ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ফরিদপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শামীম তালুকদার গ্রেপ্তার Logo এবার ২১ দিনের মধ্যে জবাব দিতে আদানিকে সমন পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র Logo মাগুরা শ্রীপুরে মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী গ্রেফতার Logo রাশিয়ার কুরস্কে ৪০ শতাংশ এলাকার দখল হারিয়েছে ইউক্রেন Logo কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির বিপক্ষে যাওয়ায় ১৫ নেতাকে শোকজ Logo ভিডিও ফুটেজে নারীর ওপর হামলা, পুলিশের প্রতিবেদনে উলটে গেল ঘটনা Logo নতুন নেতৃত্বের আ’লীগ চায় বিএনপি Logo বোয়ালমারীতে ইউনিটি ফর ইউনিভার্স হিউম্যান রাইটস অব বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের পরিচিতি সভা Logo লালপুরে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সরল আটক Logo গোদাগাড়ীতে ইউপি বিএনপি’র কর্মী সভা
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএমডিএ’র উদাসীনতায় মরছে কৃষকের ৮০ বিঘা ইরি ধান

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিএমডিএ’র উদাসীনতায় মরছে কৃষকের প্রায় ৮০ বিঘা ইরি ধান। ঘটনাটি ঘটেছে সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের মোল্লান মাঠে। তবে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নিজেদের দায় এড়িয়ে চাপাচ্ছেন কৃষকদের উপর। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কৃষক ও স্থানীয়রা।

জানা গেছে- সদর উপজেলার মোল্লান মাঠে ডিজেল চালিত একটি সেচ যন্ত্র রয়েছে। এর অধিনে প্রায় শতাধিক বিঘা জমি রয়েছে। এর মধ্যে ইরি ধান রয়েছে প্রায় ৮০ বিঘা জমিতে। আম গাছ রয়েছে ১০ বিঘা। এদিকে পানির অভাবে অনাবাদি পড়ে রয়েছে আরও প্রায় ১০ বিঘা জমি। এসব জমিতে সেচ দিতে হয় ডিজেল চালিত সেচ যন্ত্র দিয়ে। তবে বর্তমানে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় চাহিদামত পানি উঠছে না। এছাড়া ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষক চাষাবাদে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।

জমিগুলোতে সেচ ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে মোল্লান গ্রামের কৃষক বাদল আলী গত ১৬ মার্চ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন।

এতে তিনি উল্লেখ করেন, রামকৃষ্ণপুর জেএল নং ১৪২, দাগ নং- ৩৭১১ ও খতিয়ান নং ৫৮১ মোল্লান মাঠে ডিজেল চালিত একটি সেচ যন্ত্র আছে। গত বছরের ২১ নভেম্বর বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য বিএমডিএ অফিসে অনুমতির জন্য আবেদন করেন। যা এখনও ছাড়পত্র মিলেনি। বিদ্যুৎ সংযোগ না পেলে কৃষকের ইরি ধান মরে নষ্ট হয়ে যাবে।

আকবর আলী নামে এক কৃষক জানান, বিএমডিএর কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনের সময় অফিস থেকে জানানো হয় ধান চাষ করেন। দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে। তাদের মৌখিক আশ্বাসে ধান লাগিয়ে দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও বিদ্যুৎ সংযোগের অনুমতি মিলছে না। এতে তার জমিতে লাগানো পাঁচ বিঘা জমির সব ধান মরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল করিম বলেন, সেচ যন্ত্র মালিকের আশ্বাসে তিন বিঘা জমিতে ইরি ধান চাষ করেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে দুই মাসেই ১৫-১৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন ধানে শীষ ফোটার সময়। পানি না পেলে সব ধান রোদে শুকিয়ে মরে যাবে। পুরো মাঠ শুকিয়ে ফেটে গেছে। তার দাবি, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ছাড়পত্র মিলছে না। দ্রুত ছাড়পত্র পেলেই বিদ্যুৎ চালিত সেচ যন্ত্র দিয়ে ধানগুলো বাঁচানো সম্ভব।

এনামুল হক নামে আরেক কৃষক বলেন, ইরি ধান চাষে দুই মাসেই সার, কীটনাশক এবং পানিতে ৩৯ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন সেচ দেওয়া যাচ্ছে না। সেচ না দিতে পারলে ধান মরে যাবে। এতে পরিবার নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় পড়তে হবে। কৃষক আবু সাইদ জানান, কৃষি বিভাগ থেকে ১৫দিন আগে শাক, সবজির বীজ ও ৩৫ কেজি রাসায়নিক সারসহ বিভিন্ন উপকরণ পেয়েছেন তিনি। তবে জমিতে সেচ দিতে না পারায় তার কৃষি উপকরণ বাড়িতেই নষ্ট হচ্ছে।

কৃষক জহুরুল ইসলাম বলেন, মোল্লান এলাকায় তার পাঁচ বিঘা আমবাগান রয়েছে। সেচ দিতে না পারায় আমের গুটি ঝরে পড়ে যাচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিএমডিএ’র পরিদর্শক মঞ্জুর হোসেন বলেন, দুই দফায় এ বিষয়ে মিটিং হয়েছে। আগামী জুন মাসের দিকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে। মৌখিকভাবে কৃষকদের ধান চাষের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিএমডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা মূলত সেচ লাইসেন্স দিয়ে থাকি। বিষয়টি নিয়ে মিটিং হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই লাইসেন্স পেয়ে যাবে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শামীম তালুকদার গ্রেপ্তার

error: Content is protected !!

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএমডিএ’র উদাসীনতায় মরছে কৃষকের ৮০ বিঘা ইরি ধান

আপডেট টাইম : ০৪:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ এপ্রিল ২০২৩
মোঃ আবদুস সালাম তালুকদার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিএমডিএ’র উদাসীনতায় মরছে কৃষকের প্রায় ৮০ বিঘা ইরি ধান। ঘটনাটি ঘটেছে সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের মোল্লান মাঠে। তবে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নিজেদের দায় এড়িয়ে চাপাচ্ছেন কৃষকদের উপর। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কৃষক ও স্থানীয়রা।

জানা গেছে- সদর উপজেলার মোল্লান মাঠে ডিজেল চালিত একটি সেচ যন্ত্র রয়েছে। এর অধিনে প্রায় শতাধিক বিঘা জমি রয়েছে। এর মধ্যে ইরি ধান রয়েছে প্রায় ৮০ বিঘা জমিতে। আম গাছ রয়েছে ১০ বিঘা। এদিকে পানির অভাবে অনাবাদি পড়ে রয়েছে আরও প্রায় ১০ বিঘা জমি। এসব জমিতে সেচ দিতে হয় ডিজেল চালিত সেচ যন্ত্র দিয়ে। তবে বর্তমানে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় চাহিদামত পানি উঠছে না। এছাড়া ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষক চাষাবাদে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।

জমিগুলোতে সেচ ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে মোল্লান গ্রামের কৃষক বাদল আলী গত ১৬ মার্চ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন।

এতে তিনি উল্লেখ করেন, রামকৃষ্ণপুর জেএল নং ১৪২, দাগ নং- ৩৭১১ ও খতিয়ান নং ৫৮১ মোল্লান মাঠে ডিজেল চালিত একটি সেচ যন্ত্র আছে। গত বছরের ২১ নভেম্বর বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য বিএমডিএ অফিসে অনুমতির জন্য আবেদন করেন। যা এখনও ছাড়পত্র মিলেনি। বিদ্যুৎ সংযোগ না পেলে কৃষকের ইরি ধান মরে নষ্ট হয়ে যাবে।

আকবর আলী নামে এক কৃষক জানান, বিএমডিএর কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনের সময় অফিস থেকে জানানো হয় ধান চাষ করেন। দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে। তাদের মৌখিক আশ্বাসে ধান লাগিয়ে দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও বিদ্যুৎ সংযোগের অনুমতি মিলছে না। এতে তার জমিতে লাগানো পাঁচ বিঘা জমির সব ধান মরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল করিম বলেন, সেচ যন্ত্র মালিকের আশ্বাসে তিন বিঘা জমিতে ইরি ধান চাষ করেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে দুই মাসেই ১৫-১৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন ধানে শীষ ফোটার সময়। পানি না পেলে সব ধান রোদে শুকিয়ে মরে যাবে। পুরো মাঠ শুকিয়ে ফেটে গেছে। তার দাবি, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ছাড়পত্র মিলছে না। দ্রুত ছাড়পত্র পেলেই বিদ্যুৎ চালিত সেচ যন্ত্র দিয়ে ধানগুলো বাঁচানো সম্ভব।

এনামুল হক নামে আরেক কৃষক বলেন, ইরি ধান চাষে দুই মাসেই সার, কীটনাশক এবং পানিতে ৩৯ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন সেচ দেওয়া যাচ্ছে না। সেচ না দিতে পারলে ধান মরে যাবে। এতে পরিবার নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় পড়তে হবে। কৃষক আবু সাইদ জানান, কৃষি বিভাগ থেকে ১৫দিন আগে শাক, সবজির বীজ ও ৩৫ কেজি রাসায়নিক সারসহ বিভিন্ন উপকরণ পেয়েছেন তিনি। তবে জমিতে সেচ দিতে না পারায় তার কৃষি উপকরণ বাড়িতেই নষ্ট হচ্ছে।

কৃষক জহুরুল ইসলাম বলেন, মোল্লান এলাকায় তার পাঁচ বিঘা আমবাগান রয়েছে। সেচ দিতে না পারায় আমের গুটি ঝরে পড়ে যাচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিএমডিএ’র পরিদর্শক মঞ্জুর হোসেন বলেন, দুই দফায় এ বিষয়ে মিটিং হয়েছে। আগামী জুন মাসের দিকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে। মৌখিকভাবে কৃষকদের ধান চাষের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিএমডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা মূলত সেচ লাইসেন্স দিয়ে থাকি। বিষয়টি নিয়ে মিটিং হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই লাইসেন্স পেয়ে যাবে।


প্রিন্ট