এবারও কুষ্টিয়ায় লক্ষাধিক দেশীয় গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এখন বিক্রির জন্য শেষ সময়ের প্রস্তুতি চলছে।
সারাদেশে কোরবানির গরুর চাহিদার একটি মোটা অংশ পূরণ করে কুষ্টিয়াঞ্চল। কোরবানির ঈদের সময় দেশীয় গরু হিসেবে কুষ্টিয়ার গরুর রয়েছে বিশেষ চাহিদা। রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বড় শহরে বিক্রির জন্য পশু নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। তবে ভারত থেকে গরু আসার খবরে ভাল দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন খামারিরা।
এখানকার খামারিরা কোরবানি ঈদের পরে কমদামে ছোট গরু কিনে নিজেদের খামারে লালন-পালন করে পরের ঈদে বিক্রি করেন।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর বালিয়াপাড়া পশুর হাট গরুর হাটের জন্য বিখ্যাত। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে জমে উঠেছে এ হাট। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা পশু কিনতে আসছেন হাটে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। সরজমিনে হাট ঘুরে দেখা যায়, এবার হাটে উঠেছে ফ্রিজিয়ান, জার্সি জাতের গরু। আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। ক্রেতারা বলেন, এবার খামারিরা গরুর দাম অনেক বেশি চাচ্ছেন। বিশেষ করে ছোট গরুর দাম অনেক বেশি।
তবে চাহিদা অনুযায়ী গরুর কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ার দাবি খামারিদের। তারা বলেন, এবছর গরুর খাবার, ওষুধসহ অন্যান্য আনুসাঙ্গিক খরচ বেড়েছে। এতে বেড়েছে উৎপাদন ব্যয়। তবে সে অনুযায়ী মিলছে না পশুর দাম।
সম্প্রতি দেশীয় গরুর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কুষ্টিয়ার ঘরে ঘরে, খামারে সম্পূর্ণ পারিবারিক আদলে গরু তাজা করা হয়েছে। কুষ্টিয়ার এসব দেশীয় গরুর চাহিদা ঢাকা-চট্টগ্রামের বাজারে। একটু সচ্ছলতার স্বপ্ন নিয়ে বাড়ির প্রায় সকল সদস্যই গরু লালন পালনের সাথে যুক্ত থাকে। সারা বছর ধরে গরুর পেছনে অর্থ ও শ্রম দিয়ে গরু প্রতি ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা লাভবান হওয়ার আশা করছেন এ অঞ্চলের খামারিরা।
খামারিরা বলছেন, ঈদকে সামনে নিয়ে যদি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে গরু আসে তবে এবার তারা চরম লোকসানের মুখে পড়বেন। তারা বলছেন দেশের গরু দিয়েই কোরবানির চাহিদা মেটানো সম্ভব, তাই এই সময়ে বর্ডার দিয়ে যেন গরু না আসে এমন আকুতি তাদের।
মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ ডি এম জহিরুল ইসলাম।তিনি বলেন, গবাদি পশু পরিবহন ও ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। একইসাথে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে।
জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, জেলার ছয়টি উপজেলার ১ হাজার খামারে ও অগণিত কৃষকের গোয়ালে ৯০ হাজার দেশীয় গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়াও ৬৭ হাজার ছাগল ও কিছু মহিষও প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে এ সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। যা কুষ্টিয়ার কোরবানির চাহিদা পুরণ করে সিংহভাগ গরু রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাহিদা পূরণ করবে। তবে ভারত থেকে গরু আসার খবরে চরম শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। লোকসান হলে কুষ্টিয়ার খামারিরা আগামীতে গরু পালন থেকে সরে আসবে।
প্রিন্ট