নড়াইল সদর উপজেলার শেখহাটি ইউনিয়নের দেবভোগ গ্রামের সালাম শেখ ও জামাল শেখের বসতবাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ কারনে দুই পরিবারের ১৫ জন সদস্য খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। গতকাল রোববার গভীর রাতে ওই গ্রামের সুফল বিশ্বাসের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্থ জামাল শেখ ও সালাম শেখ জানান, প্রায় ৩বছর আগে দেবভোগ গ্রামের রাধাবল্লভ বিশ্বাস সহজ তার তিন ভাইয়ের কাছ থেকে ১ একর ২৬শতক জমি কেনা হয়। ৮৭নং দেবভোগ মৌজার আর.এস খতিয়ান নং-১২৪৩, আরএস ২৮৭৪ ও ২৮৭৫ দাগের ৯৬ শতক জমি এবং আর.এস খতিয়ান ৮১১, দাগ নং-২৮৯০ এর ২৪ শতক এবং অন্য আরেকটি দাগে ৬ শতক জমি ক্রয় করেন। নিয়মানুযায়ী জমি রেজিষ্ট্রেশন ও নামপত্তন সম্পন্ন হয়। এরপর তিন মাস আগে ওই জমিতে বাড়িঘর নির্মাণ করে সালাম ও জামাল শেখ বসবাস করে আসছিলো। হঠাৎ করে রোববার রাতে রাধাবল্লভের ভাইপো সুফল বিশ্বাসের নেতৃত্বে ১০/১৫জন তাদের বাড়িঘর ভাংচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়। এসময় একটি বসতঘর, একটি রান্না ঘর ও বাথরুম সহ বাড়ির জিনিসপত্র ভাংচুর ও পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এ কারনে প্রচন্ড এই শীতে আমাদের ২ পরিবারের ১৫জন সদস্য খোলা আকাশের নিচে রয়েছি।
ভুক্তভোগীরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে নড়াইল সদর থানায় ১০জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে।নড়াইল সদর থানার ওসি মাহমুদুর রহমান জানান, বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ঘটনার প্রায় ৬ মাস আগে সালাম ও জামালের পরিবারের সদস্যরা জমিতে গেলে জমিদাতা রাধাবল্লভের ভাইপো সুফল বিশ্বাসের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে চার নারীকে আহত করে। শাশুড়ী মোমেনা বেগমসহ (৪৫) তার তিন পুত্রবধু মোমতাজ বেগম (২৫), ইতি বেগম (১৮) ও আছমা বেগমকে (২২) পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে অভিযুক্ত সুফল বিশ্বাস বলেন, ‘সালাম শেখ ও জামাল শেখের বাড়িতে আমার নেতৃত্বে কোন হামলার ঘটনা ঘটেনি। কে বা কারা হামলা করেছে জানিনা। আমি যশোরে অবস্থান করছি। এই জমি নিয়ে বিরোধ থাকায় আদালতে মামলা চলছে। এই ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ নিয়ে নিউজ করলে আমি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।’
তবে ক্ষতিগ্রস্থ সালাম শেখের ছেলে ইমন শেখ বলেন, ‘সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকরা যাওয়ার ২০মিনিট আগেও সুফল বিশ্বাস ভূক্তভোগীদের লাঠি উচিয়ে ভয়ভীতি দেখান। তিনি যশোরে আছেন বলে মিথ্যাচার করছেন।’ বিভিন্ন পেশার মানুষ দাবি করেন, ঘটনার সময় সুফল বিশ্বাস কোথায় অবস্থান করছিলো তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতা নিলেই আইনশৃংখলা বাহিনী তা জানতে পারবে।
প্রিন্ট