লিবিয়া থেকে অবৈধ উপায়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে নৌকাডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ফরিদপুরের ১২ যুবক নিখোঁজ রয়েছে। এতে তাঁদের পরিবারের সদস্যরা চরম উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে সময় পার করছেন। তাদের সন্তানেরা বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে তা জানতে পারছেন না।
লিবিয়া থেকে অভিবাসন প্রত্যাশীদের নিয়ে অবৈধ ভাবে ইতালি অভিমুখে যাত্রা করা একটি নৌকা রোববার বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে পড়ে ডুবে যায়। এতে ৩০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এর মধ্যে নগরকান্দার ১২ জনই নগরকান্দা উপজেলায়।
নিখোঁজ যুবককেরা হলো, উপজেলার কোদালিয়া শহীদনগর ইউনিয়নের আটকাহনিয়া গ্রামের তোরাপ মোল্যার ছেলে শফিকুল ইসলাম রাসেল (৩০), ডাঙ্গী ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের মোস্তফা মাতুব্বরের ছেলে আল আমিন মাতুব্বর (২০), সোবাহান মোল্যার ছেলে মাহফুজ মোল্যা (২২), এসকেন মোল্যার ছেলে নাজমুল মোল্যা (২৩) ও সেকেন ব্যাপারীর ছেলে আকরাম ব্যাপারী (২৭), বাশাগাড়ী গ্রামের ইছাহাক ফকিরের ছেলে স্বপন ফকির (২৭), শংকরপাশা গ্রামের সেকেন কাজীর ছেলে শামীম কাজী(২১), সরোয়ার মাতুব্বরের ছেলে বিপুল (২৫), মালেক শেখের ছেলে বিটুল শেখ(২৫), শ্রীঙ্গাল গ্রামের সলেমান শেখের ছেলে মিরান শেখ(২২), ইদ্রিস শেখের ছেলে তুহিন শেখ (২০) ও নারুয়াহাটি গ্রামের কাশেম তালুকদারের ছেলে শাওন তালুকদার (২২)। এরা সবাই স্থানীয় একটি দালাল চক্রের মাধ্যমে অবৈধভাবে ইতালি যাচ্ছিলেন।
নিখোঁজ রাসেলের বাবা তোরাপ মোল্যা জানান, নগরকান্দা উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের আদম ব্যপারীর মুরাদ ফকির মাধ্যমে ৮ লাখ টাকার চুক্তি হয়। সে লক্ষে চলতি বছরের জানুয়ারী মাসের ৫ তারিখে বাড়ী থেকে ইটালির উদ্দেশ্য রওয়ানা হয়। ৮ জানুয়ারী ঢাকা থেকে বিমান যোগে ঢাকা ত্যাগ করেন। দুবাই হয়ে ১২ জানুয়ারি তারা লিবিয়া পৌছায়। দুই মাস লিবিয়ায় অবস্থানের পর রোববার সাগর পথে নৌকায় চড়ে ইটালীর যাওয়ার পথে নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটে।
ডাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম জানান, মুরাদ একজন মানব পাচারকারী। তিনি অবৈধভাবে বিদেশে লোক পাঠিয়ে কয়েক কোটি টাকা আয় করেছেন।
মানব পাচার চক্রের মূল হোতা মুরাদ ফকির পলাতক থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার সহযোগী বাশাগারী গ্রামের ইমারত মিয়া মোবাইল ফোনে বলেন, আমি মানব পাচারের সাথে আমি জড়িত নই। তবে আমার হাত দিয়ে দুই এক জনের টাকা মুরাদকে দিয়েছি মাত্র।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেন বলেন, এসব বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মঈনুল হক বলেন, এ ব্যাপারে কেউ কোন অভিযোগ করেননি। তবে কেউ যদি অভিযোগ করে তাহলে দালালদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নগরকান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান ডাঙ্গী ইউনিয়নের বিলগোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বলেন, শুনেছি ইতালি যাওয়ার পথে ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। এতে এলাকার বেশ কয়েকজন উদ্ধার হয়েছেন। আবার বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছে।
প্রিন্ট