ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo সদরপুরে গৃহবধূকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ, আসামি গ্রেপ্তার Logo গরমে হাতিয়ায় শ্রেণিকক্ষেই অসুস্থ হয়ে পড়ল ৭ শিক্ষার্থী Logo বোয়ালমারীতে জোরপূর্বক বাড়ি ঘর ভাঙচুর ও উচ্ছেদের অভিযোগ Logo বাগাতিপাড়ায় পার্টনার ফিল্ড স্কুল কংগ্রেস অনুষ্ঠিত Logo ঝালকাঠিতে ঋণের টাকার জেরে গরু নিয়ে গেলেন বিএনপি নেতা, বাছুর কোলে আদালতে নারী Logo বিএমডিএ’র এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ভূগর্ভস্থ পানির উপর চাপ কমবে Logo বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেলেন আরও  ২৭ জন Logo চরভদ্রাসনে ডাম্পিং গ্রাউন্ড না থাকায় নদীতে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে, জনদুর্ভোগ চরমে Logo মুকসুদপুরে গ্রাম পুলিশ সদস্যদের ট্রাফিক আইনের প্রশিক্ষণ Logo পরিবেশ অধিদপ্তরের গাড়িচালক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে লাইসেন্স বাণিজ্যের কোটি টাকার অভিযোগ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

জিসিআরজি সভায় প্রধানমন্ত্রী

ভবিষ্যৎ ধকল মোকাবেলায় বৈশ্বিক সহযোগিতা চাই

বাসস

-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেছেন, ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীলতার এই সময়ে ভবিষ্যতের ধকল মোকাবেলায় দুর্বলদের জন্য সহনশীলতা তৈরিতে স্পষ্টত আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আবশ্যক।
তিনি বলেন, প্রলম্বিত যুদ্ধ এবং আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা বিশ্বকে অস্থিতিশীল করে চলেছে। যুদ্ধের প্রতিটি দিন সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে এবং বিশ্বের দূরতম প্রান্তে অনেক জীবন কেড়ে নিচ্ছে এবং ধ্বংস করছে।প্রধানমন্ত্রী গতকাল শুক্রবার গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপের (জিসিআরজি) সভায় বক্তৃতায় এ কথা বলেন। তিনি সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে আমরা আজকে যখন ক্রমবর্ধমান সংকট এবং মানবতার ওপর এর বিধ্বংসী প্রভাব নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছি, তখন ইউক্রেনে সংঘাত চলছে।’ তিনি আরো বলেন, প্রকৃতপক্ষে প্রতিদিন যুদ্ধে নতুন নতুন অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে, যা আরো বেশি ধ্বংস ডেকে আনছে এবং বিশ্বের মানুষের জীবনে মারাত্মক বিরূপ প্রভাব ফেলছে।দারিদ্র্য ও বৈষম্য তীব্রভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দরিদ্র দেশগুলোর ঋণের বোঝা বেড়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এসব সমস্যা এবং অন্যান্য ধাক্কা বিশ্বজুড়ে খাদ্য, শক্তি ও অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়িয়েছে, যার ফলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অগ্রগতি বিলম্ব হচ্ছে।

’ তিনি বলেন, বাংলাদেশ জ্বালানি ও খাদ্য আমদানিকারক দেশ হিসেবে ক্রমবর্ধমান আমদানি ব্যয়, মূল্যস্ফীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের চাপে ভুগছে।এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যতের ধকল মোকাবেলায় সহনশীলতা তৈরি করতে তার কয়েকটি নির্দিষ্ট চিন্তাভাবনা তুলে ধরেন।প্রথমত, শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের জরুরিভাবে একটি সংস্কারকৃত আন্তর্জাতিক আর্থিক কাঠামো প্রয়োজন, যা স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বিনা শর্তে রেয়াতি, স্বল্প মূল্যের, স্বল্প সুদের তহবিলে প্রবেশাধিকারসহ আর্থিক সুবিধা দেবে।’

তিনি বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশগুলোর অবশ্যই জরুরি অবস্থার সময় আইএমএফের এসডিআর তহবিলের ন্যায়সংগত অ্যাকসেসসহ সংকট ও বিপর্যয়কালে তহবিলে সহজ অ্যাকসেস থাকতে হবে।

এ ছাড়া আইএফআই ও এমডিবি থেকে নিম্ন সুদে তহবিল প্রাপ্তির সুযোগ থাকতে হবে।’ 
দ্বিতীয়ত, যে কারণগুলো খাদ্যের মূল্য ও অ্যাকসেসকে প্রভাবিত করে, যেমন রপ্তানি বিধি-নিষেধ, মজুদ ও সরবরাহ চেইন বিকৃতি, এসবের সুরাহা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ প্রসঙ্গে আমরা খাদ্য সরবরাহের উন্নতিতে (জাতিসংঘ) মহাসচিবের বাজার উন্মুক্ত রাখা, রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা অপসারণ এবং খাদ্য মজুদ ছেড়ে দেওয়ার আহ্বানকে পূর্ণ সমর্থন করি।’তৃতীয় পর্যবেক্ষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অভ্যন্তরীণ জ্বালানি সংমিশ্রণ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির মাধ্যমে জ্বালানি আমদানি হ্রাসের পাশাপাশি জ্বালানি শক্তিকে বিচক্ষণতার সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে।

খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা এবং জলবায়ু পরিবর্তন পরস্পর সম্পর্কিত উল্লেখ করে শেখ হাসিনা তাঁর চতুর্থ চিন্তাধারায় বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো জলবায়ুু পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করে, যা প্রাকৃতিক দুর্যোগের পৌনঃপুন্য ও তীব্রতা বাড়ায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটি আবার কৃষি, খাদ্য উৎপাদন এবং মানুষের বাস্তুচ্যুতিকে প্রভাবিত করে। তাই টেকসই জ্বালানি, খাদ্য উৎপাদনে উত্তরণ এবং জলবায়ু পদক্ষেপ অপরিহার্য।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি মনে করেন যে জিসিআরজির তিনটি পলিসি ব্রিফ থেকে এর  সুপারিশসমূহ এবং ‘এ ওয়ার্ল্ড অব ডেট’ শীর্ষক রিপোর্ট চমৎকার, যা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বৈশ্বিক ঐকমত্যকে সহজতর করবে।

পরিশেষে তিনি বলেন, “আমাদের সবাইকে অবশ্যই আমাদের স্বার্থের ‘গুরুত্বপূর্ণ জিজ্ঞাসাসমূহ’ সমুন্নত রাখতে হবে।” বাংলাদেশ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা কঠিন সময়ে জনগণের সহায়তায় তাঁর সরকারের কিছু পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘এতে আমাদের অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর কিছু লক্ষণ প্রকাশ করে, যা আমাদের স্বস্তির অনুভূতি দেয়।’


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

সদরপুরে গৃহবধূকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ, আসামি গ্রেপ্তার

error: Content is protected !!

জিসিআরজি সভায় প্রধানমন্ত্রী

ভবিষ্যৎ ধকল মোকাবেলায় বৈশ্বিক সহযোগিতা চাই

আপডেট টাইম : ০৪:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ জুলাই ২০২৩
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেছেন, ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীলতার এই সময়ে ভবিষ্যতের ধকল মোকাবেলায় দুর্বলদের জন্য সহনশীলতা তৈরিতে স্পষ্টত আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আবশ্যক।
তিনি বলেন, প্রলম্বিত যুদ্ধ এবং আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা বিশ্বকে অস্থিতিশীল করে চলেছে। যুদ্ধের প্রতিটি দিন সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে এবং বিশ্বের দূরতম প্রান্তে অনেক জীবন কেড়ে নিচ্ছে এবং ধ্বংস করছে।প্রধানমন্ত্রী গতকাল শুক্রবার গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপের (জিসিআরজি) সভায় বক্তৃতায় এ কথা বলেন। তিনি সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে আমরা আজকে যখন ক্রমবর্ধমান সংকট এবং মানবতার ওপর এর বিধ্বংসী প্রভাব নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছি, তখন ইউক্রেনে সংঘাত চলছে।’ তিনি আরো বলেন, প্রকৃতপক্ষে প্রতিদিন যুদ্ধে নতুন নতুন অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে, যা আরো বেশি ধ্বংস ডেকে আনছে এবং বিশ্বের মানুষের জীবনে মারাত্মক বিরূপ প্রভাব ফেলছে।দারিদ্র্য ও বৈষম্য তীব্রভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দরিদ্র দেশগুলোর ঋণের বোঝা বেড়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এসব সমস্যা এবং অন্যান্য ধাক্কা বিশ্বজুড়ে খাদ্য, শক্তি ও অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়িয়েছে, যার ফলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অগ্রগতি বিলম্ব হচ্ছে।

’ তিনি বলেন, বাংলাদেশ জ্বালানি ও খাদ্য আমদানিকারক দেশ হিসেবে ক্রমবর্ধমান আমদানি ব্যয়, মূল্যস্ফীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের চাপে ভুগছে।এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যতের ধকল মোকাবেলায় সহনশীলতা তৈরি করতে তার কয়েকটি নির্দিষ্ট চিন্তাভাবনা তুলে ধরেন।প্রথমত, শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের জরুরিভাবে একটি সংস্কারকৃত আন্তর্জাতিক আর্থিক কাঠামো প্রয়োজন, যা স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বিনা শর্তে রেয়াতি, স্বল্প মূল্যের, স্বল্প সুদের তহবিলে প্রবেশাধিকারসহ আর্থিক সুবিধা দেবে।’

তিনি বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশগুলোর অবশ্যই জরুরি অবস্থার সময় আইএমএফের এসডিআর তহবিলের ন্যায়সংগত অ্যাকসেসসহ সংকট ও বিপর্যয়কালে তহবিলে সহজ অ্যাকসেস থাকতে হবে।

এ ছাড়া আইএফআই ও এমডিবি থেকে নিম্ন সুদে তহবিল প্রাপ্তির সুযোগ থাকতে হবে।’ 
দ্বিতীয়ত, যে কারণগুলো খাদ্যের মূল্য ও অ্যাকসেসকে প্রভাবিত করে, যেমন রপ্তানি বিধি-নিষেধ, মজুদ ও সরবরাহ চেইন বিকৃতি, এসবের সুরাহা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ প্রসঙ্গে আমরা খাদ্য সরবরাহের উন্নতিতে (জাতিসংঘ) মহাসচিবের বাজার উন্মুক্ত রাখা, রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা অপসারণ এবং খাদ্য মজুদ ছেড়ে দেওয়ার আহ্বানকে পূর্ণ সমর্থন করি।’তৃতীয় পর্যবেক্ষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অভ্যন্তরীণ জ্বালানি সংমিশ্রণ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির মাধ্যমে জ্বালানি আমদানি হ্রাসের পাশাপাশি জ্বালানি শক্তিকে বিচক্ষণতার সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে।

খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা এবং জলবায়ু পরিবর্তন পরস্পর সম্পর্কিত উল্লেখ করে শেখ হাসিনা তাঁর চতুর্থ চিন্তাধারায় বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো জলবায়ুু পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করে, যা প্রাকৃতিক দুর্যোগের পৌনঃপুন্য ও তীব্রতা বাড়ায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটি আবার কৃষি, খাদ্য উৎপাদন এবং মানুষের বাস্তুচ্যুতিকে প্রভাবিত করে। তাই টেকসই জ্বালানি, খাদ্য উৎপাদনে উত্তরণ এবং জলবায়ু পদক্ষেপ অপরিহার্য।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি মনে করেন যে জিসিআরজির তিনটি পলিসি ব্রিফ থেকে এর  সুপারিশসমূহ এবং ‘এ ওয়ার্ল্ড অব ডেট’ শীর্ষক রিপোর্ট চমৎকার, যা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বৈশ্বিক ঐকমত্যকে সহজতর করবে।

পরিশেষে তিনি বলেন, “আমাদের সবাইকে অবশ্যই আমাদের স্বার্থের ‘গুরুত্বপূর্ণ জিজ্ঞাসাসমূহ’ সমুন্নত রাখতে হবে।” বাংলাদেশ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা কঠিন সময়ে জনগণের সহায়তায় তাঁর সরকারের কিছু পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘এতে আমাদের অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর কিছু লক্ষণ প্রকাশ করে, যা আমাদের স্বস্তির অনুভূতি দেয়।’


প্রিন্ট