মার্কিন বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা জেনারেল জেমস বি হেকার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের এমকিউ-৯ ড্রোনটি আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় নিয়মিত অভিযানে ছিল। তখন সেটিকে আঘাত করে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান সুখোই-২৭। এর কারণে ড্রোনটি বিধ্বস্ত হয়। এটি রাশিয়ার একটি “অনিরাপদ ও অপেশাদার পদক্ষেপ”।’
গতকালের এ ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে জানিয়েছেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান।
অন্যদিকে, এ ঘটনাকে ‘উসকানি’ হিসেবে দেখছে মস্কো। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনভ রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা রিয়াকে বলেন, ‘আমরা এ ঘটনাকে উসকানি হিসেবে দেখছি।’
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তলব করার পর আনাতোলি আন্তোনভ এ মন্তব্য করলেন। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে কোনো সংঘর্ষ চাই না। আমরা রুশ ও মার্কিনদের স্বার্থে কার্যকর সম্পর্ক গড়ে তোলার পক্ষে।’
তবে আনাতোলি আন্তোনভ অভিযোগ করেন, মার্কিন ড্রোনটি ইউক্রেনের জন্য তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ওই এলাকায় নজরদারি করছিল।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে থেকেই নজরদারির কাজে কৃষ্ণসাগরের আকাশসীমায় এমকিউ-৯ রিপার ড্রোন দিয়ে অভিযান চালিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এই ড্রোন ৫০ হাজার ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় উড়তে পারে। ধারণা করা হয়, ওই এলাকায় রুশ নৌবাহিনীর গতিবিধি পর্যবেক্ষণে ড্রোনটি ব্যবহার করে থাকে মার্কিন বাহিনী।
রিপার ড্রোন হামলা চালাতেও সক্ষম। আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপণযোগ্য হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র, লেজার-নিয়ন্ত্রিত বোমা ব্যবহার করে ১ হাজার ৭০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে পারে এটি। এই ড্রোন ব্যবহার করে ইরাক ও আফগানিস্তানে নিয়মিত নজরদারি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
এদিকে রুশ যুদ্ধবিমানের তৎপরতায় মার্কিন ড্রোন বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় মস্কোকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস। এ ঘটনায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘নিয়মভঙ্গের’ অভিযোগ তুলেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রিচার্ড মারলেস। তিনি বলেন, ‘রাশিয়াকে এই অপেশাদার আচরণের ব্যাখ্যা দিতে হবে।’
রয়টার্স, আল-জাজিরা ও এনডিটিভি অবলম্বনে।
প্রিন্ট