মাতৃত্বকালীন ভাতা, কর্মসৃজন প্রকল্পসহ প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্প টাকার বিনিময়ে বেচাকেনা হচ্ছে কুষ্টিয়া ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নে। এহেন ঘটনায় ফূঁসে উঠেছে এলাকার জনগণ।
কর্মসৃজন প্রকল্পের টাকা নেয়ার আগে জনপ্রতি ২ হাজার থেকে ১৫ শ টাকা দিতে হয় ইউপি সদস্য জেসমিন খাতুনকে। আর মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড পেতে জনপ্রতি তাকে দিতে হয় ৫/৬ হাজার টাকা। এমন অভিযোগ জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ৭.৮.৯ সাধারণ ওয়ার্ডের জেসমিন খাতুনের বিরুদ্ধে। আর তার দুর্নীতিতে সহযোগীতা করেন তার স্বামী কামাল হোসেন।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রাম পর্যায়ের মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নত করতে কর্মসৃজন প্রকল্প বা ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্প চালু করেছেন। অপরদিকে গ্রামের দরিদ্র মায়েদের গর্ভকালীন সমেয় পুষ্টিকর খাবার খেতে মাতৃত্বকালীন ভাতার ব্যবস্থা করেছেন। সাধারণত মায়েদের পেটে ৩ সপ্তাহের বাচ্চা আসার পর থেকে জেলা ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উদ্যোগে স্ব স্ব ইউনিয়ন, উপজেলা, ওয়ার্ড পর্যায়ে পৌর কাউন্সিলর ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বারদের প্রস্তুতকৃত তালিকা অনুযায়ী মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের যাছাই-বাছাই পুর্বক বিনামুল্যে গরিব-দুস্থ্য মহিলাদের গর্ভকালীন সময়ে ভাতা পেতে কার্ড বিতরণ করা হয়ে থাকে।
কিন্তু এখানে ব্যতয় ঘটেছে।
উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নে মহিলা সদস্য জেসমিন খাতুন উল্লেখিত ওয়ার্ডের বেশ কয়েকজন কর্মজীবি মহিলাদের কাছ থেকে জনপ্রতি ১৫শ থেকে ২ হাজার টাকা নিয়ে কর্মসৃজন প্রকল্পে কাজ করা মহিলাদের টাকা দিয়ে থাকেন। এবং মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড পেতে মহিলাও তাদের স্বামীর কাছ থেকে জনপ্রতি ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন।
গ্রামীন মানুষের জীবন-যাত্রা উন্নত, নিরাপদ করা লক্ষ্যে সরকার প্রতিবছর বিপুল পরিমান অর্থব্যয় করে এসব কর্মসূচী অব্যাহত রেখেছেন। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে দরিদ্র, অসচ্ছল, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ভাগ্য পরিবর্তনের পরিবর্তে পকেট ভর্তি হচ্ছে নারী ইউপি সদস্য জেসমিন খাতুনের স্বামী কামালের মত প্রতারকদের। তবে এ সব অভিযোগ অস্বিকার করেছেন ইউপি সদস্য জেসমিন খাতুন।
তিনি বলেন, চেয়ারম্যানের প্রতি বিশ্বাস করে একটা কার্ড একজন মানুষকে দিয়েছেন। তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন ভাই আপনি প্রতিটি মেম্বারকে জাচাই করেন। দেখেন প্রত্যোকের মধ্যে সমস্য আছে। আমাকে যখন জিজ্ঞেস করছেন আমি সবার কথা বলে দেব। বিষয়টা এড়িয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো হাসানুজ্জামান জানান, যার যার দায়িত্ব তার তার। যাচাই-বাছাই করে দেয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিনা মমতাজ মুঠোফোনে জানান, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।
সরকারের সকল কর্মসূচীর আওতায় গ্রামের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা অপরিহার্য। কিন্তু কতিপয় দুর্নীতিবাজ জনপ্রতিনিধির কারনে তা বিফলে যাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি সচেতন মহলের।
প্রিন্ট