নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
৯ মাস পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বিএনপি নেতার মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে ফরিদপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে রাব্বির উপস্থিতিতে মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
.
ওই বিএনপি নেতার নাম জান শরীফ মিঠু। তিনি ফরিদপুর জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। মরদেহ ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
.
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের পর দুপুর নাগাদ ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পৌঁছে। জান শরীফ মিঠু সস্ত্রীক ঢাকার উত্তরায় পরিবার নিয়ে থাকতেন। ২০০৬ সালে নওগাঁর মেয়ে রোহেদুন সেজবা ইভার সঙ্গে বিয়ে হয় মিঠুর। মাহাবী শরীফ জারা নামে তাদের একটি মেয়ে রয়েছে।
.
পরিবার ও পুলিশ সূত্র জানায়, গত বছরের ১৯ জুলাই শুক্রবার দুপুরে ঢাকার বনশ্রীতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ফরিদপুর জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জান শরীফ মিঠু (৪৬)। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়া মিঠু ওইদিন দুপুরে বনশ্রী জামে মসজিদে জুমার নামাজ পড়ে ৪-৫জন সঙ্গীর সঙ্গে ফিরছিলেন। পথে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করা হলে তিনি আহত হন। তাকে উদ্ধার করে পাশের হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
.
এ ঘটনায় গত বছরের ৯ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ১৪৮ জনের নামোল্লেখ করে ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি মামলা করেন মিঠুর স্ত্রী রোহেদুন সেজবা ইভা। ওই মামলায় মাস দেড়েক আগে আদালত কবর থেকে জান শরীফ মিঠুর মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন। তবে সে সময় মিঠুর পরিবার কবর থেকে উত্তোলনে রাজি না হওয়ায় এ কাজ বিলম্বিত হয়।
জান শরীফ মিঠুর স্ত্রী রোহেদুন সেজবা ইভা বলেন, স্বামী হত্যার বিচার পেতে হলে এছাড়া কোনো ভিন্ন উপায় ছিলো না। তাই সবার অনুরোধে আমরা রাজি হই। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পরে বলা হয় আজ আর ময়নাতদন্ত সম্ভব নয়। শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
.
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফরিদপুর জেলার সদস্যসচিব সোহেল রানা বলেন, খবর পেয়ে আমরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাই। কর্তৃপক্ষকে বলি যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ছাড়াই তারা কেনো কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করলো? এটি শহীদের মরদেহের প্রতি অবমাননা। পরে বাইরের একটি হাসপাতাল থেকে মেশিন এনে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়
.
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. ইউনুস আলী জানান, এটির জন্য পোর্টেবল এক্সরে মেশিন দরকার যা আমাদের হাসপাতালে ছিলো না। পরে এ নিয়ে একটু ঝামেলা হলে প্রিন্সিপাল স্যারের উপস্থিতিতে ঝামেলার নিরসন করা হয়। বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
প্রিন্ট