বিরল রোগে আক্রান্ত সেই দুই ভাইয়ের যাবতীয় চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়ে আবারও মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মÐলীর সদস্য, ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, দানবীর আলহাজ্ব কাজী সিরাজুল ইসলাম।
১৭ জুন শনিবার সকালে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার শুকুরহাটা গ্রামে বিরল রোগে আক্রান্ত দুই ভাইকে দেখতে যান তিনি। এর আগেই গণমাধ্যমে খবরটি প্রচার হলে স্বেচ্ছায় তিনি তাদের চিকিৎসার দায়িত্বভার গ্রহণের আশ্বাস দেন । শনিবার সকালে আক্রান্ত শিশু দুটিকে দেখতে গিয়ে পরিবারের নিটক তাদের শারীরিক কষ্টের কথা শুনে তিনি আবেগে আপ্লূত হয়ে পড়েন। এবং যত দ্রুত সম্ভব তাদের ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে বলেন। এ সময় তিনি শিশুদুটির পিতা মো. হাবিবুর রহমান এর হাতে প্রাথমিকভাবে ২০ হাজার টাকা তুলে দেন তিনি।
কাজী সিরাজুল ইসলাম জানান “ইতোপূর্বে এমন রোগাক্রান্ত কাউকে আমি দেখিনি। এদের কষ্ট সত্যি অবর্ণনীয়। শুধু তারাই নয় পরিবারের সবাই অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার। আমি চাই বিরল রোগে আক্রান্ত দুই ভাইকে প্রথমে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে তাদের চিকিৎসা শুরু করতে। দেশে চিকিৎসা না হলে প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারত বা অন্যত্রে পাঠানো হবে।”
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির সদস্য আসাদুল করীম। কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য ও প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকার প্লানিং এডিটর মো. আরিফ হাসান, আলফাডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মো. আলী আকসাদ ঝন্টু, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক হাসমত হোসেন তালুকদার তপন, আলফাডাঙ্গা ইউপি সদস্য (মহিলা) মর্জিনা বেগম, ইমরান হোসেন, কাজী মোহাম্মদ হানিফ, সাজ্জাদ হোসেন পিকুল প্রমুখ।
উল্লেখ্য ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের শুকুরহাটা গ্রামের চা দোকানি হাবিবুর রহমান ও রাবেয়া বেগম দম্পতির দুই সন্তান আবির হুসাইন নাঈম (১৪) ও শিশু মো. নূর হোসেন (৪) জন্মের পর থেকেই বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে জীবন পার করছে। জন্মের পাঁচ মিনিট পর থেকেই হাত-পা, মাথা, চোখ, মুখসহ সারা শরীরের ত্বক ফেটে ফেটে রক্ত ঝরে। দেখতে মনে হয় আগুনে ঝলসে গেছে। হয় প্রচন্ড রকম চুলকানি। চুলকাতে চুলকাতে রক্ত বের হতে থাকলে দেখা দেয় প্রবল শ্বাসকষ্ট। অনেক সময় হাত-পা কুঁকড়ে যায়। কিছুতেই সহ্য করতে পারে না গরম, ৩-৪ মিনিট পরপর শরীরে ঢালতে হয় পানি।
বিরল রোগে আক্রান্ত এই দুই শিশুকে ঢাকাসহ ভারতের বিভিন্ন স্থানের অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত রোগটিই শনাক্ত করা যায়নি।দেশ-বিদেশে দুই সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা। এখন ভিটা ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই। অর্থাভাবে শিশু দুইটির সবরকম চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে বিষয়টি জানার পরে এগিয়ে আসেন কাজী সিরাজুল ইসলাম।
প্রিন্ট