ঢাকা , শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo পাবনার চাটমোহরে ভর্তুকি মূল্যে কম্বাইন হার্ভেস্টার বিতরণ Logo বারান্দায় টিনের ছাউনির নিচে চলছে ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা Logo বিদেশী পিস্তল ও ম্যাগাজিন সহ ০১ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ Logo চরভদ্রাসন জমে উঠেছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, ভোট প্রার্থনায় ব্যাস্ত প্রার্থীরা Logo সালথায় বালু উত্তোলন ও বনাঞ্চল উজাড় করে মাটি বিক্রির দায়ে জরিমানা Logo তানোরে হিমাগারে রাখা আলুতে গাছ Logo জমি বাড়ি থেকেও আবাসন ঘর বাগিয়ে নিলেন খইমদ্দিন Logo নাগেশ্বরীতে ফার্নিচার শ্রমিক ইউনিয়নের মে দিবস পালিত Logo মুকসুদপুরে হিট স্ট্রোকে কৃষকের মৃত্যু Logo সুবর্ণচরে সংখ্যালঘুর উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

নিশ্চিত করলেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা

মাটি খুঁড়ে পাওয়া মানব কঙ্কাল রাজাকারদের

-স্বাধীনতা বিরোধীদের লাশের কঙ্কাল।

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা পরিষদের ভেতরে মাটি খোঁড়ার সময় উদ্ধার হওয়া মানব কঙ্কাল একাত্তরের স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকারদের বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বীরমুক্তিযোদ্ধারা। ৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেলে মাগুরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ সরেজমিনে আসলে বীরমুক্তিযোদ্ধারা এই তথ্য জানান। ২১ জন রাজাকারকে মতান্তরে ২৩ জনকে হত্যার পর সেখানে পুতে দেওয়া হয়। মাটি খোঁড়ার সময় পাওয়া কিছু হাড়গোড়, মাথার খুলি ও অন্যান্য অংশ তাদরেই বলে বীরমুক্তিযোদ্ধাগণ বর্ণনা দেন।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকালে উপজেলা পরিষদ অভ্যন্তরে মাটি খোঁড়ার সময় দুইটি লাশের হাড়গোড় (কঙ্কাল) উঠে আসে। ধারণা করা হয় এসব কঙ্কাল ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরমুক্তিযোদ্ধাদের আক্রোমণে নিহত পাকিস্তানি দোসর ও রাজাকারদের। একাত্তরের দামামায় মহম্মদপুর সদরে ১৯ নভেম্বরের যুদ্ধে যেসব পাকিস্তানি দোসর ও রাজাকার মারা যান উদ্ধারকৃত কঙ্কাল তাদেরই হয়ে থাকবে।

জানাযায়, উপজেলা পরিষদ অভ্যন্তরে পুরোনো হলরুমের পূর্বপাশে স্থানীয় কৃষি বিভাগের স্টোর রুম নির্মাণের জন্য গত মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা বেজ ঢাঁলাইয়ের জন্য মাটি খুঁড়ছিলেন। এ সময় দুইটি মানব কঙ্কালের বিভিন্ন অংশ পাওয়া যায়। এ বিষয়টি নিয়ে কয়েকটি মিডিয়ায় ভিন্নরকম খবর প্রকাশ হওয়ায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন নড়েচড়ে বসেন এবং নির্মাণ কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

এ প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) বিকেলে মাগুরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ সরেজমিনে আসেন। তিনি স্থানীয় বীরমুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে প্রকৃত ঘটনা জানতে চান। স্থানীয় বীরমুক্তিযোদ্ধা তোজাম্মেল হোসেন ও আব্দুল হাই মিয়াসহ কয়েকজন একাত্তরের সেই ঘটনার বর্ণনা দেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামানন্দ পাল, সহকারী কমিশানর (ভূমি) বাসুদের কুমার মালো, উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসাইন, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অসিত কুমার রায়, কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সোবাহান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম এবং স্থানীয় সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

মাগুরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ বলেন, ‘স্থানীয় বীরমুক্তিযোদ্ধাগণের কাছ থেকে যে বর্ণনা পেয়েছি তাতে মানব কঙ্কাল বা কঙ্কালের বিভিন্ন অংশ রাজাকারদেই। আমরা সে মোতাবেক বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।’

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় উপজেলা পরিষদের ভবনে (তৎকালীন টিটিডিসি ভবন) পাকিস্তানি দোসর ও রাজাকার বাহিনী ক্যাম্প স্থাপণ করেছিলো। ১৯ নভেম্বর বীরযোদ্ধাদের সাথে স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে তুমুল যুদ্ধ হয়েছিলো। সে যুদ্ধে মহম্মদপুর উপজেলার নাগড়ীপাড়া গ্রামের টগবগে যুবক মুক্তিকামী আহম্মদ ও তাঁর ভাই মহম্মদ শহীন হন। এ যুদ্ধে আরও শহীদ হন যশোর সদর উপজেলাধীন সতিঘাটার কামালপুর গ্রামের ইপিআর সদস্য মহম্মদ উল্লাহ্। মহম্মদ উল্লাহ্ পরবর্তীতে ‘বীর বিক্রম’ উপাধি পান।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

পাবনার চাটমোহরে ভর্তুকি মূল্যে কম্বাইন হার্ভেস্টার বিতরণ

error: Content is protected !!

নিশ্চিত করলেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা

মাটি খুঁড়ে পাওয়া মানব কঙ্কাল রাজাকারদের

আপডেট টাইম : ০৪:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ এপ্রিল ২০২৩

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা পরিষদের ভেতরে মাটি খোঁড়ার সময় উদ্ধার হওয়া মানব কঙ্কাল একাত্তরের স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকারদের বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বীরমুক্তিযোদ্ধারা। ৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেলে মাগুরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ সরেজমিনে আসলে বীরমুক্তিযোদ্ধারা এই তথ্য জানান। ২১ জন রাজাকারকে মতান্তরে ২৩ জনকে হত্যার পর সেখানে পুতে দেওয়া হয়। মাটি খোঁড়ার সময় পাওয়া কিছু হাড়গোড়, মাথার খুলি ও অন্যান্য অংশ তাদরেই বলে বীরমুক্তিযোদ্ধাগণ বর্ণনা দেন।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকালে উপজেলা পরিষদ অভ্যন্তরে মাটি খোঁড়ার সময় দুইটি লাশের হাড়গোড় (কঙ্কাল) উঠে আসে। ধারণা করা হয় এসব কঙ্কাল ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরমুক্তিযোদ্ধাদের আক্রোমণে নিহত পাকিস্তানি দোসর ও রাজাকারদের। একাত্তরের দামামায় মহম্মদপুর সদরে ১৯ নভেম্বরের যুদ্ধে যেসব পাকিস্তানি দোসর ও রাজাকার মারা যান উদ্ধারকৃত কঙ্কাল তাদেরই হয়ে থাকবে।

জানাযায়, উপজেলা পরিষদ অভ্যন্তরে পুরোনো হলরুমের পূর্বপাশে স্থানীয় কৃষি বিভাগের স্টোর রুম নির্মাণের জন্য গত মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা বেজ ঢাঁলাইয়ের জন্য মাটি খুঁড়ছিলেন। এ সময় দুইটি মানব কঙ্কালের বিভিন্ন অংশ পাওয়া যায়। এ বিষয়টি নিয়ে কয়েকটি মিডিয়ায় ভিন্নরকম খবর প্রকাশ হওয়ায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন নড়েচড়ে বসেন এবং নির্মাণ কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

এ প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) বিকেলে মাগুরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ সরেজমিনে আসেন। তিনি স্থানীয় বীরমুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে প্রকৃত ঘটনা জানতে চান। স্থানীয় বীরমুক্তিযোদ্ধা তোজাম্মেল হোসেন ও আব্দুল হাই মিয়াসহ কয়েকজন একাত্তরের সেই ঘটনার বর্ণনা দেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামানন্দ পাল, সহকারী কমিশানর (ভূমি) বাসুদের কুমার মালো, উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসাইন, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অসিত কুমার রায়, কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সোবাহান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম এবং স্থানীয় সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

মাগুরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ বলেন, ‘স্থানীয় বীরমুক্তিযোদ্ধাগণের কাছ থেকে যে বর্ণনা পেয়েছি তাতে মানব কঙ্কাল বা কঙ্কালের বিভিন্ন অংশ রাজাকারদেই। আমরা সে মোতাবেক বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।’

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় উপজেলা পরিষদের ভবনে (তৎকালীন টিটিডিসি ভবন) পাকিস্তানি দোসর ও রাজাকার বাহিনী ক্যাম্প স্থাপণ করেছিলো। ১৯ নভেম্বর বীরযোদ্ধাদের সাথে স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে তুমুল যুদ্ধ হয়েছিলো। সে যুদ্ধে মহম্মদপুর উপজেলার নাগড়ীপাড়া গ্রামের টগবগে যুবক মুক্তিকামী আহম্মদ ও তাঁর ভাই মহম্মদ শহীন হন। এ যুদ্ধে আরও শহীদ হন যশোর সদর উপজেলাধীন সতিঘাটার কামালপুর গ্রামের ইপিআর সদস্য মহম্মদ উল্লাহ্। মহম্মদ উল্লাহ্ পরবর্তীতে ‘বীর বিক্রম’ উপাধি পান।