ফরিদপুরের নগরকান্দায়র তালমায় একটি পোস্টার টাঙানো নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। পোস্টারে সাবেক এক বিএনপি নেতা নিজেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ওই নেতা উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা। যদিও তার দাবি, বিএনপি থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন তিনি।
এই ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা আদালতে মামলাও করেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের এক সহসভাপতি ও এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জেলা কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক বরাবরে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ আমলে নিয়ে বিষয়টি তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছে জেলা কমিটি।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিন আগে তালমা এলাকায় একটি পোস্টার লাগান ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ফিরোজ খান। সেখানে নিজের পরিচয়ে উল্লেখ করেছেন নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টামণ্ডলীর সাবেক সদস্য।
বিএনপি নেতা হয়েও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদবী ব্যবহার করে পোস্টার, লিফলেট ও ব্যানার টাঙানোয় শাস্তি দাবি করে আদালতে মো. ফিরোজ খানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বাবুল আক্তার। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন।
এদিকে এই ঘটনা জানিয়ে ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবরে অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আ. মান্নান মোল্যা ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন মিয়া। জেলা আওয়ামী লীগ সেই অভিযোগ আমলে নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদককে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
অভিযুক্ত ফিরোজ খান জানান, তিনি বিএনপির উপদেষ্টা পদ থেকে ২০১৬ সালে অব্যাহতি নিয়েছেন। এরপর থেকে আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছি। এখন আমাকে বিএনপি নেতা বলা অপরাধের শামিল।
তিনি আরো বলেন, ২০১৬ সালের ১১ মার্চ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভায় জামাল হোসেন মিয়াকে বহিষ্কার করে সেই জায়গায় আমাকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন মিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ একটি সুসংগঠিত রাজনৈতিক দল। কারো মন মতো এখানে কিছু করা যায় না। দলের একটি শক্তিশালী গঠনতন্ত্র রয়েছে, দল চলে সেই গঠনতন্ত্র মোতাবেক। গঠনতন্ত্র মোতাবেক আওয়ামী লীগ থেকে কাউকে বহিষ্কার করা যায় না আবার চাইলেই কাউকে পদ দিয়ে দেয়া যায় না। এজন্য দলীয় প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন দিতে হয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের এক সভায় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন মিয়াকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, ওই সভাতেই মো. ফিরোজ খানকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রস্তাব করে কেন্দ্রে পাঠানো হয়। যদিও কেন্দ্র থেকে এখনো কোন তার কোন ফলাফল পাওয়া যায়নি।
এই বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের কাছে এই ঘটনার প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পরে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রিন্ট