ঢাকা , শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

চেয়ারম্যান-মেম্বরের প্রভাব বিস্তার

গোপালগঞ্জে দুই লাখ টাকায় নারী কেলেঙ্কারি ধামাচাপা

গোপালগঞ্জের একটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান -মেম্বর প্রভাব বিস্তার করে আলোচিত একটি নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি ভিকটিম পরিবারকে স্থানীয় থানা ও আদালতে যেতে দেয়নি ওই জনপ্রতিনিধিরা। এছাড়াও নাম মাত্র শালিস বসিয়ে অপরাধীর কোন প্রকার বিচার না করে ভিকটিম পরিবারকে ২ লাখ টাকা জরিমানা দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে অপরাধীকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ১২ নং উলপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের উলপুর পূর্বপাড়া গ্ৰামে।

সরেজমিনে গিয়ে ভিকটিম পরিবার ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ৫ এপ্রিল রাতে আনুমানিক ৯ টার সময় উলপুর গ্ৰামের ইউসুফ শেখের ছেলে বক্কার শেখ ২৫ ও একই এলাকার ফায়েক মোল্লার মেয়ে ফাতেমা খানমকে বাড়ির পাশের একটি ঝোপের মধ্যে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে ওই এলাকার রাকিব নামের এক যুবক। পরে বিষয়টি ছেলে- মেয়ের উভয় পরিবারের মুরব্বিদের জানানো হয়। পাশাপাশি ঘটনাটি এলাকায় ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ছেলে-মেয়ে উভয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক থাকার কথা শিকার করে এবং মেয়েটি জানান বক্কার তাকে বিয়ে করবে বলে আস্বস্ত করে দীর্ঘদিন ধরে মেলা মেশা করে আসছে। ঘটনাটির সত্যতা থাকায় একপর্যায়ে ছেলের পরিবার মেয়েকে পূত্র বধু করার কথা বলে মেয়ের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে ৩ দিনের সময় নেয়। পরবর্তিতে ছেলের পরিবার কৌশল করে গোপনে ছেলেকে অন্য জায়গায় বিয়ে দেয় এবং উলপুর ইউনিয়নের প্রভাবশালী চেয়ারম্যান বাবুল মোল্লা ও ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বর মনির হোসেনের সঙ্গে গোপন চুক্তি করে ভিকটিম পরিবারকে আইনি পদক্ষেপ না নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করান। এরপর পুরো ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ভিকটিম পরিবারকে ২ লাখ টাকা দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দেয় চেয়ারম্যান বাবুল মোল্লা, মেম্বর মনির হোসেনসহ এলাকার কয়েকজন ঘুষখোর মাতব্বর।

ভিকটিম পরিবারের নিকট আত্মীয় ও প্রতিবেশী খাদিজা বেগম সাংবাদিকদের জানান, ভিকটিম ফাতেমা আমার নাতি হয়, সে খুব সহজ সরল, ওর সরলতার সুযোগ নিয়ে বক্কার শেখ বিয়ের প্রলোভন দিয়ে দীর্ঘদিন মেলামেশা করে আমার নাতির সম্মান নষ্ট করেছে। গত বুধবার রাতে এলাকার একটি ছেলে ওদের আপত্তিকর অবস্থায় ওদের হাতে নাতে ধরেছে। ঘটনাটি এখন এলাকায় ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ছেলের পরিবার মেয়েটিকে মেনে নেওয়ার কথা বলে প্রতারনা করে গোপনে অন্য যায়গায় বিয়ে দিয়েছে। এখন মেয়েটির কি উপায় হবে। ভিকটিম ফাতেমা খানমের পিতা ফায়েক মোল্লা ও মা কুঠি বেগম জানান, চেয়ারম্যান মেম্বর মিলে শালিস করে আমাদের আইনে যেতে নিষেধ করেছে, আমার মেয়ের ইজ্জত বাবদ ২ লাখ টাকা জরিমানা দিতে চেয়েছে। এবিষয়ে আমাদের কোন মতামতের গুরুত্ব দেয়নি তারা। আমরা তো এলাকার দূর্বল ও অসহায়, আমাদের প্রতিবাদ করার ক্ষমতা নাই।

এলাকাবাসী জানিয়েছে ভিকটিম পরিবারটি দরিদ্র ও অসহায় হওয়ায় জনপ্রতিনিধি ও অপরাধী পরিবারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে পারছেনা। এলাকাবাসী আরো জানান, চেয়ারম্যান বাবুল, মেম্বর মনির হোসেন ও তার কিছু অনুসারিরা ইউনিয়ন ব্যপি ব্যপক অপশালিস, সরকারি যায়গা দখলসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি করছে।

এবিষয়ে অভিযুক্ত বক্কার শেখের পিতা ইউসুফ শেখ বলেন, আমি কিছু বলতে পারবোনা চেয়ারম্যান বাবুল ও মনির মেম্বর ঘটনাটি মিটমাট করেছে।

প্রভাব বিস্তার করে শালিস করার বিষয়ে জানতে চেয়ারম্যান বাবুল মোল্লার মুঠোফোনে বারবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। ইউপি সদস্য মনির হোসেন মুঠোফোনে বলেন, এখন ঈদের সময় কোন কথা বলবো না ঈদের পরে দেখা করে কথা বলবো।

ই-মেইলে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে প্রতারনা করা বক্কার শেখের ছবি সংযুক্ত করা হলো।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

error: Content is protected !!

চেয়ারম্যান-মেম্বরের প্রভাব বিস্তার

গোপালগঞ্জে দুই লাখ টাকায় নারী কেলেঙ্কারি ধামাচাপা

আপডেট টাইম : ০৭:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৩
মুন্সী সাদেকুর রহমান শাহীন, গোপালগঞ্জ অফিস :

গোপালগঞ্জের একটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান -মেম্বর প্রভাব বিস্তার করে আলোচিত একটি নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি ভিকটিম পরিবারকে স্থানীয় থানা ও আদালতে যেতে দেয়নি ওই জনপ্রতিনিধিরা। এছাড়াও নাম মাত্র শালিস বসিয়ে অপরাধীর কোন প্রকার বিচার না করে ভিকটিম পরিবারকে ২ লাখ টাকা জরিমানা দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে অপরাধীকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ১২ নং উলপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের উলপুর পূর্বপাড়া গ্ৰামে।

সরেজমিনে গিয়ে ভিকটিম পরিবার ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ৫ এপ্রিল রাতে আনুমানিক ৯ টার সময় উলপুর গ্ৰামের ইউসুফ শেখের ছেলে বক্কার শেখ ২৫ ও একই এলাকার ফায়েক মোল্লার মেয়ে ফাতেমা খানমকে বাড়ির পাশের একটি ঝোপের মধ্যে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে ওই এলাকার রাকিব নামের এক যুবক। পরে বিষয়টি ছেলে- মেয়ের উভয় পরিবারের মুরব্বিদের জানানো হয়। পাশাপাশি ঘটনাটি এলাকায় ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ছেলে-মেয়ে উভয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক থাকার কথা শিকার করে এবং মেয়েটি জানান বক্কার তাকে বিয়ে করবে বলে আস্বস্ত করে দীর্ঘদিন ধরে মেলা মেশা করে আসছে। ঘটনাটির সত্যতা থাকায় একপর্যায়ে ছেলের পরিবার মেয়েকে পূত্র বধু করার কথা বলে মেয়ের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে ৩ দিনের সময় নেয়। পরবর্তিতে ছেলের পরিবার কৌশল করে গোপনে ছেলেকে অন্য জায়গায় বিয়ে দেয় এবং উলপুর ইউনিয়নের প্রভাবশালী চেয়ারম্যান বাবুল মোল্লা ও ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বর মনির হোসেনের সঙ্গে গোপন চুক্তি করে ভিকটিম পরিবারকে আইনি পদক্ষেপ না নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করান। এরপর পুরো ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ভিকটিম পরিবারকে ২ লাখ টাকা দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দেয় চেয়ারম্যান বাবুল মোল্লা, মেম্বর মনির হোসেনসহ এলাকার কয়েকজন ঘুষখোর মাতব্বর।

ভিকটিম পরিবারের নিকট আত্মীয় ও প্রতিবেশী খাদিজা বেগম সাংবাদিকদের জানান, ভিকটিম ফাতেমা আমার নাতি হয়, সে খুব সহজ সরল, ওর সরলতার সুযোগ নিয়ে বক্কার শেখ বিয়ের প্রলোভন দিয়ে দীর্ঘদিন মেলামেশা করে আমার নাতির সম্মান নষ্ট করেছে। গত বুধবার রাতে এলাকার একটি ছেলে ওদের আপত্তিকর অবস্থায় ওদের হাতে নাতে ধরেছে। ঘটনাটি এখন এলাকায় ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ছেলের পরিবার মেয়েটিকে মেনে নেওয়ার কথা বলে প্রতারনা করে গোপনে অন্য যায়গায় বিয়ে দিয়েছে। এখন মেয়েটির কি উপায় হবে। ভিকটিম ফাতেমা খানমের পিতা ফায়েক মোল্লা ও মা কুঠি বেগম জানান, চেয়ারম্যান মেম্বর মিলে শালিস করে আমাদের আইনে যেতে নিষেধ করেছে, আমার মেয়ের ইজ্জত বাবদ ২ লাখ টাকা জরিমানা দিতে চেয়েছে। এবিষয়ে আমাদের কোন মতামতের গুরুত্ব দেয়নি তারা। আমরা তো এলাকার দূর্বল ও অসহায়, আমাদের প্রতিবাদ করার ক্ষমতা নাই।

এলাকাবাসী জানিয়েছে ভিকটিম পরিবারটি দরিদ্র ও অসহায় হওয়ায় জনপ্রতিনিধি ও অপরাধী পরিবারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে পারছেনা। এলাকাবাসী আরো জানান, চেয়ারম্যান বাবুল, মেম্বর মনির হোসেন ও তার কিছু অনুসারিরা ইউনিয়ন ব্যপি ব্যপক অপশালিস, সরকারি যায়গা দখলসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি করছে।

এবিষয়ে অভিযুক্ত বক্কার শেখের পিতা ইউসুফ শেখ বলেন, আমি কিছু বলতে পারবোনা চেয়ারম্যান বাবুল ও মনির মেম্বর ঘটনাটি মিটমাট করেছে।

প্রভাব বিস্তার করে শালিস করার বিষয়ে জানতে চেয়ারম্যান বাবুল মোল্লার মুঠোফোনে বারবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। ইউপি সদস্য মনির হোসেন মুঠোফোনে বলেন, এখন ঈদের সময় কোন কথা বলবো না ঈদের পরে দেখা করে কথা বলবো।

ই-মেইলে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে প্রতারনা করা বক্কার শেখের ছবি সংযুক্ত করা হলো।


প্রিন্ট