ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

সন্তানের খাবার খেয়ে ফেলায় গৃহকর্মীকে হত্যা করে ডলি

-গ্রেফতারকৃত ডলি।

রাজধানীর কলাবাগান থানাধীন ধানমন্ডির সেন্টালরোডের ৭৭ নম্বর বাসার একটি ফ্ল্যাটে ১০ বছরের গৃহকর্মী শিশু হেনাকে হত্যার কারণ জানিয়েছে পুলিশ। খুনি গৃহকর্ত্রী সাথী পারভিন ডলিকে গ্রেফতারের পর হত্যার কারণ জানতে পেরেছে পুলিশ।

রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আশরাফ হোসেন।

পুলিশ জানায়- নিজের সন্তানের মতো রাখবেন বলে গৃহকর্মী হিসেবে হেনাকে নিজের বাসায় এনেছিলেন ডলি। কিন্তু নিজের বাসায় আনার পর থেকে প্রায়সই বিভিন্ন অযুহাতে তাকে নির্যাতন করতেন  গৃহকর্ত্রী সাথী। সর্বশেষ নিজের চার বছরের শিশুর খাবার খেয়ে ফেলায় গৃহকর্মী হেনাকে গলায় পা দিয়ে চেপে ধরে নির্যাতন করে হত্যা করে ডলি।

তিনি বলেন, রাজধানীর কলাবাগানে শিশু গৃহকর্মী হেনা গৃহকর্ত্রী সাথীর বাচ্চার খাবার মাঝে মধ্যে খেয়ে ফেলতো। আর এর জন্য নির্যাতন করে শিশু গৃহকর্মী হেনাকে হত্যা করে গৃহকর্ত্রী সাথী পারভীন ডলি। শিশুটিতে হত্যা করে অত্যন্ত সুচতুর ডলি নিজের তিনটি মোবাইল ফোন বাসায় রেখে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরাফেরা করতে থাকে। পরে একসময় যশোরে চলে যায় সাথী। তার গ্রামের বাড়ি পাবনায়।

ডিসি বলেন, শিশুটিকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে নির্যাতন করা হয়েছে। বাচ্চার খাবার খাওয়ায় শিশুটিকে নির্যাতন করে হেনা। অনেক সময় তার বাচ্চার সঙ্গে খেলাধুলার সময় মারামারি হলে সেটা দেখেও নির্যাতন করতেন গৃহকত্রী। আর নির্যাতনের মাত্রা এমন ছিল যে বিছানায় মলত্যাগ করে ফেলতো।

গৃহকর্মী হেনা ময়মনসিংহ মুক্তগাছা উপজেলা নন্দীবাড়ি গ্রামের মৃত হক মিয়া ও মৃত হাসিনা বেগমের মেয়ে। তিন বছর আগে গৃহকর্ত্রী সাথী আক্তার পারভীন ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় একটি ট্রেনিংয়ে যান। সেখানে হেনাকে দেখেন। তখন তার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন সাথী আক্তার। সেসময় হেনার স্বজনদের গৃহকর্ত্রী সাথী বলেছিলেন- হেনাকে তার নিজের সন্তানের মতো করে রাখবেন।

 

 

এরপর মাস শেষে ২ হাজার টাকা করে হেনার ফুফুর কাছে পাঠাবেন। চার মাস এভাবে টাকা পাঠালেও এরপর থেকে আর কোনো টাকা পাঠাননি। হেনার জন্য টাকা আলাদাভাবে জমিয়ে রাখছেন বলে তখন তাদেরকে জানান। গত ২৬ আগস্ট দুপুরে কলাবাগানের ভূতের গলির একটি বাসা থেকে শিশু গৃহকর্মী হেনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। লাশের সুরতহাল দেখে ধারণা করা হয়- তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় কলাবাগান থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এতে সাথী আক্তার পারভীনকে আসামি করা হয়েছে।

এই ঘটনার পর আত্মগোপনে চলে যায় ডলি। পরে সুযোগ বুঝে যশোরে তার সাবেক স্বামী চিকিৎসকের কাছে যায় ডলি। সেখানে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ডলিকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় সাবেক স্বামী।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

সন্তানের খাবার খেয়ে ফেলায় গৃহকর্মীকে হত্যা করে ডলি

আপডেট টাইম : ০৪:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা ডেস্ক :

রাজধানীর কলাবাগান থানাধীন ধানমন্ডির সেন্টালরোডের ৭৭ নম্বর বাসার একটি ফ্ল্যাটে ১০ বছরের গৃহকর্মী শিশু হেনাকে হত্যার কারণ জানিয়েছে পুলিশ। খুনি গৃহকর্ত্রী সাথী পারভিন ডলিকে গ্রেফতারের পর হত্যার কারণ জানতে পেরেছে পুলিশ।

রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আশরাফ হোসেন।

পুলিশ জানায়- নিজের সন্তানের মতো রাখবেন বলে গৃহকর্মী হিসেবে হেনাকে নিজের বাসায় এনেছিলেন ডলি। কিন্তু নিজের বাসায় আনার পর থেকে প্রায়সই বিভিন্ন অযুহাতে তাকে নির্যাতন করতেন  গৃহকর্ত্রী সাথী। সর্বশেষ নিজের চার বছরের শিশুর খাবার খেয়ে ফেলায় গৃহকর্মী হেনাকে গলায় পা দিয়ে চেপে ধরে নির্যাতন করে হত্যা করে ডলি।

তিনি বলেন, রাজধানীর কলাবাগানে শিশু গৃহকর্মী হেনা গৃহকর্ত্রী সাথীর বাচ্চার খাবার মাঝে মধ্যে খেয়ে ফেলতো। আর এর জন্য নির্যাতন করে শিশু গৃহকর্মী হেনাকে হত্যা করে গৃহকর্ত্রী সাথী পারভীন ডলি। শিশুটিতে হত্যা করে অত্যন্ত সুচতুর ডলি নিজের তিনটি মোবাইল ফোন বাসায় রেখে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরাফেরা করতে থাকে। পরে একসময় যশোরে চলে যায় সাথী। তার গ্রামের বাড়ি পাবনায়।

ডিসি বলেন, শিশুটিকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে নির্যাতন করা হয়েছে। বাচ্চার খাবার খাওয়ায় শিশুটিকে নির্যাতন করে হেনা। অনেক সময় তার বাচ্চার সঙ্গে খেলাধুলার সময় মারামারি হলে সেটা দেখেও নির্যাতন করতেন গৃহকত্রী। আর নির্যাতনের মাত্রা এমন ছিল যে বিছানায় মলত্যাগ করে ফেলতো।

গৃহকর্মী হেনা ময়মনসিংহ মুক্তগাছা উপজেলা নন্দীবাড়ি গ্রামের মৃত হক মিয়া ও মৃত হাসিনা বেগমের মেয়ে। তিন বছর আগে গৃহকর্ত্রী সাথী আক্তার পারভীন ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় একটি ট্রেনিংয়ে যান। সেখানে হেনাকে দেখেন। তখন তার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন সাথী আক্তার। সেসময় হেনার স্বজনদের গৃহকর্ত্রী সাথী বলেছিলেন- হেনাকে তার নিজের সন্তানের মতো করে রাখবেন।

 

 

এরপর মাস শেষে ২ হাজার টাকা করে হেনার ফুফুর কাছে পাঠাবেন। চার মাস এভাবে টাকা পাঠালেও এরপর থেকে আর কোনো টাকা পাঠাননি। হেনার জন্য টাকা আলাদাভাবে জমিয়ে রাখছেন বলে তখন তাদেরকে জানান। গত ২৬ আগস্ট দুপুরে কলাবাগানের ভূতের গলির একটি বাসা থেকে শিশু গৃহকর্মী হেনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। লাশের সুরতহাল দেখে ধারণা করা হয়- তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় কলাবাগান থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এতে সাথী আক্তার পারভীনকে আসামি করা হয়েছে।

এই ঘটনার পর আত্মগোপনে চলে যায় ডলি। পরে সুযোগ বুঝে যশোরে তার সাবেক স্বামী চিকিৎসকের কাছে যায় ডলি। সেখানে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ডলিকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় সাবেক স্বামী।


প্রিন্ট