ঢাকা , শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মুসলিম স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন ‘সূরা মসজিদ’

মুসলিম স্থাপত্যের এক অন্যতম ঐতিহাসিক নিদর্শন সূরা মসজিদ। দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার হিলির চৌগাছা এলাকার এই মসজিদটির অবস্থান। এই মসজিদটির নির্মাণ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে।

স্থানীয়দের মতে, আধ্যাত্মিক ভাবে মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। আবার এলাকার কিছু সংখ্যক লোকদের মতে, মোগল আমলে বাংলার নবাব সুজ এটি নির্মাণ করেছেন। তবে মসজিদে ৪০০ বছর আগের পুরনো কারুকাজ ও স্থাপত্যশৈলী দেখে ধারণা করা যায় ষোল শতকে সুলতানি আমলে হোসেন শাহের শাসনকালে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদটির পাশেই রয়েছে ৩৫০-২০০ গজ আয়তন বিশিষ্ট একটি সুবিশাল দীঘি। মসজিদটি চার ফুট উঁচু একটি সমতল মাচার উপর নির্মিত।

মসজিদের দেওয়ালে রয়েছে খোদাই করা দৃষ্টিনন্দন নকশা যা খুব সহজেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে দর্শনার্থীদের। মসজিদের প্রধান কক্ষের ভেতরের আয়তন ১৬.১৬ ফুট। মসজিদের উপরিভাগে রয়েছে এক গম্বুজ বিশিষ্ট নামাজ কক্ষ এবং পূর্বভাগে রয়েছে ছোট তিন গম্বুজ বিশিষ্ট বারান্দা।

মসজিদের উত্তর, দক্ষিণ এবং পূর্ব দিকে একটি করে প্রবেশপথ রয়েছে সেইসাথে প্রবেশপথের চৌকাঠগুলো পাথরের তৈরি। প্রতিদিন কেউ আসে মসজিদের সৌন্দর্য দেখতে আবার অনেকে আসে মনের আশা পূরণের জন্য মানত করতে। ঐতিহাসিক এই মসজিদটির নকশা শৈলী ও গাঠনিক সৌন্দর্য দেখার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে ছুটে আসেন অসংখ্য পর্যটক। এই সূরা মসজিদটি কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাড়িয়ে আছে।

কিভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে সড়ক ও রেলপথে দিনাজপুরে যাওয়া যায়। সড়কপথে ঢাকা থেকে যেতে হলে সর্বপ্রথম রাজধানীর আসাদগেট, টেকনিক্যাল, গাবতলি সহ বেশ কিছু স্থানে বাবলূ এন্টারপ্রাইজ, নাবিল এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী, এস কে ট্রাভেলস এবং হানিফ পরিবহনের বেশ কিছু বাস দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সড়কপথে যেতে সময় লাগবে সাত থেকে আট ঘণ্টা। ভাড়া পড়বে জনপ্রতি সর্বনিম্ন ৬০০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০০ টাকা।

রেলপথে ঢাকা থেকে যেতে হলে প্রথমে ঢাকার বিমান বন্দর রেলওয়ে স্টেশন অথবা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে আসতে হবে। সেখান থেকে দ্রুতযান আন্তঃনগর এক্সপ্রেস এবং একতা আন্তঃনগর এক্সপ্রেস এই দুইটি ট্রেন ঢাকা থেকে দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। রেলপথে যেতে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা সময় লাগবে। ভাড়া পড়বে শ্রেণিভেদে জনপ্রতি সর্বনিম্ন ৩৬০ থেকে সর্বোচ্চ ৯৮৪ টাকা।

দিনাজপুর আসার পর দিনাজপুরের জেলা সদর থেকে সিএনজি করে ঘোড়াঘাট উপজেলায় যেতে হবে। জেলা সদর থেকে ঘোড়াঘাট উপজেলার দুরত্ব ৮৯.৯ কি. মি.। সময় লাগবে দুই ঘণ্টা ত্রিশ মিনিট। তারপর ঘোড়াঘাট উপজেলা থেকে রিক্সা বা ইজিবাইক করে যাওয়া যাবে কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে থাকা সূরা মসজিদে। আর আপনারা যদি চান তাহলে জেলা সদর থেকে সিএনজি রিজার্ভ করে সরাসরি যাওয়া যাবে ঘোড়াঘাট উপজেলার সূরা মসজিদে।

সতর্কতা: মসজিদের পাশে সুবিশাল দীঘির চার পাশে রয়েছে কবরস্থান। অতএব, পবিত্রতা বজায় রাখুন।

(সংগৃহীত)

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বাগাতিপাড়ায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে দোয়া প্রার্থী মোঃ সেলিম রেজা

error: Content is protected !!

মুসলিম স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন ‘সূরা মসজিদ’

আপডেট টাইম : ১২:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ এপ্রিল ২০২১

মুসলিম স্থাপত্যের এক অন্যতম ঐতিহাসিক নিদর্শন সূরা মসজিদ। দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার হিলির চৌগাছা এলাকার এই মসজিদটির অবস্থান। এই মসজিদটির নির্মাণ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে।

স্থানীয়দের মতে, আধ্যাত্মিক ভাবে মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। আবার এলাকার কিছু সংখ্যক লোকদের মতে, মোগল আমলে বাংলার নবাব সুজ এটি নির্মাণ করেছেন। তবে মসজিদে ৪০০ বছর আগের পুরনো কারুকাজ ও স্থাপত্যশৈলী দেখে ধারণা করা যায় ষোল শতকে সুলতানি আমলে হোসেন শাহের শাসনকালে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদটির পাশেই রয়েছে ৩৫০-২০০ গজ আয়তন বিশিষ্ট একটি সুবিশাল দীঘি। মসজিদটি চার ফুট উঁচু একটি সমতল মাচার উপর নির্মিত।

মসজিদের দেওয়ালে রয়েছে খোদাই করা দৃষ্টিনন্দন নকশা যা খুব সহজেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে দর্শনার্থীদের। মসজিদের প্রধান কক্ষের ভেতরের আয়তন ১৬.১৬ ফুট। মসজিদের উপরিভাগে রয়েছে এক গম্বুজ বিশিষ্ট নামাজ কক্ষ এবং পূর্বভাগে রয়েছে ছোট তিন গম্বুজ বিশিষ্ট বারান্দা।

মসজিদের উত্তর, দক্ষিণ এবং পূর্ব দিকে একটি করে প্রবেশপথ রয়েছে সেইসাথে প্রবেশপথের চৌকাঠগুলো পাথরের তৈরি। প্রতিদিন কেউ আসে মসজিদের সৌন্দর্য দেখতে আবার অনেকে আসে মনের আশা পূরণের জন্য মানত করতে। ঐতিহাসিক এই মসজিদটির নকশা শৈলী ও গাঠনিক সৌন্দর্য দেখার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে ছুটে আসেন অসংখ্য পর্যটক। এই সূরা মসজিদটি কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাড়িয়ে আছে।

কিভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে সড়ক ও রেলপথে দিনাজপুরে যাওয়া যায়। সড়কপথে ঢাকা থেকে যেতে হলে সর্বপ্রথম রাজধানীর আসাদগেট, টেকনিক্যাল, গাবতলি সহ বেশ কিছু স্থানে বাবলূ এন্টারপ্রাইজ, নাবিল এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী, এস কে ট্রাভেলস এবং হানিফ পরিবহনের বেশ কিছু বাস দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সড়কপথে যেতে সময় লাগবে সাত থেকে আট ঘণ্টা। ভাড়া পড়বে জনপ্রতি সর্বনিম্ন ৬০০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০০ টাকা।

রেলপথে ঢাকা থেকে যেতে হলে প্রথমে ঢাকার বিমান বন্দর রেলওয়ে স্টেশন অথবা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে আসতে হবে। সেখান থেকে দ্রুতযান আন্তঃনগর এক্সপ্রেস এবং একতা আন্তঃনগর এক্সপ্রেস এই দুইটি ট্রেন ঢাকা থেকে দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। রেলপথে যেতে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা সময় লাগবে। ভাড়া পড়বে শ্রেণিভেদে জনপ্রতি সর্বনিম্ন ৩৬০ থেকে সর্বোচ্চ ৯৮৪ টাকা।

দিনাজপুর আসার পর দিনাজপুরের জেলা সদর থেকে সিএনজি করে ঘোড়াঘাট উপজেলায় যেতে হবে। জেলা সদর থেকে ঘোড়াঘাট উপজেলার দুরত্ব ৮৯.৯ কি. মি.। সময় লাগবে দুই ঘণ্টা ত্রিশ মিনিট। তারপর ঘোড়াঘাট উপজেলা থেকে রিক্সা বা ইজিবাইক করে যাওয়া যাবে কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে থাকা সূরা মসজিদে। আর আপনারা যদি চান তাহলে জেলা সদর থেকে সিএনজি রিজার্ভ করে সরাসরি যাওয়া যাবে ঘোড়াঘাট উপজেলার সূরা মসজিদে।

সতর্কতা: মসজিদের পাশে সুবিশাল দীঘির চার পাশে রয়েছে কবরস্থান। অতএব, পবিত্রতা বজায় রাখুন।

(সংগৃহীত)