে নেতা-কর্মীরা পুলিশের উপর চড়াও হয় হলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় বিএনপি নেতা-কর্মীরা দ্বায়িত্বরত পুলিশের উপর লাঠি সোটা এবং ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে আক্রমন শুরু করেন। পুলিশের ওসি তদন্ত মুন্সি রাসেলসহ এসআই তারেক, এএসআই ফারুক, এএসআই আজিবর, কনেষ্টেবল হাফিজুর রহমান, সুজায়েদ গুরুতর আহত হলে তাদের কে মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ সময় পুলিশের একটি ভ্যান গাড়ি এবং তিনটি মটরসাইকেল ভাংচুর করে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা। আহত পুলিশ কর্মকর্তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য মাগুরা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
বিএনপি’র সাথে পুলিশের এই সংঘর্ষের ঘটনায় শনিবার সকালে দেড় হাজার নেতা-কর্মীকে আসামি করে শনিবার দুপুরে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. বাদশা মিয়া বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ০২/০৯/২০২৩। ধারা- ১৪৩/১৪৭/১৪৮/১৪৯/১৫৩/৩৩২/৩০৭/ ৪২৭/৪১৪। মামলার প্রধান আসামিরা হলেন, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মৈমুর আলী মৃধা, সদস্য সচিব মো. আক্তারুজ্জামান, বিএনপি’র সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম খাঁন বাচ্চু, মাগুরা জেলা বিএনপি যুগ্ম- আহবায়ক কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরীর ছেলে মিঠুন রায় চৌধরী।
এছাড়া অঙ্গ সকল সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ১০১ জনকে তালিকাভূক্ত এবং অজ্ঞাত ১৪ শ’ জনকে আসামি করে এই মামলা দায়ের করা হয়। ঘটনার পর গ্রেফতার আতঙ্কে বিএনপি’র সকল নেতা-কর্মীরা এলাকা ত্যাগ করেছেন। এদিকে বিএনপি’র এই নৃশংস ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দলীয় কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান শনিবার সন্ধায় সাংবাদিকদ সম্মেলন করেন। এ সময় আওয়ামীলীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি বোরহান উল ইসলাম বলেন, পুলিশের উপর হামলা এবং পিকআপ ভ্যান ভাংচুরের ঘটনায় ঘটনার ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক উপাদনবলি আইনে থানায় মামলা হয়েছে। এজাহারভূক্ত ৫ আসামি কে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
প্রিন্ট