ঢাকা , শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ভূরুঙ্গামারীতে ইসলামী আন্দোলন এর অফিস উদ্বোধন Logo বোয়ালমারীতে মৎস্যজীবীদের মাঝে গবাদি পশু বিতরণ অনিয়মের অভিযোগ Logo মামলার পাহাড় কমাতে কলকাতা হাইকোর্টের মিডিয়েশন কমিটির পদক্ষেপ Logo কুষ্টিয়ায় তামাকের গাছ কাটার সময় বজ্রপাতে কলেজ ছাত্র নিহত Logo রূপগঞ্জে ছাত্রদল নেতা পাভেল হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন Logo নাগরপুরে সরকারি বইসহ ট্রাক জব্দ, প্রধান শিক্ষক পলাতক Logo ছাত্রীকে লাইব্রেরিতে ডেকে কুপ্রস্তাব দিলেন প্রধান শিক্ষক Logo চরভদ্রাসনে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে এইচবিবি রাস্তা নির্মাণে এলাকাবাসীর অভিযোগ Logo তানোরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এক পরিবারকে একঘরে Logo সদরপুরে গৃহবধূকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ, আসামি গ্রেপ্তার
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা

রূপগঞ্জে বালুনদীর উপর চনপাড়া সেতু যেন মরনফাঁদ!

রিপন সরকারঃ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বালু নদীর উপর চরম ঝুঁকিতে রয়েছে চনপাড়া সেতু। যে কোনো সময় এই সেতু ধ্বসে পড়ার সঙ্কায় রয়েছেন যানবাহন চালক ও পথচারীরা। সেতুটি এত ঝুঁকিপূর্ণ থাকার পরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়সাড়াভাবে এড়িয়ে যাচ্ছেন। এই সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ হলেও প্রতিনিয়ন ভারী যানবাহন চলাচল করছে। এ সেতুটি ধ্বসে পড়লে জনভোগান্তি চরম আকার ধারণ করবে। সেতুটি নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোন মাথাব্যাথা নেই। এতে সেতু ধসে পড়ে যে কোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। তাতে প্রাণহানির আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।

 

সেতুর তিনটি পিলার, ভিম ও রেলিংয়ের বিভিন্ন স্থানে ভেঙে পড়েছে। গাড়ি পারাপারের সময় সেতু কেঁপে উঠে। সেতুটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সেতুর এ অবস্থা হলেও তা মেরামত কিংবা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সেতুর পাশে নতুন করে আরো একটি সেতু নির্মাণ করার কথা থাকলেও নানা জটিলতায় তা আর হয়ে উঠেনি। তবে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল নিষেধ করা হয়েছে বলে জানালেন উপজেলা প্রকৌশলী।

১৯৯১ সালে প্রায় ১ কোটি দশ লাখ টাকা ব্যয়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া-ডেমরা এলাকায় বালুনদের উপর এ সেতুটি নির্মান করা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ১১০ ফুট, প্রস্থ ১২ ফুট। রাজধানী ঢাকার সাথে পার্শ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও গাজীপুরের কালিগঞ্জের যোগাযোগের সুবিদার্থে বালু নদের উপর ডেমড়া-রূপগঞ্জ-কালিগঞ্জ সড়কের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া এলাকায় নির্মিত হয় এ সেতু। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে ৬০ বছর মেয়াদী চুক্তিতে নির্মান করা হলেও ৪৪ বছরেই সেতুটির ভঙ্গুর দশা। যে কোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

২০০০ সালের দিকে একবার সেতুটির নিচে ফাটল দেখা দেয়। ওই সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। পরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদ্যোগে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করায় সে যাত্রায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় মানুষ।

 

পুনরায় ২০১২ সালে সেতুর পিলার ও বিভিন্ন অংশের পলেস্তার খসে পড়ে। খবর পেয়ে সেতুটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে বড় যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সেতুর সামনে সাইন বোর্ড টানিয়ে দেয়া হয়। বেশ কিছু দিন ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও পরে পুনরায় ভারী যানবাহনসহ সব ধরনের যান চলাচল শুরু করে। নদীতে চলমান ট্রলারের ধাক্কায় সেতুর চারটি পিলার, ভিম ও রেলিংয়ের বিভিন্ন অংশের পলেস্তার ভেঙ্গে পড়েছে।

 

স্থানীয় এলাকাবাসী ও পরিবহন চালকরা জানান, বালু নদীর দুই পাড়ের এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য, হাটবাজার, কৃষিকাজ ও লেখাপড়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ডেমরা-চনপাড়ার এই সেতু। ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাই স্কুল, মাদরাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। এই সেতুর অবস্থা এখন অত্যন্ত নড়বড়ে। যানবাহন চলাচল করছে ঝুকি নিয়ে। প্রতিদিন এ সেতু দিয়ে হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। এছাড়া এ সেতুটিই রাজধানী ঢাকার সঙ্গে রূপগঞ্জের পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। জোড়াতালি দিয়ে কোনোমতে লোকজন পারাপারের উপযোগী করে রাখা হয়েছে। জনস্বার্থে দ্রুত সেতুটি পূণঃনির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া দাবি স্থানীয় এলাকাবাসীর।

 

এ ব্যাপারে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ডেমড়া-চনপাড়া সেতুটি র্দীঘ দিন ধরে ঝুঁকিপূর্ন অবস্থায় রয়েছে। আমাকে এই সেতু দিয়েই চলাচল করতে হয়। এটা তো আমার নিজেরই পথ। আমি নিজেই তো এর ভুক্তভোগী। নতুন করে সেতু নির্মাণের জন্য বারবার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। দ্রুত সেতুটি পূণঃনির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হোক।

এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আক্তার হোসেন বলেন, চনপাড়া-ডেমরা সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ। বিকল্প সেতু নতুন করে নির্মাণের চেষ্ঠা চলছে। এছাড়াও বিআইডব্লিউ’র আপত্তির কারনেও এ সেতুর নির্মাণ কাজে বিঘ্ন হচ্ছে। সেতুটি ভেঙ্গে পড়ার আগেই দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুটি সংস্কার অথবা বিকল্প সেতু নির্মান করা হবে-এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

ভূরুঙ্গামারীতে ইসলামী আন্দোলন এর অফিস উদ্বোধন

error: Content is protected !!

যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা

রূপগঞ্জে বালুনদীর উপর চনপাড়া সেতু যেন মরনফাঁদ!

আপডেট টাইম : ০৪:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
রিপন সরকার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি :

রিপন সরকারঃ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বালু নদীর উপর চরম ঝুঁকিতে রয়েছে চনপাড়া সেতু। যে কোনো সময় এই সেতু ধ্বসে পড়ার সঙ্কায় রয়েছেন যানবাহন চালক ও পথচারীরা। সেতুটি এত ঝুঁকিপূর্ণ থাকার পরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়সাড়াভাবে এড়িয়ে যাচ্ছেন। এই সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ হলেও প্রতিনিয়ন ভারী যানবাহন চলাচল করছে। এ সেতুটি ধ্বসে পড়লে জনভোগান্তি চরম আকার ধারণ করবে। সেতুটি নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোন মাথাব্যাথা নেই। এতে সেতু ধসে পড়ে যে কোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। তাতে প্রাণহানির আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।

 

সেতুর তিনটি পিলার, ভিম ও রেলিংয়ের বিভিন্ন স্থানে ভেঙে পড়েছে। গাড়ি পারাপারের সময় সেতু কেঁপে উঠে। সেতুটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সেতুর এ অবস্থা হলেও তা মেরামত কিংবা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সেতুর পাশে নতুন করে আরো একটি সেতু নির্মাণ করার কথা থাকলেও নানা জটিলতায় তা আর হয়ে উঠেনি। তবে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল নিষেধ করা হয়েছে বলে জানালেন উপজেলা প্রকৌশলী।

১৯৯১ সালে প্রায় ১ কোটি দশ লাখ টাকা ব্যয়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া-ডেমরা এলাকায় বালুনদের উপর এ সেতুটি নির্মান করা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ১১০ ফুট, প্রস্থ ১২ ফুট। রাজধানী ঢাকার সাথে পার্শ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও গাজীপুরের কালিগঞ্জের যোগাযোগের সুবিদার্থে বালু নদের উপর ডেমড়া-রূপগঞ্জ-কালিগঞ্জ সড়কের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া এলাকায় নির্মিত হয় এ সেতু। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে ৬০ বছর মেয়াদী চুক্তিতে নির্মান করা হলেও ৪৪ বছরেই সেতুটির ভঙ্গুর দশা। যে কোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

২০০০ সালের দিকে একবার সেতুটির নিচে ফাটল দেখা দেয়। ওই সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। পরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদ্যোগে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করায় সে যাত্রায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় মানুষ।

 

পুনরায় ২০১২ সালে সেতুর পিলার ও বিভিন্ন অংশের পলেস্তার খসে পড়ে। খবর পেয়ে সেতুটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে বড় যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সেতুর সামনে সাইন বোর্ড টানিয়ে দেয়া হয়। বেশ কিছু দিন ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও পরে পুনরায় ভারী যানবাহনসহ সব ধরনের যান চলাচল শুরু করে। নদীতে চলমান ট্রলারের ধাক্কায় সেতুর চারটি পিলার, ভিম ও রেলিংয়ের বিভিন্ন অংশের পলেস্তার ভেঙ্গে পড়েছে।

 

স্থানীয় এলাকাবাসী ও পরিবহন চালকরা জানান, বালু নদীর দুই পাড়ের এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য, হাটবাজার, কৃষিকাজ ও লেখাপড়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ডেমরা-চনপাড়ার এই সেতু। ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাই স্কুল, মাদরাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। এই সেতুর অবস্থা এখন অত্যন্ত নড়বড়ে। যানবাহন চলাচল করছে ঝুকি নিয়ে। প্রতিদিন এ সেতু দিয়ে হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। এছাড়া এ সেতুটিই রাজধানী ঢাকার সঙ্গে রূপগঞ্জের পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। জোড়াতালি দিয়ে কোনোমতে লোকজন পারাপারের উপযোগী করে রাখা হয়েছে। জনস্বার্থে দ্রুত সেতুটি পূণঃনির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া দাবি স্থানীয় এলাকাবাসীর।

 

এ ব্যাপারে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ডেমড়া-চনপাড়া সেতুটি র্দীঘ দিন ধরে ঝুঁকিপূর্ন অবস্থায় রয়েছে। আমাকে এই সেতু দিয়েই চলাচল করতে হয়। এটা তো আমার নিজেরই পথ। আমি নিজেই তো এর ভুক্তভোগী। নতুন করে সেতু নির্মাণের জন্য বারবার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। দ্রুত সেতুটি পূণঃনির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হোক।

এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আক্তার হোসেন বলেন, চনপাড়া-ডেমরা সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ। বিকল্প সেতু নতুন করে নির্মাণের চেষ্ঠা চলছে। এছাড়াও বিআইডব্লিউ’র আপত্তির কারনেও এ সেতুর নির্মাণ কাজে বিঘ্ন হচ্ছে। সেতুটি ভেঙ্গে পড়ার আগেই দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুটি সংস্কার অথবা বিকল্প সেতু নির্মান করা হবে-এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।


প্রিন্ট