ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ

মুক্ত সাংবাদিকতাপরিপন্থী সব আইন স্থগিতের দাবি

দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ মুক্ত সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে প্রক্রিয়াধীন আইন স্থগিতের দাবি জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ।

আজ মঙ্গলবার বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সকল প্রকার মানবাধিকারের চালিকা শক্তি’ শীর্ষক এই আলোচনাসভায় এ দাবি জানায় বক্তারা।

অনুষ্ঠানে সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম জানান, আমরা সম্পাদক পরিষদ থেকে চারটি দাবি জানাচ্ছি। দাবিগুলোর হলো-স্বাধীন ও মুক্ত সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে যেসব আইন প্রক্রিয়াধীন আছে, সেই প্রক্রিয়া এখনই স্থগিত করা। আইনগুলোর মধ্যে যেসব ধারা স্বাধীন সাংবাদিকতাকে ব্যাহত করতে পারে সেগুলো আইন থেকে বাদ দেওয়া। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে। আর যদি তা বাতিলে সরকারের কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকে, তাহলে এমন একটি ধারা যুক্ত করতে হবে, যেখানে বলা থাকবে, এই আইন গণমাধ্যম, স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য প্রযোজ্য নয়।

সাংবাদিকতার কারণে আজ পর্যন্ত যেসব মামলা করা হয়েছে সেগুলো প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তারকৃত সাংবাদিকদের মুক্তি দিতে হবে। যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে, সেটি সরকার উদ্যোগী হয়ে যেন একেবারেই মুছে ফেলে। সাংবাদিকতার সুরক্ষার জন্য আইন হতে পারে যা সংবিধানের চেতনার মধ্যে রয়েছে।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, আজকে আমরা বলছি গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ শুধু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করছে। কিন্তু কতটুকু মালিকপক্ষ করছে কতটুকু করপোরেট কোম্পানিগুলো করছে তা দেখি না। টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিগুলো দ্বারা গ্রাহকরা বিভিন্নভাবে ভুক্তভোগী হচ্ছে কিন্তু আপনারা তা লেখেন না। কারণ তারা আপনাদের বিজ্ঞাপন দেয়। কিন্তু এখানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যুক্ত না। তবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পর্যালোচনা ও সংশোধন দরকার। অনতিবিলম্বে তথ্যমন্ত্রীর কথা শুনে কোন কোন জায়গায় সংশোধন লাগবে সেগুলো করে ফেলা দরকার। এটা ঝুলিয়ে রাখা ঠিক না।

দেশ রূপান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা মামুন বলেন, আমরা মিডিয়া অনেক ক্ষেত্রে মত প্রকাশ করতে পারছি না বলে আমাদের নির্ভরতার জায়গা হারাচ্ছে। এখন দেখা যাচ্ছে, টিভিতে বা পত্রিকায় কি বলছে এটা অনেকের কাছে গুরুত্ব বহন করে না। বরং সোশাল মিডিয়াতে কে কি বলছে সেগুলোকে বিশ্বাস করতে শিখেছে। আমরা এখন যাদের জন্য সংবাদ প্রকাশ করছি তাদের কাছে যখন গুরুত্ব বহন করছে না তখন মূলধারার সংবাদমাধ্যম গুরুত্ব হারিয়ে ফেলছে। আর এটার জন্য সবচেয়ে বড় কারণ ডিজিটাল আইন। আমাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা এত সীমিত যার ফলে আমাদের মত প্রকাশ করতে পারি না। আর এখন যারা সাংবাদিকতা করছে সবাই এই সমস্যায় ভুগছে। তাই এখন আমাদের সবাইকে সাংবাদিকতার অধিকারের ক্ষেত্রে একটা জায়গায় এক থাকা উচিত। যেন আমরা নিজেরা মত প্রকাশ করতে পারি। আমরা মূলধারার সম্পর্কটা বজায় রাখতে পারি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের গ্রহণযোগ্যতা কমার কারণে অনেক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। তাই সাংবাদিকতা করলে সাংবাদিকতার মতোই করতে হবে। আর যারা সাংবাদিকতার নামে প্রচার করতে এসেছে, তাদের প্রচারণায় চলে যাওয়া উচিত। সবাই একটা জায়গায় এক থাকা উচিত।

আলোচনা অনুষ্ঠান সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনা আরও বক্তব্য রাখেন ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, সমকাল সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন, নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

এবার ২১ দিনের মধ্যে জবাব দিতে আদানিকে সমন পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

error: Content is protected !!

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ

মুক্ত সাংবাদিকতাপরিপন্থী সব আইন স্থগিতের দাবি

আপডেট টাইম : ০৪:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ মে ২০২৩
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা ডেস্ক :

দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ মুক্ত সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে প্রক্রিয়াধীন আইন স্থগিতের দাবি জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ।

আজ মঙ্গলবার বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সকল প্রকার মানবাধিকারের চালিকা শক্তি’ শীর্ষক এই আলোচনাসভায় এ দাবি জানায় বক্তারা।

অনুষ্ঠানে সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম জানান, আমরা সম্পাদক পরিষদ থেকে চারটি দাবি জানাচ্ছি। দাবিগুলোর হলো-স্বাধীন ও মুক্ত সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে যেসব আইন প্রক্রিয়াধীন আছে, সেই প্রক্রিয়া এখনই স্থগিত করা। আইনগুলোর মধ্যে যেসব ধারা স্বাধীন সাংবাদিকতাকে ব্যাহত করতে পারে সেগুলো আইন থেকে বাদ দেওয়া। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে। আর যদি তা বাতিলে সরকারের কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকে, তাহলে এমন একটি ধারা যুক্ত করতে হবে, যেখানে বলা থাকবে, এই আইন গণমাধ্যম, স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য প্রযোজ্য নয়।

সাংবাদিকতার কারণে আজ পর্যন্ত যেসব মামলা করা হয়েছে সেগুলো প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তারকৃত সাংবাদিকদের মুক্তি দিতে হবে। যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে, সেটি সরকার উদ্যোগী হয়ে যেন একেবারেই মুছে ফেলে। সাংবাদিকতার সুরক্ষার জন্য আইন হতে পারে যা সংবিধানের চেতনার মধ্যে রয়েছে।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, আজকে আমরা বলছি গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ শুধু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করছে। কিন্তু কতটুকু মালিকপক্ষ করছে কতটুকু করপোরেট কোম্পানিগুলো করছে তা দেখি না। টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিগুলো দ্বারা গ্রাহকরা বিভিন্নভাবে ভুক্তভোগী হচ্ছে কিন্তু আপনারা তা লেখেন না। কারণ তারা আপনাদের বিজ্ঞাপন দেয়। কিন্তু এখানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যুক্ত না। তবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পর্যালোচনা ও সংশোধন দরকার। অনতিবিলম্বে তথ্যমন্ত্রীর কথা শুনে কোন কোন জায়গায় সংশোধন লাগবে সেগুলো করে ফেলা দরকার। এটা ঝুলিয়ে রাখা ঠিক না।

দেশ রূপান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা মামুন বলেন, আমরা মিডিয়া অনেক ক্ষেত্রে মত প্রকাশ করতে পারছি না বলে আমাদের নির্ভরতার জায়গা হারাচ্ছে। এখন দেখা যাচ্ছে, টিভিতে বা পত্রিকায় কি বলছে এটা অনেকের কাছে গুরুত্ব বহন করে না। বরং সোশাল মিডিয়াতে কে কি বলছে সেগুলোকে বিশ্বাস করতে শিখেছে। আমরা এখন যাদের জন্য সংবাদ প্রকাশ করছি তাদের কাছে যখন গুরুত্ব বহন করছে না তখন মূলধারার সংবাদমাধ্যম গুরুত্ব হারিয়ে ফেলছে। আর এটার জন্য সবচেয়ে বড় কারণ ডিজিটাল আইন। আমাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা এত সীমিত যার ফলে আমাদের মত প্রকাশ করতে পারি না। আর এখন যারা সাংবাদিকতা করছে সবাই এই সমস্যায় ভুগছে। তাই এখন আমাদের সবাইকে সাংবাদিকতার অধিকারের ক্ষেত্রে একটা জায়গায় এক থাকা উচিত। যেন আমরা নিজেরা মত প্রকাশ করতে পারি। আমরা মূলধারার সম্পর্কটা বজায় রাখতে পারি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের গ্রহণযোগ্যতা কমার কারণে অনেক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। তাই সাংবাদিকতা করলে সাংবাদিকতার মতোই করতে হবে। আর যারা সাংবাদিকতার নামে প্রচার করতে এসেছে, তাদের প্রচারণায় চলে যাওয়া উচিত। সবাই একটা জায়গায় এক থাকা উচিত।

আলোচনা অনুষ্ঠান সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনা আরও বক্তব্য রাখেন ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, সমকাল সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন, নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক।


প্রিন্ট