ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কুষ্টিয়ায় অবৈধ ক্লিনিকগুলি প্রসূতি মায়েদের মৃত্যু ফাঁদ

কুষ্টিয়ায় অবৈধ ক্লিনিকগুলি প্রসূতি মায়েদের মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। অধিকাংশ প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলো চিকিৎসা সেবাকে কেবলমাত্র মুনাফা আয়ের সহজ পথ হিসেবে নেওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। চিকিৎসার নামে প্রসূতি মায়ের মৃত্যু নিত্যদিনের ঘটনা হলেও এ বিষয়টি প্রতিকারে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কার্যত কোনো পদক্ষেপ না নেওয়াকে দুষছেন ভুক্তভোগীরা।

এদিকে, চিকিৎসার অবহেলায় একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও এসব ক্লিনিক বন্ধে দায় নিচ্ছে না কেউ। অবৈধ সিজারে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় এতিম শিশুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে জেলায় বলে অভিযোগ করেছেন মারা যাওয়া প্রসূতিদের স্বজনরা।

কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের প্রথম ৫ মাসে অথ্যাৎ জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ৬৩১২টি শিশুর জন্ম হয়েছে। এসময় সন্তান প্রসব করতে গিয়ে মারা গেছেন সাতজন মা। এছাড়া, ২০২১ সালে প্রসবকালীন  প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২৫জন। ২০২২ সালে সংখ্যাটি দাঁড়ায় ২৭ জনে। মৃত্যুর এসব ঘটনার ৯০ ভাগই ঘটেছে প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে।

২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে এ বছরের ১৩ জুন পর্যন্ত মাতৃ মৃত্যুর ঘটনাগুলি অনুসন্ধানকালে বিভিন্ন ক্লিনিকে ঝরে যাওয়া ৮ জন প্রসূতি মায়ের মৃত্যু ঘটনা পর্যালোচনায় জেলার স্বাস্থ্য সেবার ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে। যারা মারা গেছেন তাদের সবাই অদক্ষ ও অপেশাদার ভুয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের হাতে কথিত সিজারের শিকার হয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সদ্যজাত শিশুকে রেখে গেছেন। অপর একজন প্রসূতি শিশুসহ মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন বলে অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, চলতি বছরের ৩ জুন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহে ‘নাহার ক্লিনিকে’ সদর উপজেলার দোস্তপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শিল্পী খাতুন (২২) নামের এক প্রসূতি অদক্ষ ভুয়া নার্সের হাতে সিজারের শিকার হয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যান। অভিযোগ আছে এই ‘নাহার (প্রাঃ) ক্লিনিকে’ সার্বক্ষনিক ডাক্তার হিসেবে ডা. আক্তারুজ্জামান ফিরোজ নামে যিনি কাজ করেন তিনি কার্যত একজন মাদকআশক্ত ভুয়া চিকিৎসক। ২০১৫  সালের জানুয়ারিতে মিরপুর থানা পুলিশের হাতে তিনি ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া ইসলামিয়া এন্ড ডায়াগনস্টিক হাসপাতাল নামে একটি অবৈধ ক্লিনিকের ওয়ার্ড বয় এবং আয়া মিলে সদর উপজেলার বটতৈল গ্রামের জহুরুল ইসলামের স্ত্রী রিমা খাতুন (২৮) নামে এক প্রসূতির স্বাভাবিক ডেলিভারি করাতে যান। এসময় তারা টেনে শিশুটিকে মায়ের পেট থেকে বের করতে পারলেও প্রসূতির ইউটেরাস ছিড়ে ফেলেন। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রিমা খাতুনসহ শিশুটি মারা যায়। একইভাবে ২ মার্চ ভেড়ামারা ‘সাদিয়া ক্লিনিকে’ নাসিমা নামের প্রসূতি, ২০২১ সালের ৯ জুন ‘কুষ্টিয়া সনো হাসপাতালে’ নাসরিন নাহার রিপা (২১) নামের প্রসূতি, ২০২১ সালের ১ অক্টোবর কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ‘সেবা ক্লিনিকে’ তুলিকা বেগম (২৫), ২০২০ সালের ১ আগষ্ট কুমারখালি বাঁশগ্রামের আকবরের স্ত্রী তানিয়া খাতুন (২২) ‘কুষ্টিয়া ইসলামিয়া হাসপাতালে’, ১ সেপ্টেম্বর কুমারখালি উপজেলার সোন্দাহ গ্রামের শাপলা খাতুন (২২) কুষ্টিয়া শহরের কাষ্টম মোড়স্থ ‘শাপলা ক্লিনিকে’ এবং একই বছর ৯ মার্চ কুষ্টিয়া শহরের পেয়ারাতলায় ‘পদ্মা প্রাইভেট হাসপাতালে’ কুমারখালী উপজেলার সাওতা গ্রামের আব্দুর রশিদের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন (২৪) অবৈধ সিজারিয়ানে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যান বলে অভিযোগ রয়েছে।

মারা যাওয়া প্রসূতী ফাতেমার স্বামী আব্দুর রশিদ অভিযোগ করে জানান, আমার স্ত্রীর প্রসব যন্ত্রণা শুরু হলে শহরের কুষ্টিয়া শহরের পেয়ারাতলার ‘পদ্মা প্রাইভেট হাসপাতালে’ ভর্তি করি। কিন্তু চিকিৎসকদের অবহেলা এবং অস্ত্রপাচারের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে আমার স্ত্রী মারা যান।

কুমারখালি বাঁশগ্রামের আকবরের স্ত্রী তানিয়া খাতুন ‘কুষ্টিয়া ইসলামিয়া হাসপাতালে’ মারা যান। আকবর আলীর অভিযোগ, প্রসব বেদনা শুরু হলে কুষ্টিয়া ইসলামিয়া হাসপাতালে আমি আমার স্ত্রীকে ভর্তি করেছিলাম। সেখানে সিজারিয়ন করতে গিয়ে চিকিৎসকরা তাকে মেরে ফেলেছেন। আমি আশা করছি, প্রসূতি মৃত্যু রোধে প্রশাসন অবৈধ ক্লিনিক বন্ধে যাবতীয় ব্যবস্থা নেবে।

এবিষয়ে, স্বাচিপ ও কুষ্টিয়া বিএমএ নেতা ডা. আমিনুল হক রতন মুঠোফোনে আলাপকালে বলেন, ‘প্রসূতি মায়েদের চিকিৎসা বিষয়টি বেশ স্পর্শকাতর। এসব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের অধিকতর সতর্কতা জরুরি। সামান্য অবহেলা প্রাণহানির কারণ হতে পারে। কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন অবৈধ ক্লিনিকগুলোতে মা ও শিশুর যথাযথ পরিচর্যা ও চিকিৎসার কোন ব্যবস্থাই কার্যত নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওইসব হাসপাতালে কিছু অসচেতন রোগীরা গিয়ে নানাভাবে প্রতারিত হচ্ছেন বলে আমরা জানি। এসব সমস্যা নিরসনে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগকে আরও দায়িত্বশীল ও যত্নবান হওয়া জরুরি।’

 

 

কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘চিকিৎসায় অবহেলা জনিত কারণে প্রসূতি মায়ের মৃত্যু ঘটনার সংবাদ পেলেই আমরা সেখানে ছুটে যাই। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অভিযোগের সত্যতাও পাই। সেক্ষেত্রে ক্লিনিক বা হাসপাতাল বন্ধের সুপারিশ করি। সর্বশেষ মিরপুর উপজেলার পোড়াদহে ‘নাহার ক্লিনিকে’ চিকিৎসা অবহেলায় শিল্পী খাতুন নামের এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ওই ক্লিনিকের জন্যই। হাসপাতালটিতে এ জাতীয় চিকিৎসা দেওয়ার মতো প্রয়োজনীয় কোনো আয়োজন ও অনুমোদন কোনটাই ছিল না।’


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

কুষ্টিয়ায় অবৈধ ক্লিনিকগুলি প্রসূতি মায়েদের মৃত্যু ফাঁদ

আপডেট টাইম : ১১:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ জুন ২০২৩
ইসমাইল হোসেন বাবু, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :

কুষ্টিয়ায় অবৈধ ক্লিনিকগুলি প্রসূতি মায়েদের মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। অধিকাংশ প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলো চিকিৎসা সেবাকে কেবলমাত্র মুনাফা আয়ের সহজ পথ হিসেবে নেওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। চিকিৎসার নামে প্রসূতি মায়ের মৃত্যু নিত্যদিনের ঘটনা হলেও এ বিষয়টি প্রতিকারে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কার্যত কোনো পদক্ষেপ না নেওয়াকে দুষছেন ভুক্তভোগীরা।

এদিকে, চিকিৎসার অবহেলায় একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও এসব ক্লিনিক বন্ধে দায় নিচ্ছে না কেউ। অবৈধ সিজারে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় এতিম শিশুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে জেলায় বলে অভিযোগ করেছেন মারা যাওয়া প্রসূতিদের স্বজনরা।

কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের প্রথম ৫ মাসে অথ্যাৎ জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ৬৩১২টি শিশুর জন্ম হয়েছে। এসময় সন্তান প্রসব করতে গিয়ে মারা গেছেন সাতজন মা। এছাড়া, ২০২১ সালে প্রসবকালীন  প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২৫জন। ২০২২ সালে সংখ্যাটি দাঁড়ায় ২৭ জনে। মৃত্যুর এসব ঘটনার ৯০ ভাগই ঘটেছে প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে।

২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে এ বছরের ১৩ জুন পর্যন্ত মাতৃ মৃত্যুর ঘটনাগুলি অনুসন্ধানকালে বিভিন্ন ক্লিনিকে ঝরে যাওয়া ৮ জন প্রসূতি মায়ের মৃত্যু ঘটনা পর্যালোচনায় জেলার স্বাস্থ্য সেবার ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে। যারা মারা গেছেন তাদের সবাই অদক্ষ ও অপেশাদার ভুয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের হাতে কথিত সিজারের শিকার হয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সদ্যজাত শিশুকে রেখে গেছেন। অপর একজন প্রসূতি শিশুসহ মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন বলে অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, চলতি বছরের ৩ জুন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহে ‘নাহার ক্লিনিকে’ সদর উপজেলার দোস্তপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শিল্পী খাতুন (২২) নামের এক প্রসূতি অদক্ষ ভুয়া নার্সের হাতে সিজারের শিকার হয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যান। অভিযোগ আছে এই ‘নাহার (প্রাঃ) ক্লিনিকে’ সার্বক্ষনিক ডাক্তার হিসেবে ডা. আক্তারুজ্জামান ফিরোজ নামে যিনি কাজ করেন তিনি কার্যত একজন মাদকআশক্ত ভুয়া চিকিৎসক। ২০১৫  সালের জানুয়ারিতে মিরপুর থানা পুলিশের হাতে তিনি ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া ইসলামিয়া এন্ড ডায়াগনস্টিক হাসপাতাল নামে একটি অবৈধ ক্লিনিকের ওয়ার্ড বয় এবং আয়া মিলে সদর উপজেলার বটতৈল গ্রামের জহুরুল ইসলামের স্ত্রী রিমা খাতুন (২৮) নামে এক প্রসূতির স্বাভাবিক ডেলিভারি করাতে যান। এসময় তারা টেনে শিশুটিকে মায়ের পেট থেকে বের করতে পারলেও প্রসূতির ইউটেরাস ছিড়ে ফেলেন। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রিমা খাতুনসহ শিশুটি মারা যায়। একইভাবে ২ মার্চ ভেড়ামারা ‘সাদিয়া ক্লিনিকে’ নাসিমা নামের প্রসূতি, ২০২১ সালের ৯ জুন ‘কুষ্টিয়া সনো হাসপাতালে’ নাসরিন নাহার রিপা (২১) নামের প্রসূতি, ২০২১ সালের ১ অক্টোবর কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ‘সেবা ক্লিনিকে’ তুলিকা বেগম (২৫), ২০২০ সালের ১ আগষ্ট কুমারখালি বাঁশগ্রামের আকবরের স্ত্রী তানিয়া খাতুন (২২) ‘কুষ্টিয়া ইসলামিয়া হাসপাতালে’, ১ সেপ্টেম্বর কুমারখালি উপজেলার সোন্দাহ গ্রামের শাপলা খাতুন (২২) কুষ্টিয়া শহরের কাষ্টম মোড়স্থ ‘শাপলা ক্লিনিকে’ এবং একই বছর ৯ মার্চ কুষ্টিয়া শহরের পেয়ারাতলায় ‘পদ্মা প্রাইভেট হাসপাতালে’ কুমারখালী উপজেলার সাওতা গ্রামের আব্দুর রশিদের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন (২৪) অবৈধ সিজারিয়ানে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যান বলে অভিযোগ রয়েছে।

মারা যাওয়া প্রসূতী ফাতেমার স্বামী আব্দুর রশিদ অভিযোগ করে জানান, আমার স্ত্রীর প্রসব যন্ত্রণা শুরু হলে শহরের কুষ্টিয়া শহরের পেয়ারাতলার ‘পদ্মা প্রাইভেট হাসপাতালে’ ভর্তি করি। কিন্তু চিকিৎসকদের অবহেলা এবং অস্ত্রপাচারের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে আমার স্ত্রী মারা যান।

কুমারখালি বাঁশগ্রামের আকবরের স্ত্রী তানিয়া খাতুন ‘কুষ্টিয়া ইসলামিয়া হাসপাতালে’ মারা যান। আকবর আলীর অভিযোগ, প্রসব বেদনা শুরু হলে কুষ্টিয়া ইসলামিয়া হাসপাতালে আমি আমার স্ত্রীকে ভর্তি করেছিলাম। সেখানে সিজারিয়ন করতে গিয়ে চিকিৎসকরা তাকে মেরে ফেলেছেন। আমি আশা করছি, প্রসূতি মৃত্যু রোধে প্রশাসন অবৈধ ক্লিনিক বন্ধে যাবতীয় ব্যবস্থা নেবে।

এবিষয়ে, স্বাচিপ ও কুষ্টিয়া বিএমএ নেতা ডা. আমিনুল হক রতন মুঠোফোনে আলাপকালে বলেন, ‘প্রসূতি মায়েদের চিকিৎসা বিষয়টি বেশ স্পর্শকাতর। এসব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের অধিকতর সতর্কতা জরুরি। সামান্য অবহেলা প্রাণহানির কারণ হতে পারে। কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন অবৈধ ক্লিনিকগুলোতে মা ও শিশুর যথাযথ পরিচর্যা ও চিকিৎসার কোন ব্যবস্থাই কার্যত নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওইসব হাসপাতালে কিছু অসচেতন রোগীরা গিয়ে নানাভাবে প্রতারিত হচ্ছেন বলে আমরা জানি। এসব সমস্যা নিরসনে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগকে আরও দায়িত্বশীল ও যত্নবান হওয়া জরুরি।’

 

 

কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘চিকিৎসায় অবহেলা জনিত কারণে প্রসূতি মায়ের মৃত্যু ঘটনার সংবাদ পেলেই আমরা সেখানে ছুটে যাই। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অভিযোগের সত্যতাও পাই। সেক্ষেত্রে ক্লিনিক বা হাসপাতাল বন্ধের সুপারিশ করি। সর্বশেষ মিরপুর উপজেলার পোড়াদহে ‘নাহার ক্লিনিকে’ চিকিৎসা অবহেলায় শিল্পী খাতুন নামের এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ওই ক্লিনিকের জন্যই। হাসপাতালটিতে এ জাতীয় চিকিৎসা দেওয়ার মতো প্রয়োজনীয় কোনো আয়োজন ও অনুমোদন কোনটাই ছিল না।’


প্রিন্ট