মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা পরিষদের ভেতরে মাটি খোঁড়ার সময় উদ্ধার হওয়া মানব কঙ্কাল একাত্তরের স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকারদের বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বীরমুক্তিযোদ্ধারা। ৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেলে মাগুরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ সরেজমিনে আসলে বীরমুক্তিযোদ্ধারা এই তথ্য জানান। ২১ জন রাজাকারকে মতান্তরে ২৩ জনকে হত্যার পর সেখানে পুতে দেওয়া হয়। মাটি খোঁড়ার সময় পাওয়া কিছু হাড়গোড়, মাথার খুলি ও অন্যান্য অংশ তাদরেই বলে বীরমুক্তিযোদ্ধাগণ বর্ণনা দেন।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকালে উপজেলা পরিষদ অভ্যন্তরে মাটি খোঁড়ার সময় দুইটি লাশের হাড়গোড় (কঙ্কাল) উঠে আসে। ধারণা করা হয় এসব কঙ্কাল ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরমুক্তিযোদ্ধাদের আক্রোমণে নিহত পাকিস্তানি দোসর ও রাজাকারদের। একাত্তরের দামামায় মহম্মদপুর সদরে ১৯ নভেম্বরের যুদ্ধে যেসব পাকিস্তানি দোসর ও রাজাকার মারা যান উদ্ধারকৃত কঙ্কাল তাদেরই হয়ে থাকবে।
জানাযায়, উপজেলা পরিষদ অভ্যন্তরে পুরোনো হলরুমের পূর্বপাশে স্থানীয় কৃষি বিভাগের স্টোর রুম নির্মাণের জন্য গত মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা বেজ ঢাঁলাইয়ের জন্য মাটি খুঁড়ছিলেন। এ সময় দুইটি মানব কঙ্কালের বিভিন্ন অংশ পাওয়া যায়। এ বিষয়টি নিয়ে কয়েকটি মিডিয়ায় ভিন্নরকম খবর প্রকাশ হওয়ায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন নড়েচড়ে বসেন এবং নির্মাণ কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
এ প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) বিকেলে মাগুরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ সরেজমিনে আসেন। তিনি স্থানীয় বীরমুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে প্রকৃত ঘটনা জানতে চান। স্থানীয় বীরমুক্তিযোদ্ধা তোজাম্মেল হোসেন ও আব্দুল হাই মিয়াসহ কয়েকজন একাত্তরের সেই ঘটনার বর্ণনা দেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামানন্দ পাল, সহকারী কমিশানর (ভূমি) বাসুদের কুমার মালো, উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসাইন, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অসিত কুমার রায়, কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সোবাহান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম এবং স্থানীয় সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
মাগুরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ বলেন, ‘স্থানীয় বীরমুক্তিযোদ্ধাগণের কাছ থেকে যে বর্ণনা পেয়েছি তাতে মানব কঙ্কাল বা কঙ্কালের বিভিন্ন অংশ রাজাকারদেই। আমরা সে মোতাবেক বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।’
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় উপজেলা পরিষদের ভবনে (তৎকালীন টিটিডিসি ভবন) পাকিস্তানি দোসর ও রাজাকার বাহিনী ক্যাম্প স্থাপণ করেছিলো। ১৯ নভেম্বর বীরযোদ্ধাদের সাথে স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে তুমুল যুদ্ধ হয়েছিলো। সে যুদ্ধে মহম্মদপুর উপজেলার নাগড়ীপাড়া গ্রামের টগবগে যুবক মুক্তিকামী আহম্মদ ও তাঁর ভাই মহম্মদ শহীন হন। এ যুদ্ধে আরও শহীদ হন যশোর সদর উপজেলাধীন সতিঘাটার কামালপুর গ্রামের ইপিআর সদস্য মহম্মদ উল্লাহ্। মহম্মদ উল্লাহ্ পরবর্তীতে ‘বীর বিক্রম’ উপাধি পান।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha